×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • জলবায়ু পরিবর্তনের বিষবাষ্পে শুকিয়ে যাচ্ছে কলোরাডো

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 18-11-2021

    শুকিয়ে যাচ্ছে কলোরাডো

    ‘আমার শহরে শুকিয়ে যাচ্ছে জল’, ক'বছর পর মেক্সিকো (Mexico), অ্যারিজোনা (Arizona), নেভাডা, প্রভৃতি দেশের বাসিন্দারা এই গান গাইতেই পারেন। কারণ পরিস্থিতি তো সে দিকেই যাচ্ছে!

     

    আমেরিকার (USA) প্রায় 4 কোটি মানুষের জনজীবন আমূল পাল্টে যেতে চলেছে। নেপথ্যে রয়েছে কলোরাডো নদী (Colorado River)। আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী এই নদীর জলপ্রবাহের প্রায় 20 শতাংশ কমে গিয়েছে শেষ 100 বছরে। এবং এই প্রথম বার সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হল যে কোনও নদী শুকিয়ে যাচ্ছে।

     

     

    আমেরিকার সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছে যে কলোরাডো নদীতে জলের ঘাটতি (Water Shortage) দেখা গিয়েছে। যার ফলে অ্যারিজোনা, নেভাডা, এবং মেক্সিকোতে জলসংকট দেখা দেবে আগামী দিনে, কারণ এত দিন তারা যে পরিমাণ জল কলোরাডো থেকে পেত তা আর পাবে না। অ্যারিজোনা এ বার থেকে 18 শতাংশ, নেভাডা 7 শতাংশ, এবং মেক্সিকো 5 শতাংশ কম জল পাবে। সব থেকে বেশি প্রভাবিত হবে কলোরাডো নদীর গতিপথের নীচের দিকে থাকা দেশগুলো।

     

    আরও পড়ুন :দূষণের প্রতি পল গণনার ঘড়ি

     

    কিন্তু কেন এমনটা হল? নেপথ্যে ঠিক কোন কোন কারণ আছে? কলোরাডো নদীর শুকিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে মূল কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। বহু বছর ধরে এই অঞ্চলে একটানা খরা পরিস্থিতি চলছে। বৃষ্টি কম হচ্ছে। পাশাপাশি, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। যার ফলে নদীর জল শুকিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের তরফে দাবি করা হচ্ছে এই পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হবে। একটা সময় হয়তো আর থাকবেই না এই নদী! পাশাপাশি, নদী ব্যবস্থাপনার যে কৌশল উল্লিখিত দেশগুলো নিয়েছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের। কৃষি কাজ, খাল, সেচ কাজের জন্য নদী থেকে যথেচ্ছ জল ব্যবহার করার জন্য নদীর আরও ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়াও জল সংরক্ষণ, খালের মাধ্যমে জলধারা অন্য পথে চালিত করার ফলে মূল জলধারার জলপ্রবাহ কমেছে অনেকাংশে। এই কারণগুলোর ফলে যে শুধুই কলোরাডো নদীর জলের পরিমাণ কমছে তা নয়, কমছে এই অঞ্চলের ভূগর্ভের জলস্তর। প্রতি 1 ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়লে কলোরাডো নদীর 9.3 শতাংশ জলপ্রবাহ কমছে। তা হলে সহজেই অনুমেয় কোন গতিতে কলোরাডো নদী শুকিয়ে যাচ্ছে।

     

    আমেরিকার সব থেকে বড় জলাধার হুভার বাঁধের লেক মেডের মোট জলধারণ ক্ষমতার মাত্র 34 শতাংশ জল আছে সেখানে। বাদ নেই লেক পাওয়েল। সেখানেও আর মাত্র 32 শতাংশ জল রয়েছে। এই দুই জলাধারের জলস্তর সমানে কমছে। এর ফলে হুভার বাঁধ এবং গ্লেন ক্যানিয়ন থেকে জল কম ছাড়া হবে ভবিষ্যতে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে এই বাঁধগুলোর নিম্নবর্তী অঞ্চলে।

     

    লেক মেড শুকিয়ে যাচ্ছে এভাবেই

     

    ছবিটা প্রথমে এই অঞ্চলে স্পষ্ট হলেও, ক্রমশ তা পৃথিবীর অন্যান্য জায়গাতেও দেখা যাবে। জলবায়ু পরিবর্তন যে মানবজীবনকে ঠিক কতটা প্রভাবিত করতে পারে এ বার হাতেকলমে টের পাবে বিশ্ববাসী। এত বছর ধরে যথেচ্ছ দূষণ ঘটানো, অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমনের প্রভাব যে কতটা তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেন স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে উঠছে। আপাতত পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্ত্বপূর্ণ নদী কলোরাডোর জলস্তর যে কমছে তা ঘোষিত হয়ে গেলেও, এর মধ্যে কিন্তু এক ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত লুকিয়ে আছে। এখনও সাবধান না হলে দুর্দিন আসন্ন!


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    বিধানসভা ভোট এবং করোনার কারণে পিছিয়ে গেছে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক, কিন্তু রয়ে গিয়েছে অনেকগুলো প্রশ্ন

    ভদ্রস্থ চাকরি পাওয়ার নিরিখে কলকাতা রয়েছে সবার শেষে।

    বরাবর যে বর্ণবৈষম্য চলে আসছে তার ছাপ করোনা সংক্রমণের হারেও পড়েছে এবং ফল হিসেবে প্রাণ হারিয়েছেন বহু

    জীবনের প্রতিপদে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েও সব বাধা জয় করে এগিয়ে চলেছেন অমৃতা ‘ন হন্যতে’ মুখার্জি।

    নাছোড় বৃষ্টিতে নাজেহাল ভারতবাসী।

    আর্বানাইজেশন এবং ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের কারণে দিল্লি তপ্ত কড়াইয়ে পরিণত হয়েছে

    জলবায়ু পরিবর্তনের বিষবাষ্পে শুকিয়ে যাচ্ছে কলোরাডো-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested