×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • বিলুপ্তপ্রায় শিল্প দেওয়াল লিখন

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 05-03-2021

    দেওয়াল যুদ্ধে যুযুধান সব শিবির।

    বঙ্গবাসীর কাছে এক অত্যন্ত চেনা দৃশ্য হচ্ছে ভোটের আগে রং-বেরঙের দেওয়াল এবং তাতে ভোটপ্রার্থীর ছবি। সেসব ছাড়াও রাজনৈতিক দলের চিহ্নসহ নানান মজার ব্যঙ্গাত্মক ছড়া এবং কার্টুন চিত্র। মনে আছে, ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী পদ অভিলাষী নেতার কার্টুন এঁকে তার সামনে রামকৃষ্ণদেবকে বসিয়ে লেখা হয়েছিল, তোর চৈতন্য হোক!এসব মিমের পূর্বপুরুষ তখনও সোশাল মিডিয়া আসেনি, নেই ফেবুকবিদের দৌরাত্ম্য। তখন টু লাইনার বা ফোর লাইনার ছড়া পড়তে হলে ভোটের সময় দেওয়াল লিখনই ভরসা ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সবটাই এখন অতীত। 

     



    একটা সময় যেমন ফোন, ক্যালকুলেটর, ঘড়ি প্রভৃতির একমাত্র সলিউশন হয়ে দাঁড়িয়েছিল মুঠোফোন, তেমনই আজকাল ভোট প্রচার থেকে কোনও খবর মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হোক কিংবা কেনাকাটি সবের একমাত্র সমাধান সোশাল মিডিয়া

     




    সমাজমাধ্যম পৃথিবীটাকে হাতের মুঠোর মধ্যে এনে দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু কেড়ে নিয়েছে অতীতের রংবেরঙের দিনগুলো। সঙ্গে বহু মানুষের রুটিরুজি। সামাজিক করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই অসামাজিক করে তুলেছে আমাদের সোশাল মিডিয়া। ধরা যাক যাঁরা এক সময় দেওয়াল লিখনের কাজ করতেন। ওটাই ছিল তাঁদের পেশা। যখন যে রাজনৈতিক দল ডাকবে, তার জন্য রং তুলি নিয়ে একটা ফ্যাকাসে দেওয়ালকে সাজিয়ে তুলতে হবে। কিন্তু এখন আর তেমন ডাক আসে না তাঁদের কাছে। এলেও সংখ্যাটা বড়ই কম। আগে যেমন রাজনৈতিক কটাক্ষ ছড়া, ব্যঙ্গচিত্র দেখা যেত, এখন খুব বেশি হলে ভোটপদপ্রার্থীর নাম এবং তাঁর দলের চিহ্ন। ব্যাস। সোশাল মিডিয়াতেই এখন মানুষ দিনের বেশির ভাগ সময় কাটায়, তাই ভোট প্রচারও সেখানে সরে গিয়েছে। তার অবশ্য সুবিধেও রয়েছে

     

    আরও পড়ুন: বেনামী লাল পোস্টারে ছয়লাপ বাংলা


    দেওয়াল লিখতে গেলে কম করে দুজন মানুষ লাগে। লাগে রং, তুলি এবং সময়। আগে দেওয়ালে সাদা রং করতে হয়। সেটা শুকিয়ে গেলে তারপর বর্ডার এঁকে তার মধ্যে রং ভরাট করে নাম, চিহ্ন আঁকতে হয়। সঙ্গে যাঁর বাড়ি, তাঁর অনুমতির ব্যাপার আছে। দুই ভিন্ন দলের একটা দেওয়াল নিতে মারপিট করাও বিচিত্র না। সেখানে সোশাল মিডিয়ার দেওয়াল, মানে ফেসবুক টুইটারের পেজ অনেক ভাল। কারও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। নেই দেওয়াল নিয়ে বচসা করার বালাই। স্রেফ কম্পিউটারে বসে আঁকো এবং সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ছড়িয়ে দাও। শ্রম, সময় ও অর্থ সবই বাঁচে। কিন্তু তাই বলে এত পুরনো একটা শিল্প ধুঁকতে ধুঁকতে হারিয়ে যাবে?

     



    সময় এবং পরিস্থিতির কাছে নতিস্বীকার করে কিছু মানুষকে তাঁর পেশা বদলে নিতে হবে? অবশ্য তাইই তো হয়ে এসেছে এতদিন। সময়ের সঙ্গে তাল তো মেলাতেই হবে। বদল যে অবশ্যম্ভাবী। তাই ভোটের আগে যে চেনা ছবি, দেওয়াল লিখন, মজার ছড়া দেখা যেত, তাও কমতে কমতে এক সময় হারিয়েই যাবে। কিন্তু তবু কি চেষ্টা করা যেতে পারে না বাংলার এই শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য?


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    করোনার টিকা হয়নি অথচ স্কুলে যেতে হচ্ছে এমন ছোটদের অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার অবসান এবার।

    সোমবার বেহালার ঐতিহ্যবাহী চণ্ডীপুজোর শেষ দিন।

    জীবনে সফল হয়ে তারা যেন গর্ব ভরে বলে, 'রোল কাকুর জন্যই আমাদের এই সফলতা।'

    রাজ্যটা এখন চিড়িয়াখানা নাকি সার্কাসে পরিণত হয়েছে তা নিয়ে অনেকের মনেই ধন্দ।

    শিশু মনেই পাকাপাকিভাবে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বীজ বপন করছে সরকারি NCERT পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে?

    করোনার স্বাস্থ্যবিধি কি এক একজনের জন্য এক এক রকম? প্রশ্ন উঠছে।

    বিলুপ্তপ্রায় শিল্প দেওয়াল লিখন-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested