সাংবাদিক থেকে সোজা ব্যবসায়ী। কারও অধীনে কাজ করব না, কারও কথায় চলব না, নিজের কিছু বানাব— এই জেদ বরাবর ছিল তাঁর মধ্যে। নিজের কিছু করে দেখানোর জেদ। নিজের নাম প্রতিষ্ঠিত করার জেদ। আর নিজের সেই স্বপ্ন, ইচ্ছে, জেদকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য চাকরি ছেড়ে নিজের একটি ব্র্যান্ড চালু করেছিলেন সেই মেয়ে। ভাবেননি সাড়া মিলবে এত। ভাবেননি সাফল্য এ ভাবে আসবে। কিন্তু এল। বর্তমানে কলকাতা, হাওড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হচ্ছে ‘নকশা ঘর’(naksha ghar) বুটিক এবং তার কর্ণধার পৌষমী রায়।
বুটিক!(boutique) সে তো অনেকেই খোলে। এতে আর আলাদা কী? ভাবছেন নিশ্চয়? স্বাভাবিক। তবে তফাৎ তো আছেই। আজকাল অনেকেই গামছা ড্রেস পরেন। গামছা দিয়ে তৈরি জামা, শার্ট, ব্লাউজ এখন ফ্যাশনে বেশ ‘ইন’। কিন্তু জানেন কি, কে প্রথম দিকে মানুষের মধ্যে এটিকে ছড়িয়ে দিয়েছিল? জনপ্রিয় করে তুলেছিল? গামছা ড্রেস কবে থেকে ফ্যাশনে এল, কে প্রথম বানালেন, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা চলতেই পারে। তবে বর্তমানে যেটি সব থেকে বড় প্ল্যাটফর্ম, সেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কলকাতা থেকে প্রথম গামছা ড্রেস লঞ্চ করেন পৌষমী রায়। আগে যা হাইফাই লেভেলের ফ্যাশন, কেতাদুরস্ত মানুষের ছিল, তা ক্রমে জনসাধারণের হয়ে উঠল। নেপথ্যে সেই মেয়ে।
আরও পড়ুন:আমরা কি আঁধার থেকে আলোর পথে এগোচ্ছি
2015 সালে এই বুটিকের পথ চলা শুরু পৌষমীর মায়ের হাত ধরে, তখন সেখানে শুধুই শাড়ি পাওয়া যেত। 2018 সালে পৌষমী প্রথম বারের জন্য অন্য ভাবনা এনে, নিজের কল্পনার রং মিশিয়ে নতুন করে সাজান এটিকে।
পৌষমীর আদর্শ হচ্ছেন বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল। তিনি বরাবরই চাইতেন অন্য রকম কিছু করতে। গতানুগতিক জামাকাপড়ের বাইরেও নতুন কিছু আনতে ফ্যাশনের দুনিয়ায়। সেখান থেকেই তাঁর প্রথম ভাবনা আসে গামছা নিয়ে। গামছা দিয়ে ড্রেস বানান, তার পর সেটিকে প্রথম বারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আনেন লাইভের মাধ্যমে। এবং প্রথম দিনই তাঁর স্টক ফুরিয়ে যায়। দারুণ সাড়া পান।
এর পর গামছার পাশাপাশি একে একে আসে ঢাকাই শাড়ি দিয়ে ড্রেস, আজরাখ, ইক্কত প্রিন্টের ড্রেস, শার্ট প্রভৃতি। আজকাল বাজারে এগুলো সহজলভ্য। কিন্তু সেগুলোকে জনপ্রিয় করে তোলার নেপথ্যে অবশ্যই ‘নকশা ঘর’ এবং পৌষমীর শ্রম ও ভাবনা আছে।
আমাদের অনেকেরই ধারণা, চাকরি মানেই দারুণ সুখের জীবন, মাস গেলে একটা নির্দিষ্ট আয়। তাই বাঙালিদের অনেকেই এই সুখের জীবন ছেড়ে ব্যবসায় আসতে চান না। বিশেষত মেয়েরা। কারণ সমাজের আরও একটি ধারণা হল, মেয়েদের দিয়ে ঠিক ব্যবসা হয় না। কিন্তু সেটা যে কত বড় ভুল তা পৌষমী এবং তাঁর মতো মহিলা শিল্পোদ্যোগীরা প্রমাণ করে চলেছেন। মায়ের এক সামান্য সাধারণ শাড়ির বুটিক আজ একটি ব্র্যান্ড। টলিউডের স্বনামধন্য নায়িকারা আজ পৌষমীর প্রোডাক্টের ক্রেতা। বর্তমানে অনেক কারিগর পৌষমীর হয়ে কাজ করেন। আগে পৌষমী কারও অধীনে কাজ করতেন, এখন তিনি আরও কিছু মানুষের রোজগারের পথ খুলে দিচ্ছেন।
পৌষমীর কাজ
পৌষমী বলেন, ‘‘আগামী দিনে এমন আরও একটি ভাবনা নিয়ে আসতে চলেছি যা কলকাতায় প্রথম হবে। সে ভাবেই সব তৈরি হচ্ছে। আসলে আমি বরাবরই নতুন ধরনের কিছু করতে ভালবাসি, যা সবার থেকে আলাদা হবে। নজর কাড়বে। মানুষ চমক ভালবাসে, আর আমি চেষ্টা করি আমার কাজের মাধ্যমে সেটা উপহার দিতে।’’
ভাবনার রঙে, ইকো ফ্রেন্ডলি কাপড়কে সঙ্গী করে পৌষমী বুনে চলেছেন তাঁর নিজের জগৎ, অন্য ভাবে, স্বাধীন ভাবে।
পুজো যখন সবার, উপহারও তো সবারই পাওয়ার কথা, নয় কী?
ওমিক্রন ছড়াচ্ছে, সতর্কতা কই?
এই 2020 সালেও সমাজের চোখে নব বিবাহিত বরের মৃত্যু মানেই কনে অপয়া রাক্ষসী
ক্যান্সার থেকে জীবনের নানান বাধা অতিক্রম করে প্রিয়াঙ্কা আজ সফল ব্যবসায়ী।
মহাকাশ গবেষণায় যেন এক নতুন দিগন্ত খুলে দিল নাসার এই নতুন আবিষ্কার।
এবারের দীপাবলি ধোঁয়াহীন রাখার বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে খুশি চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা