×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • রাক্ষুসে সাকার মাছ

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 27-11-2021

    প্রতীকী ছবি

    ছুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরোয় প্রবাদটি বোধহয় সাকার মাছের(Sakar Fish) সঙ্গে ভীষণ ভাবে মিলে যায়। আগে একটা সময় পর্যন্ত এদের অ্যাকুয়ারিয়ামের (Aquarium) শোভা বাড়াতেই দেখা যেত, এখন মাছ চাষিদের ঘুম ওড়ানোর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে!

     

    সাকার মাছ, পুরো নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম হিপোসটোমাস প্লেকোসটোমাস। এই মাছ হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার (South America)। এদের মূলত ব্রাজিলের আমাজন অববাহিকায় দেখা যায়। এরা শ্যাওলা, পোকা এ সব খায় বলেই একটা সময় এদের বিদেশ থেকে আনা হত অ্যাকুয়ারিয়ামে রাখা হবে বলে। শোভাও বাড়াবে আবার শ্যাওলাও জমতে দেবে না। কিন্তু বর্তমানে এর ফল উল্টো হওয়া শুরু করেছে।

     

    সাকার মাছ খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করে এবং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়। অ্যাকুরিয়ামে থাকতে থাকতে যখন মাছগুলো বড় হয়ে যায় তখন সেই মাছের মালিকেরা কিছু না ভেবে, না বুঝে তাদের নিকট জলাশয়, ড্রেন, পুকুর, ডোবা, ইত্যাদি জায়গায় ছেড়ে দেয়। এর ফলে তারা সেখানে গিয়ে আরও দ্রুত বাড়তে থাকে এবং বংশ বিস্তার করতে থাকে। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে তাতে সমস্যা কোথায়? সমস্যা আছে।

     

    আরও পড়ুন:উত্তরবঙ্গে বিপন্ন বন্যপ্রাণীরা

     

    প্রথমত, সাকার মাছের পাখনা অত্যন্ত ধারালো হয়। এর দ্বারা অন্যান্য মাছ আক্রান্ত হয় এবং মারা যায়। এর পাশাপাশি, এরা রাক্ষুসে মাছ না হলেও প্রচুর খায়। বিশেষত চিংড়ি, বাউস, মাগুর, শিঙি-সহ অন্যান্য ছোট ছোট মাছ। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছের সংখ্যা কমতে থাকে হুহু করে। এরই পাশাপাশি দেশীয় মাছের সঙ্গে সাকার মাছের একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয় খাদ্য এবং বাসস্থান নিয়ে। যেখানে সাকার মাছই জিতে যায়। ফলে দু’ভাবেই দেশীয় প্রজাতির মাছের সংখ্যা কমতে থাকে। এবং এক সময় তারা বিলুপ্ত হয়ে যায়। এ ছাড়াও জলজ পোকা বা শ্যাওলা এ ভাবে খেতে থাকলে তা পুকুর, ডোবা, নদীর বাস্তুতন্ত্রের পক্ষেও ভাল নয়।

     

    বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত এবং মায়ানমারে এর সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে। বাংলাদেশের বুড়িগঙ্গায় সাকার মাছ থিকথিক করে ইদানিং। এর ফলে বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য গবেষকরা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। তাঁদের আশঙ্কা, সাকার মাছ যে ভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাল, বিল, নদী-নালায় বংশ বিস্তার করছে এতে সে দেশের মাছ চাষ এবং ব্যবসার বিস্তর ক্ষতি হবে যদি না সাকার মাছকে সমূলে ধ্বংস করা যায়। মায়ানমারের মাছ চাষ ইতিমধ্যেই ভীষণ রকম ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু এর থেকে মুক্তির উপায় কী?

     

    মাছ বিশেষজ্ঞ সুমিত হোম চৌধুরী বলেন, ‘‘এই মাছ খুব দ্রুত গতিতে বংশ বিস্তার করে, ফলে তাকে আটকানো খুব মুশকিল। এক বার কোনও জায়গায় চলে গেলে সেখান থেকে তাদের বের করা সমস্যার ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে একমাত্র সরকার ও সরকারি পদক্ষেপ কাজে আসতে পারে। কারণ কোনও এক জন মাছচাষির পক্ষে এদের সমূলে উৎপাটন করা প্রায় অসম্ভব। তবে কোনও একটি পুকুর বা মাছের ভেড়িতে যদি এই মাছ পাওয়া যায় তা হলে সেখানকার সব মাছ তুলে ফেলে জল পরিষ্কার করে নতুন ভাবে চাষ আরম্ভ করতে হবে। এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন আর এই সাকার মাছ সেখানে না আসে।’’


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    লড়াই করার ভীষণ জেদকে হাতিয়ার করে মাত্র তিন বছরেই সাফল্যের স্বাদ পেল দীপান্বিতা গুপ্তর ডায়মেনশন্স

    বড় বড় কথা আর অজস্র কন্যাশ্রী সত্ত্বেও মেয়েরাই মেয়েদের বড় শত্রু, বারবার প্রমাণিত হচ্ছে এই বাংলায়

    মানুষ যাতে নিজেকে বাঁচাতে পারে, তার জন্য বাতাসে কতটা বিষ মিশছে, প্রতিনিয়ত তার হিসেব দেবে জলবায়ু ঘড

    রসিকতা নয়। কলকারখানা বন্ধ, আকাশ ও সড়কপথে যান চলাচল অনেক কম। সব মিলিয়ে সারা পৃথিবীতেই দূষণের মাত্রা

    মার্কের এই সফল প্রত্যাবর্তন ভবিষ্যতের নানান গবেষণার দিক খুলে দিল। 

    করোনা আক্রান্তদের শবদেহ এভাবে গঙ্গায় ছুঁড়ে ফেলায় বিভিন্ন রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।

    রাক্ষুসে সাকার মাছ-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested