2021-এর 28 ফেব্রুয়ারি বামেদের ব্রিগেডে ছিল অনেক কিছুই নতুন, আনকোরা, যা এর আগে কোনও ব্রিগেডে দেখা যায়নি বললেই চলে। আর জিনিসগুলোই যেন এই ব্রিগেড সমাবেশকে আরও একটু আলাদা করে তুলেছে। তা কী কী ছিল নতুন?
প্রথমত, এতদিন ধরে দেখা গিয়েছে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ মানেই যিনি সভাপতি হবেন, তিনি তাঁর বক্তব্যের পর একে একে মঞ্চে উপবিষ্ট বক্তাদের ডেকে নেবেন। কিন্তু এবার সেই চেনা ছক মানতে দেখা গেল না। বরং খানিক উল্টো ছবিই ধরা পড়ল।
অভিনেতা বাদশা মৈত্র অধিকাংশ সময়ই সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও যুবদের মধ্যে চেনা মুখ ঐশী ঘোষ এবং দিপ্সিতা ধরও সঞ্চালনা করেন কিছু সময়ের জন্য। মঞ্চে ওঁদের সঙ্গে আর এক যুবনেত্রী পৃথা তা'কেও দেখা যায়। যুবদের এবার অনেকটা দায়িত্ব নিতে দেখা গেল মঞ্চে। কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী, নেত্রী এবং সুবক্তা ঐশী এবং দিপ্সিতা দু’জনকেই আসন্ন বিধানসভা ভোটে পার্টি টিকিট দিতে চলেছে। মঞ্চে সেদিন কি সেটারই প্রতিফলন ছিল? নাকি পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব অবশেষে বুঝতে পেরেছেন, যুবদের এগিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে? উত্তরটা যাই হোক, বদল যে একটা ঘটেছে, তা স্পষ্টই দেখা গিয়েছে।
দ্বিতীয়ত, দেখা মিলল রামধনু রঙা পতাকার। সমকামী গোষ্ঠীকে নিয়ে বক্তব্যও শোনা গেল মহম্মদ সেলিমের গলায়। যখন একদিকে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে সমলিঙ্গের বিয়ে কোনও মৌলিক অধিকার নয়, বরং তা বেআইনি, তখন বামেদের ব্রিগেড থেকে অন্য সুর শোনা গেল এই বিষয়ে। এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক সমাবেশে রাজ্যের সাতরঙা পতাকাধারীদের কথা বলা হল। উড়তে দেখা গেল লাল পতাকার সঙ্গে রামধনু রঙের পতাকাও।
তৃতীয়ত, এই সমাবেশে ছাত্র-যুবদের উন্মাদনা, উদ্দীপনা এবং সংখ্যাটা ছিল চোখে পড়ার মতো। মাঠ সাজানো, সোশাল মিডিয়ায় সমাবেশের খবর ছড়িয়ে দেওয়া, স্টল সামলানো থেকে অন্যান্য কাজে দেখা মিলল ওদেরই।
এছাড়াও নানান নতুন ভাবনার প্রকাশ দেখা গেল মাঠে সাজিয়ে রাখা মিম, ছবি, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডে। কোথাও দেখা গেল আম্বানি নাচাচ্ছে আর মোদী-মমতা কাঠি পুতুলের মতো নাচছে। কোথাও আবার দেখা গেল সংবিধানের মূল বক্তব্য তুলে রাখা হয়েছে। বাদ যায়নি গানও। টুম্পা প্যারোডির স্রষ্টা রাহুল-নীলাব্জ মঞ্চে উঠে তাঁদের গান শোনালেন। মাঠে টুম্পা না চললেও বাসস্ট্যান্ড গুলোতে বা ব্রিগেডমুখী গাড়ি থেকে ভেসে আসল টুম্পার সুর।
আরও পড়ুন: টুম্পা থেকে পিসি যাও: ভোটে এবার সুরের দোলা
ব্রিগেড শেষ হতেই মাঠ পরিষ্কার করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা। যদিও মাঠ পরিষ্কার করার জন্য 1 মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছিল, কিন্তু তার আগেই সেদিন ‘কাজ’ এগিয়ে রাখে তারা।
এরকম ভাবেই বামেদের গোটা ব্রিগেড সমাবেশ জুড়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে দেখা গেল কিছু বিরল দৃশ্যের, যা বামেদের সমাবেশে তো বটেই, রাজ্যের কোনও রাজনৈতিক সমাবেশেও প্রথমবারের জন্য ঘটল। তাই অন্যান্য ব্রিগেডের তুলনায় বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের এই ব্রিগেড সমাবেশ যে আলাদা হয়ে থাকবে বহুদিন, তা বলাই বাহুল্য।
মহামারীর সুযোগে কিছু কোভিড কিচেনের দৃষ্টিকটু রমরমা ব্যবসা।
সাহারা, থর মরুভূমিতে জন্ম নেওয়া নতুন গাছ আখেরে প্রকৃতির ক্ষতি করছে।
হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামকে ছাপিয়ে সিগন্যাল এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
ঘরবন্দি মানুষ সাইবার প্রতারণার সহজ শিকার হচ্ছেন।
গত বছরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন থেকে এবারের রেড ভলেন্টিয়ার্স, মানুষের পাশে বামপন্থী তরুণ দল।
রাজ্যটা এখন চিড়িয়াখানা নাকি সার্কাসে পরিণত হয়েছে তা নিয়ে অনেকের মনেই ধন্দ।