×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • করোনা এবং ভোটের গেরোয় প্রশ্নের অন্ধকারে ঢেকে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 06-01-2021

    প্রতীকী ছবি

    সামনেই বিধানসভা ভোট, তার সঙ্গে জোট বেঁধেছে করোনা। ঠিক যেন গোদের উপর বিষফোড়া। দুইয়ের কোপে আইসিইউতে থাকা শিক্ষাব্যবস্থা বলা যায় এক প্রকার ভেন্টিলেটরে চলে গেল। এক ধাক্কায় মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পিছিয়ে গেল প্রায় চার সাড়ে চার মাস। সে নয় হল, কিন্তু পরীক্ষার মাধ্যম? প্রশ্নের ধরন? পুরোটাই ধোঁয়াশা। জীবনের অন্যতম দুই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা নিয়ে ছাত্র ছাত্রী সহ শিক্ষক শিক্ষিকারাও অন্ধকারে ঢেকে রয়েছেন বর্তমানে। একদিকে পড়াশোনা, পরীক্ষার জন্য তৈরি হওয়ার চাপ অন্যদিকে পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে চিন্তা। লকডাউনের বেড়াজাল ভেঙে যখন একে একে সবই খুলে গেছে, তখন পড়ে রয়েছে একমাত্র শিক্ষাক্ষেত্রেযেন সব করোনা ভাইরাস স্কুল কলেজেই ভিড় করে রয়েছে। যেন ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক শিক্ষিকারা ঘুরতে গেলে করোনা তাদের ঘুরেও দেখবে না, শুধু শিক্ষায়তনে এলেই খপাৎ করে ধরবে। গত বছর তাও মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক করোনার ভ্রুকুটি এড়াতে পেরেছিল কিন্তু এবার? প্রশ্ন রয়েছে নানান, উত্তর অজানা।

     

    পরীক্ষাই যদি অত দেরি করে হয়, তাহলে পরবর্তী সেশনের জন্য কতটা সময় মিলবে? তাহলে কি শিক্ষাবর্ষ পিছিয়ে যাবে? নাকি ম্যানেজ করা হবে? এরপরেও কি অনলাইন ক্লাস চলবে? মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকও কি কলেজের পরীক্ষার মতো অনলাইনে হবে? যদি তাই হয় তাহলে পরীক্ষা পিছনোর যৌক্তিকতা কি করোনার দোহাই দিয়ে? কী ভাবছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা? 

     

    ইছাপুর গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা নিবেদিতা পাকরাসি বললেন, ‘করোনা সব থেকে ভয়ঙ্কর ছাপ ফেলেছে পড়াশোনায়, একদম তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। কীভাবে পরীক্ষা হবে, কীভাবে সেশন শুরু হবে কিছুই জানা নেই আমাদের। পুরোটাই ধোঁয়াশা। তবে ভ্যাকসিন বেরনোর আগে স্কুল খুলবে বলে তো মনে হয় না। যেমন চলছে তেমনই চলতে হবে।' একই অভিযোগের সুর বাসন্তী দেবী কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপিকা চিলিকা ঘোষের, তিনি বলেন, ‘আমরা তো সেমেস্টার সিস্টেমে স্নাতক স্তরে এই প্রথম পড়াচ্ছি, ফলে জানা নেই সেশন ম্যানেজ করা যাবে কিনা। আগে যেমন প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ, ইত্যাদি ছিল তখন গোটা বছরে হয়তো ম্যানেজ করা গেলেও যেতে পারত, কিন্তু এখন হবে কিনা জানা নেই। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে যারা সদ্য কলেজে ভর্তি হবে। পরিকল্পনার বড় অভাব। এক একটি বিশ্ববিদ্যালয় এক একরকম ভাবে চলছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যাঁরা পরিকল্পনার দায়িত্বে আছেন তাঁদের উচিত ছিল অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে পথ বের করা। এভাবে চলতে পারে নাকি? পরীক্ষা কীভাবে হবে, কোন ধরনের প্রশ্ন আসবে, নম্বর কীভাবে ভাগ করা থাকবে যেমন ছাত্র ছাত্রীরা জানে না, তেমন আমরাও জানি না। অনলাইনে পরীক্ষা হবে কিনা তাও জানি না। তবে যদি তাই হয়, তাহলে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া অর্থহীন। আর তাছাড়া, সব খুলে গেলেও এখনও কেন শিক্ষায়তন বন্ধ রাখা হচ্ছে তাই তো বুঝতে পারছি না। বর্তমানে যেভাবে নম্বর দেওয়া হচ্ছে সেটাও ঠিক হচ্ছে না বলেই কোন করি।'

     

    চিলিকা ঘোষ স্পষ্টই জানিয়ে দেন, পরীক্ষা এবং তার পদ্ধতি গোটা বিষয় নিয়েই যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। শুধু তাই নয় সেশন ম্যানেজ হবে কিনা তা নিয়েও তিনি সন্দিহান। তবে এত আঁধারের মাঝে আশুতোষ কলেজের অধ্যাপক অরিজিৎ চ্যাটার্জি যেন একটু আশার আলো দেখালেন। তিনি বললেন, ‘আমরা এখন প্রায় 6মাস পিছিয়ে আছি। এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি শুধু তো কলকাতায় নয়, সর্বত্র। সুতরাং সব জায়গাই পিছিয়ে আছে কম বেশি, এবং সেটা হলে চিন্তার বিষয় নেই। কিন্তু যদি কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়, বা অন্যান্য দেশের শিক্ষাবর্ষকে কাজে লাগিয়েবাকিদের পিছনে ফেলেএগিয়ে যায়, বাকিরা যদি তাল মেলাতে না পারে তখন সমস্যা হবে বৈকি। তাই সবাইকে সকলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। আশা রাখি এই যে ছ’ মাসের একটা ঘাটতি চলছে তা এক সময় পূরণ হয়ে যাবে।'

     

    অরিজিৎ চ্যাটার্জি যেমন আশার আলো দেখালেন, তেমনই নিবেদিতা পাকরাসি এবং চিলিকা ঘোষের প্রশ্নগুলো কাঁটার মতো থেকেই যাচ্ছে, পরীক্ষার পদ্ধতি এবং প্রশ্নের ধরন কী হবে। তাই সবটা মিলিয়েই যে আসন্ন মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বা কলেজের পরীক্ষাগুলোর ভবিষৎ প্রশ্নের মেঘে ঢেকে রয়েছে তা বলাই যায়। এবং কবে সেই মেঘ কাটবে তা জানা নেই কারওরই। 

     


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    মা কি সবার ক্ষেত্রে এক হয়? নাকি তফাৎ থাকে কোথাও?

    সারদা থেকে নারদা হয়ে ভ্যাকসিন, ‘কেলো’ যেন আর তৃণমূলের পিছু ছাড়ছে না!

    প্রতিবাদের স্বর সরকার বা কর্তাদের কানে পৌঁছতে হলে প্রতিবাদীকে হতে হবে ভাইরাল

    পথ কুকুরদের জন্য শ্রীলেখার Pawsome Date

    যতটা সম্ভব কার্বন নির্গমন কমাতে হবে। তবেই আগামী দিনে যে বিপদ অপেক্ষারত তাকে এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে। 

    বাঁধ দিয়ে সুন্দরবনের সদ্যোজাত নিচু দ্বীপগুলি বাঁচানো সম্ভব নয়, জনবসতি সরিয়ে নেওয়াই সমাধান

    করোনা এবং ভোটের গেরোয় প্রশ্নের অন্ধকারে ঢেকে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested