জনপ্রিয় ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ সম্প্রতি তাদের প্রাইভেট পলিসি ঢেলে সাজিয়েছে, সঙ্গে এও জানিয়েছে তাদের গ্রাহকরা যদি সেই পলিসি না মানে, তাহলে তাদের অ্যাকাউন্ট 8 ফেব্রুয়ারির পর ডিলিট করে দেওয়া হবে। এরপরই বহু মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু কেন?
হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে যে, তারা তাদের গ্রাহকদের সমস্ত তথ্য নিয়ে তাদেরই সহযোগী সংস্থা ফেসবুকের কাছে দিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, পরবর্তী সময়ে ফেসবুকের মালিকের কাছে আরও যত অ্যাপের মালিকানা বা শেয়ার আছে, সেখানেও দিয়ে দেবে। যার ফলে গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই ভয় থেকেই অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপ থেকে অন্য মেসেজিং অ্যাপে চলে যাচ্ছেন। বিশেষত, মানুষের কাছে যখন এক দারুন বিকল্প থাকে, তখন বিপদ এড়াতে তাকেই বেছে নেয় মানুষ। এক্ষেত্রেও ঠিক তাই হচ্ছে। জান কোউম এবং হোয়াটসঅ্যাপের সহ প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান অ্যাক্টন দু’জনেই আগে ফেসবুকের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে প্রাইভেসি পলিসি নিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বিরোধ হলে দু’জনেই সেখান থেকে বেরিয়ে এসে সিগন্যাল নামক এক অ্যাপ তৈরি করেন। বর্তমানে তাঁদের নির্মিত এই অ্যাপ গ্রাহকদের মধ্যে দারুন সাড়া ফেলেছে। টেলসা সিইও এলেন মাস্ক স্বয়ং এই সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই সেখানে 1 কোটির বেশি গ্রাহক যুক্ত হয়েছে। কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপের থেকে সিগন্যাল কোথায় আলাদা?
সিগন্যাল অ্যাপ ক্রস প্ল্যাটফর্ম এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ। এই অ্যাপ সমস্ত মেসেজ এবং কন্টাক্টসের ব্যাকআপ সুরক্ষিতভাবে ফোনেই রাখে। সিগন্যাল অ্যাপে কোনও গ্রাহক কী টাইপ করছেন, তা সিগন্যাল ফোনে থাকা অন্য অ্যাপকে দেখতে দেয় না। সিগন্যাল মেসেঞ্জার এলএলসি নন প্রফিট অর্গানাইজেশন, যা সিগন্যাল ফাউন্ডেশনের নামে কাজ করছে। এটির ডেভেলপমেন্ট প্রভৃতি নির্ভর করে তার গ্রাহকদের দেওয়া অনুদানের উপর। এমনকি এর সঙ্গে কোনও নামী কোম্পানি যুক্ত নেই। সবথেকে বড় কথা, সিগন্যাল অ্যাপ তার গ্রাহকদের কাছে নিজের সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখে। এর প্রাইভেসি থেকে সোর্স কোড সবই উন্মুক্ত। ফলে যে কেউ তা দেখতে পাবে, লুকোচুরির কোনও ব্যাপার নেই। ফলে হোয়াটসঅ্যাপের থেকে সিগন্যাল অ্যাপ যে নিরাপত্তার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনকি সিগন্যাল যে শুধু হোয়াটসঅ্যাপকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে তা নয়, সে আরও একটি ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে নিরাপত্তার দিক থেকে।
সিগন্যাল আর হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে যে ঘটনা ঘটল, তা বেশ কয়েক বছর আগে ‘উইন্ডোজ’ এবং ‘উবুন্টু’-র ক্ষেত্রেও ঘটেছিল। ‘উবুন্টু’ একটি ফ্রি এবং ওপেন সোর্স সফ্টওয়্যার, যা লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনের একটি পার্ট এবং 2004 সালের 20অক্টোবর থেকে কাজ করে চলেছে। এটিও উইন্ডোজ এর তুলনায় সিগন্যালের মতো গ্রাহকদের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা বজায় রাখতে কয়েক কদম এগিয়ে। উইন্ডোজ, অ্যাপল প্রভৃতি হচ্ছে বহুজাতিক সংস্থা, যারা গ্রাহকদের তথ্য একই কোম্পানির অন্য বিভাগের সঙ্গে ভাগ করে নেয়। ফলে প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড়ায় গ্রাহকদের নিরাপত্তা। সেখানে দাঁড়িয়ে সিগন্যাল বা উবুন্টু অনেকটাই নিরাপদ।
কিন্তু এই দুই মেসেজিং অ্যাপের গ্রাহকরা কী বলছেন? আইটি কর্মী নীলাভ দাশগুপ্ত বলেন, “হোয়াটসঅ্যাপ আমার সব তথ্যই ফেসবুকের কাছে দিয়ে দিচ্ছে। কোনও প্রাইভেসি নেই, প্রাইভেসি পলিসি সাজাতে গিয়ে প্রাইভেসি শব্দটাকেই উড়িয়ে দিয়েছে ওরা। আমি কী টাইপ করছি, আমার ইমেল আইডি, কন্টাক্টস, লোকেশন সবই অন্য কারও কাছে চলে যাচ্ছে। কেন এমনটা হবে? আর হাতের কাছে যখন অন্য বিকল্প আছেই, যে সবরকম সুবিধা দিচ্ছে, আমাদের প্রাইভেসির দিকটা এত ভাল করে দেখছে, তখন তাকেই বেছে নেওয়া স্বাভাবিক। আমি তাই এখন সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহার করছি।'' অন্য দিকে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা স্বাগতা চ্যাটার্জি বলেন, “আমাকে এখনও হোয়াটসঅ্যাপ এমন কোনও নোটিস পাঠায়নি। পাঠালে ভাবব। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে এত হইচই কেন হচ্ছে বুঝছি না। আমরা যখন ফেসবুকে গেম খেলি যে, এই বছর আমার কেমন যাবে, আমায় কোন তারকার মতো দেখতে, তখন তো না বুঝেই অজ্ঞাত কোনও তৃতীয় পক্ষকে আমাদের সমস্ত তথ্য নেওয়ার অনুমতি দিয়ে দিই। তখন? সচেতন থাকা ভাল, কিন্তু সেটা সব ক্ষেত্রেই হওয়া বাঞ্ছনীয়।''
হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামকে ছাপিয়ে সিগন্যাল এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
বিজেপি সরকার চাইছে আগামী লোকসভার বছরেই আদমশুমারি প্রকাশ করতে। কিন্তু কেন?
64 বছর বয়সে মেডিক্যাল পড়তে ভর্তি হলেন জয় কিশোর।
সংসার, ভালবাসা, সঙ্গে থাকা বা থাকার ইচ্ছে, সবটা নিয়ে একটা অত্যন্ত বাস্তববাদী সিনেমা।
প্রাণ যায় যাক, পুণ্যস্নান চাই!
প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলার ছবি এবং কীর্তনের অপূর্ব মিশেল ধরা পড়েছে এই সিরিজে।