×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • 229 বছরের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে সাবর্ণদের চণ্ডীপুজো

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 20-12-2021

    নিজস্ব ছবি

    মাইকে গানের বদলে অনবরত বেজে চলেছে ‘মাস্ক পরুন, অকারণ মাস্ক খুলবেন না।’ থিকথিক করছে ভিড়। করোনা ভুলে সবাই 229 বছরের পুরনো পুজোর মেলায় মেতে উঠেছে। এই সময়ে কোন মেলা? বেহালার চণ্ডীমেলা।

     

     

    বেহালা বলতেই যে জিনিসগুলো প্রথম মাথায় আসে তার অন্যতম হচ্ছে সখেরবাজারের চণ্ডী মেলা। যে মেলা একটা সময় অবধি পারিবারিক মেলা ছিল, বর্তমানে তা সর্বজনীন পুজো এবং মেলাতে পরিণত হয়েছে।

     

     

    1792 সাল, 1200 বঙ্গাব্দে মন্দির সংলগ্ন পুকুরে একটি ঘট ভেসে ওঠে। ক’দিনের মধ্যেই সাবর্ণ রায়চৌধুরীর বংশধর মহেশচন্দ্র রায়চৌধুরী স্বপ্নাদেশ পান, দেবী চণ্ডী ওই ঘটে পুজো পেতে চান। ব্যস, যেমন আদেশ তেমন কাজ। প্রতিষ্ঠিত হল ঘট। শুরু হল পুজো। বারো মাস এমনই ঘট পূজিত হলেও অগ্রহায়ণের শুক্লাষ্টমী তিথিতে বড় করে তিন দিন পারিবারিক পুজো পালন করা হত। কিন্তু সেটাই বর্তমানে বাড়তে বাড়তে দশ দিনের পুজো এবং মেলায় পরিণত হয়েছে। এখন দেবী মূর্তিও তৈরি করা হয়। গ্রামীণ মেলা আধুনিক সর্বজনীন মেলার আকার নিয়েছে। প্রথম 125 বছর এই চণ্ডীপুজো এবং মেলা পারিবারিক পুজো এবং মেলা ছিল। ক্রমে তা আকারে বেড়ে সর্বজনীন পুজোর রূপ নিয়েছে।

     

    বেহালা, দক্ষিণ 24 পরগনা, টালিগঞ্জ, নিউ আলিপুর, এমনকি হাওড়া, ইত্যাদি জায়গা থেকেও মানুষ ভিড় জমান এখানে। দশ দিনের মাথায় দেবীকে দইঘাটে বিসর্জন দেওয়া হয়। সেই বিসর্জনের রূপও দেখবার মতো। বিকেল থেকেই নানান আতসবাজিতে আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে। বাজতে থাকে ঢাক-ঢোল।

     

    আরও পড়ুন: প্লাস্টিকের বিপদ গ্রাস করছে সমুদ্রকেও

     

    কিন্তু মাতৃমূর্তি বিসর্জন হওয়ার পর পরই মেলা শেষ হয়ে যায় না। আরও তিন-চার দিন চলে ভাঙা মেলা। এই মেলায় কী না বসে? জিলিপি, কটকটি থেকে নাগরদোলা, ব্রেক ডান্স, পান থেকে কাবাব, রোল, চাউ থেকে চুড়ি, ব্যাগের দোকান, কাপ থেকে ঘর সাজানোর জিনিস— সব এখানে পাওয়া যায়। রাস্তার দু’ধারে সার দিয়ে বসে দোকান। একটা সময় এখানে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র-সহ অসংখ্য সংগীতশিল্পী আসতেন, শোনাতেন তাঁদের গান। সুচিত্রা সেন, সন্ধ্যা রায়ের মতো প্রখ্যাত অভিনেত্রীও আসতেন। এখনও বর্তমান সময়ের বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী, অভিনেতারা আসেন। কিন্তু সেই জৌলুস কোথাও যেন একটু হলেও ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

     

     

    তবে এ বারের পুজো একদম আলাদা যেন। মাইকে গান ইত্যাদির বদলে বারে বারে করোনা নিয়ে সতর্কবার্তা ভেসে আসছিল। যদিও তেমন কড়া নজরদারি ছিল না। ভিড়ে অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। তার মধ্যে পুরভোটের কারণে আবার দু’দিন মেলা বন্ধ ছিল। অন্যান্য বারের তুলনায় কম দোলনা বসেছে। কিন্তু মেলার আনন্দ, হইচইয়ে এতটুকু ঘাটতি ছিল না। বছরের এই ক’টা দিনের জন্যই যেন বেহালাবাসী অপেক্ষা করে থাকেন। এ বছরের মতো আজই শেষ দিন এই ঐতিহ্যবাহী পুজোর। আবার অপেক্ষা এক বছরের।

     


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    সাহারা, থর মরুভূমিতে জন্ম নেওয়া নতুন গাছ আখেরে প্রকৃতির ক্ষতি করছে।

    যৌনকর্মীরা সামাজিক স্বীকৃতি আর আইনগত অধিকারের মধ্যে কোনটা কতটা পেলেন সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে

    নেপথ্যে থেকে কাজ করে দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে রসদ জুগিয়েছিলেন চন্দননগরের মতিলাল এবং মনীন্দ্রনাথ।

    পারলে কংক্রিটের ছাদের তলায় আশ্রয় নিন, খোলা মাঠে থাকলে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন।

    দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আজ শ্বেতাকাত্তির জয়ের স্বীকৃতি এক দিনের জন্য কানাডার কনসাল জেনারেল পদ।

    রাজ্যে একদিকে চলছে ভোট প্রচার, আর একদিকে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকদিনেই 400 ছাড়িয়ে গেছে।

    229 বছরের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে সাবর্ণদের চণ্ডীপুজো-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested