অজানা জীবনের অমোঘ হাতছানি, অ্যাডভেঞ্চার আর নিজের কিছু গড়ে তোলার নেশায় নির্দিষ্ট মাইনের সুখী চাকরি ছেড়ে আসতে দু’বারও ভাবেননি দীপান্বিতা। বর্তমানে দীপান্বিতা গুপ্ত এবং তাঁর ডায়মেনশন্স(dimensions) ডিজিটাল কনটেন্ট রাইটিং(content writing) ফিল্ডের অন্যতম নাম করা কোম্পানি।
ছোট থেকেই দীপান্বিতার ইচ্ছা ও জেদ প্রবল। কিছু করব মনে করলে সেটা না করে থামবার পাত্রী তিনি নন। তাই প্রাণীবিদ্যা নিয়ে মাস্টার্স করার পরও তিনি লেখাকে ভালবেসে চলে আসেন কন্টেন্ট রাইটিংয়ের জগতে। আসলে দীপান্বিতা মনে মনে একটি বাক্য অত্যন্ত মেনে চলেন ""শিক্ষাকে আমাদের বাহন করিলাম না, শিক্ষাকে আমরা বহন করিয়াই চলিলাম।’’ তাই প্রাণীবিদ্যা নিয়ে পড়েও, কয়েক মাস রিসার্চ করার পর যখন লেখালেখির সুযোগ পেলেন সেই সুযোগ তিনি ছাড়তে পারলেন না। ভালবাসার ডাকে যে সাড়া দিতেই হত! তাঁর কাছে বিষয় হচ্ছে ডিগ্রি অর্জন করার মাধ্যম। যে বিষয়ে ডিগ্রি পাচ্ছি সেটা নিয়েই এগোতে হবে এমনটা তিনি মনে করেন না। এর পর তিনি বারো বছরেরও বেশি সময় চাকরি করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন বহু মানুষের সঙ্গেই। মাঝখানে অবশ্য এমবিএ ডিগ্রিও অর্জন করে নেন নিজের ক্যারিয়ারের জন্যই। পরবর্তীকালে যখন দীপান্বিতার মা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তখন সেই টালমাটাল সময়ে দাঁড়িয়ে তিনি চাকরি ছেড়ে অনিশ্চিত জীবনের দিকে পা বাড়িয়েছিলেন। গড়ে তুলেছিলেন তাঁর নিজের কন্টেন্ট রাইটিং ফার্ম।
এক দিকে অসুস্থ মা, ছোট বাচ্চা, সংসার, আর এক দিকে নতুন তৈরি হওয়া ফার্ম। দুটো দিককেই তিনি একা হাতে অতি দক্ষতার সঙ্গে সামলান, ঠিক যেমনটা এক বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এমবিএ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কয়েক বছর আগে। আসলে দীপান্বিতা বরাবরই প্রতিকূলতাকে ভালবাসেন। সমস্যা, বাধা থাকবে, তবেই না তাকে ভেঙে এগনোর মজা! আর এই মজার নেশা খুবই পছন্দ করেন তিনি।
অফিসে কাজের ফাঁকে দীপান্বিতা
প্রথমে খুব ছোট ভাবে ফার্মটি শুরু করলেও, শুধু পরিচিতদের মাধ্যমে কাজ এলেও বর্তমানে গুগলে ‘কন্টেন্ট রাইটিং ফার্ম ইন কলকাতা’ বলে সার্চ করলে আজ ‘ডায়মেনশন্স’-এর নাম দেখায় প্রথম পাতাতেই। খুব সামান্য মাসিক টার্নওভারের জায়গায় আজ দীপান্বিতা অনেকটাই বদল দেখতে পান। তাঁর নিজের কোম্পানির বেড়ে ওঠার প্রতিটা ধাপ যেন তিনি নিজের সন্তানের মতোই উপভোগ করছেন, দেখছেন। বর্তমানে দীপান্বিতা গুপ্তর ইন হাউজ টিম মেম্বার পাঁচ জন হলেও আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছেলেমেয়েরা তাঁর হয়ে কাজ করেন। দীপান্বিতা মনে করেন, ‘‘কেউ আমার এমপ্লয়ি নয়, আমরা সকলেই একে অন্যের টিমমেট।’’
কারও হয়ে, কারও অধীনে চাকরি করার বদলে নিজের কিছু করে দেখানোর ইচ্ছে বোধহয় সবারই থাকে। কিন্তু পরিস্থিতি থাকে না। দীপান্বিতা তাই বলেন, ‘‘আমার সেই জেদ, সাহস, ইচ্ছে ছিল নিজের কিছু করে দেখানোর, লড়াই করার, প্রতিকূলতার সম্মুখীন হওয়ার। আর এখনও সেটাই করে চলেছি।’’
কিন্তু কলকাতায় তো আরও অনেক কন্টেন্ট রাইটিং ফার্ম আছে, সেখানে দীপান্বিতার ডায়মেনশন্স আলাদা কোথায়? দীপান্বিতার কথায়: ‘‘আমরা শুধু লেখার জন্য লিখি না, টপিক দিলেই তার উপর কেবল রিসার্চ করে লিখি না। আমরা চেষ্টা করি তার সঙ্গে নিজেদের বাস্তব এক্সপিরিয়েন্স, ভাবনা সবটা মিশিয়ে দিতে। ক্লায়েন্ট কী চাইছে, তাদের টার্গেট অডিয়েন্স কী সেটার উপরেও যথেষ্ট নজর থাকে আমাদের। আর সব থেকে বড় কথা, আমরা যে লেখাটা লিখে দিই ক্লায়েন্টদের তাদের সেই লেখার উপর আলাদা করে এসইও-র কাজ করতে হয় না। এটাই আমাদের সবার থেকে আলাদা করে।’’ এর পাশাপাশি কলকাতার অনেক কন্টেন্ট রাইটিং ফার্ম থাকলেও, মহিলা মালিকদের মধ্যে দীপান্বিতা অন্যতম। তিনি নিজে যেমন নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করছেন তেমনই আরও অনেককে কাজের সুযোগও করে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:লড়াকু লক্ষ্মী: 1, পোশাক নয়, স্বপ্ন বুনে অনন্যা পৌষমী
তাই 2018-এ তৈরি হওয়া ডায়মেনশন্স বর্তমানে কলকাতার ডিজিটাল কনটেন্ট রাইটিং ফিল্ডের অন্যতম জনপ্রিয় নাম। মাত্র তিন বছরেই ভাল কাজ এবং ব্যবহারের মাধ্যমে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছে দীপান্বিতার সংস্থা। যদিও সামনে তাদের অনেকটাই পথ চলা বাকি। দীপান্বিতার কথায়: ‘‘ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যাপারটা অনেক বড়। আগামী দিনে ডিজিটাল কনটেন্ট-এর বিভিন্ন দিকেই কাজ করার ইচ্ছে আছে।’’ ফলে যে মেয়েটার জীবন শুরু হয়েছিল একটি সাধারণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাগাজিনের সাব এডিটর হিসেবে, যাঁর দু’চোখ ভরে রঙিন স্বপ্ন ছিল ‘নিজের কিছু করার, ছক ভাঙার’, আজ তিনি কেবল জেদ আর সদিচ্ছার জোরে তা বাস্তবায়িত করে দেখিয়ে দিচ্ছেন সকলকে।
বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমারের খালবিলে থিকথিক করছে রাক্ষুসে সাকার মাছ
পৃথিবীর থেকে প্রায় 930 কোটি আলোকবর্ষ দূরে সম্প্রতি প্রাচীনতম ছায়াপথ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা।
রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম হওয়ার দরুন দুই বোনেরই খুব ছোট বয়সে দেশপ্রেমের সঙ্গে পরিচয় ঘটে।
আমাদের বদলের নেপথ্যে থাকে আমাদের চারপাশের মানুষ এবং পরিস্থিতি সেই কথাই মনে করাল এই ছবি।
লড়াই করার ভীষণ জেদকে হাতিয়ার করে মাত্র তিন বছরেই সাফল্যের স্বাদ পেল দীপান্বিতা গুপ্তর ডায়মেনশন্স
বারবার আরটিপিসিআর টেস্ট করলেই হতে পারে বিপদ!