×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • টুম্পা থেকে পিসি যাও: ভোটে এবার সুরের দোলা

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 22-02-2021

    দুটি গানের পোস্টার

    ভোটের আগেই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। বদলে গিয়েছে রাজনীতি সচেতনতা নিয়ে গর্ব করা বাংলার রাজনৈতিক প্রচারের ভাষা। 2021-এর আসন্ন বিধানসভা ভোটের প্রচারে সম্প্রতি চমক লাগিয়েছে সিপিএম এবং বিজেপি-র দুটি প্যারোডি। বঙ্গ রাজনীতি থেকে নেট দুনিয়া আপাতত সেই দুই গানের কথা ও সুরেই মত্ত। 

     

    তৃণমূল কংগ্রেস কয়েক দিন আগেই তাদের ভোটের স্লোগান বাজারে ছেড়েছে: খেলা হবেযা নেট দুনিয়ার প্রবলভাবে ভাইরাল একটি ডায়লগ। "খেলা হবে' কথাটির আসল ব্যাখ্যা কী সেটা নিয়ে অন্যত্র আমরা আলোচনা করছি। 

     

    আরও পড়ুন: কোন ‘খেলা’ যে খেলব কখন!

     

    তবে তার উত্তর যে এমন ভাবে বিপক্ষীয় দুই দল দেবে, এবং গানের সুর ও কথায় একটা খেলা অন্তর্জালের দুনিয়াতেই শুরু হয়ে যাবে, তা বোধহয় আশাতীত ছিল

     

    সিপিআইএম তাদের আসন্ন বিগ্রেড সমাবেশের জন্য জনপ্রিয় গান টুম্পা’-র প্যারোডি বানিয়েছে, যা ইতিমধ্যেই বিপুলভাবে শেয়ার হয়ে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরালপ্যারোডিটির লেখক হলেন রাহুল পাল এবং গেয়েছেন নীলাব্জ নিয়োগী। এই গানের মূল বক্তব্য টুম্পার প্রেমিক বেকার, কিন্তু তাই বলে প্রেমিককে টুম্পা ছেড়ে যাবে না, বরং তারা একসঙ্গে বিগ্রেড যাবে। চাকরি পাওয়ার জন্য লড়াই করবে। রাজ্যে যত বেআইনি কাজ হয়েছে তা এবার বন্ধ করতে হবে। যার সূচনা এই বিগ্রেড থেকেই হবে, এমন আশা নিয়েই টুম্পাকে নিয়ে বিগ্রেড যাবে তার প্রেমিক। 

      

    এদিকে পিছিয়ে নেই বিজেপিও। তারা ইতালির প্রতিবাদী লোকসঙ্গীত বেল্লা চাও’-এর প্যারোডি বানিয়েছে। মূল গানটি গত শতাব্দীর চারের দশকে ইতালিতে বেনিতো মুসোলিনির ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রতিবাদে গাওয়া একটি লোকসঙ্গীত। যার প্রথম চরণটির আক্ষরিক মানে হল, হে সুন্দর, বিদায়আজকের বাংলায় বেল্লা চাও-এর প্যারোডির নাম দেওয়া হয়েছে পিসি যাও। এই গানের মূল বক্তব্য তৃণমূলের দুর্নীতি, দাঙ্গা ইত্যাদি। অতএব সময় হয়েছে পিসি মমতা ব্যানার্জির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে চলে যাওয়ার। গানের লিরিক্সের সঙ্গেই নজর কেড়েছে দুটি গানেরই ভিজুয়্যাল

     

    রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছতে গেলে স্লোগান, দেওয়াল লিখন ইত্যাদি কি আর যথেষ্ট নয়? সমাজ যেমন বদলাচ্ছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তবে কি প্রচারের ধরনও বদলাতে হবে? কী বলছে রাজনৈতিক দলগুলো? সিপিআইএম-এর যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর কলকাতা জেলা সভাপতি কলতান দাশগুপ্ত বললেন, “সমসাময়িক সব কিছুই গ্রহণ করা উচিত। আর প্যারোডি তো দীর্ঘকালীন সংস্কৃতি একটা। ফলে গানটা বর্তমানে অনেক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে। স্লোগান, লেখা এক ধরনের মানুষের কাছে পৌঁছয়। কিন্তু গান, কবিতা নাটক তো সবাই শোনে, তার মাধ্যমে অনেক বেশি মানুষের কাছে যাওয়া যায়। টুম্পা গানটা ইদানিংকালে খুবই জনপ্রিয়, তাই হালফিলের সংস্কৃতিকে ব্যবহার করেই এই গান।'' এই ধরনের লিরিক, নতুন ধরনের স্লোগান বিজেপির কাছে নতুন নয়। বাবুল সুপ্রিয়র গাওয়া এই তৃণমূল আর না, আর না2019-এর লোকসভা নির্বাচনের সময়েই যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। কিন্তু সিপিআইএম-এর কাছে এমন কিছু সত্যিই অভিনব। কারণ, এই রাজনৈতিক দল মাত্র 12 বছর আগে 2009 এর লোকসভা ভোটের প্রচারে দেওয়াল লিখনের বদলে উত্তর কলকাতার প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের  ছবি দিয়ে ভোট প্রচার করায় গেল গেল রব তুলেছিলআজ তারাই মাত্র কবছরের ব্যবধানে নিজেদের প্রচার কৌশলে এতটা পরিবর্তন আনল কী ভাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে কলতান বলেন, “যে সময়ের যে কালচার সেটা আমরা সবসময়ই গ্রহণ করি। যা পপুলার তা কালচার নয়, এমনটা না। এরকম কোনও ব্যাপার নেই।'' অন্যদিকে বিজেপি কিনা শেষ পর্যন্ত নিজেদের আদর্শগত অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে থাকা কমিউনিস্টদের তৈরি ইতালির লোকসঙ্গীতের প্যারোডি করল! কী অবস্থা! যদিও বিজেপির ট্যুইটার হ্যান্ডল থেকে জানানো হয়েছে যতই মতাদর্শ ভিন্ন হোক, প্রতিবাদের সুর মিলেই যায়।' ওই যব মিলে সুর তুমাহারা হামারা আর কী! এই বিষয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য কী বললেন? তিনি জানান, “গান কবিতার কোনও রং বা রাজনৈতিক পরিচয় হয় না। সাম্রাজ্যবাদীদের বিরোধিতা, শোষণের বিরোধিতা করার একমাত্র একচেটিয়া অধিকার বামপন্থীদের, এমনটা তো না। বামপন্থীরা এখন তাদের অতীত ভুলে টুম্পায় মেতেছে। প্যারোডি সব গানেরই হয়, এটারও হয়েছে।''

     

    ভোটের প্রচারে একটু সুরের ছোঁয়া বঙ্গবাসীর মন্দ লাগছে না বেধহয়! তবে সুরের দোলায় ভোট কতটা দুলবে কে জানে!


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    "ভাই লন্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়বে। কী শিখবে ভাই অর্থনীতি নাকি... হেঁ হেঁ হেঁ।'

    ক্যান্সার থেকে জীবনের নানান বাধা অতিক্রম করে প্রিয়াঙ্কা আজ সফল ব্যবসায়ী।

    এই গান বর্তমান পরিস্থিতিরই এক রেপ্লিকা

    ওমিক্রন ছড়াচ্ছে, সতর্কতা কই?

    দেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে সামিল নারীরা প্রাণদান করেছেন বয়স, সমাজ, সংসার সমস্ত বাধা উড়িয়ে দিয়ে।

    ও সব বাবুদের রোগ, তাদের হয়। বুঝলেন?

    টুম্পা থেকে পিসি যাও: ভোটে এবার সুরের দোলা-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested