×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • আজও পাগলের মতোই বাঙালি

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 31-07-2021

    Madly বাঙালি সিনেমার পোস্টার।

    "ম্যাডলি বাঙালি'। অঞ্জন দত্তের সিনেমা, যা রিলিজ করার পর কেটে গিয়েছে বারো বছর। কিন্তু সিনেমায় দেখানো ছবি এবং পরিস্থিতির কতটা বদল ঘটল? আদৌ বদল ঘটল কি? আজও সমান ভাবেই কেন প্রাসঙ্গিক অঞ্জন দত্তের এই সিনেমা?

     

     

    ম্যাডলি বাঙালি সিনেমায় দেখা যায় চার যুবককে। যাদের ব্যান্ডের নাম ‘ম্যাডলি বাঙালি’, যাদের স্বপ্ন বিখ্যাত হওয়া। কিন্তু কীভাবে, কোন লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা জানে না। তাদের রিহার্সাল রুম বলতে ববি আঙ্কেলের গ্যারেজের একটা ঘর। এই চারজন, অর্থাৎ পাবলো, নিওন, বাজি, বেঞ্জি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ, যাদের জীবন আলাদা, যাপন আলাদা। সবারই জীবনে নানান সমস্যা আছে। কিন্তু ওদের সবার দু’টো জিনিস এক, প্রথম স্কুল, দ্বিতীয় ব্যান্ডের জন্য ভালবাসা এবং স্বপ্ন। এমতাবস্থায় ববির বন্ধু স্যান ওরফে সন্দীপ বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসে। এবং কীভাবে যেন ম্যাডলি বাঙালির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে পড়ে। ওদের ঠিক ভুল ধরিয়ে গাইড করে দেয়। ঘটনাক্রমে এই ব্যান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে আরও একজন, বাবুরাম, মাস্তান বা দক্ষিণ কলকাতার কুখ্যাত ডন, যার ‘অনেক আত্মীয় লালবাজারে বসে, লেনদেন খাওয়া দাওয়া চলে’ এবং তিনি সবার ‘পিছনে সেলোটেপ আটকান’। ছবির আরও দুই চরিত্র হল তানিয়া, পাবলোর বন্ধু তথা প্রেমিকা না হয়েও প্রেমিকা। মানে পাবলো ওকে ভালবাসলেও সেটা বলে উঠতে পারে না। দ্বিতীয়জন হল জয়, বেঞ্জির প্রেমিকা। এরা সকলেই এই ব্যান্ডের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু গল্পে দেখা যায় তারা যে ব্যান্ডের জন্য জানপ্রাণ লড়িয়ে দিয়ে তাকে বাঁচিয়ে ছিল, একটা সময় নিজেদের জন্য সেই ব্যান্ড ভেঙে শেষ করে চলে গেল। থেকে গেল কিছু নাম, একটা গান আর হারিয়ে যাওয়া বন্ধুত্ব। 

     

    আরও পড়ুন: ভালবাসার গল্প খুব বোরিং

     

    হঠাৎ এত পুরনো এত জনপ্রিয় ছবির কথা কেন বলছি? বলছি কারণ কলকাতা শহরের এই ছবিটা আজও পাল্টায়নি। আজও কলেজ পড়ুয়াদের অনেকেই স্বপ্ন দেখে নিজের ব্যান্ড বানিয়ে সেটাকে দাঁড় করানোর। স্বপ্ন দেখে সফল হওয়ার। কিন্তু বাস্তবের মাটিতে আছাড় খেয়ে অনেকেই সেই স্বপ্নের হাত ছাড়ে। ভেঙে যায় ব্যান্ড। যে যার মতো জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়। কলকাতার বুকে আজও বহু ব্যান্ড তৈরি হয়, ভাঙে। তার মধ্যেও যে ক’টি ব্যান্ড টিকে যায় তার প্রতিটির প্রায় সবাই বা অধিকাংশ সদস্য ফুলটাইম মিউজিশিয়ান নয়, বা ব্যান্ডের জন্য পুরো সময় দেয় না। তাদের সকলেরই অন্য একটা পেশা আছে। ব্যান্ডটা আজও স্রেফ নেশা হয়েই থেকে গেছে অনেকের কাছে। তাই নেশার ঘোর কাটলে যে যার মতো ছিটকে যায়। ভেঙে যায় প্রেম, ভেঙে যায় বন্ধুত্ব, হারিয়ে যায় ব্যান্ড। তবে জীবনের শেষপ্রান্তে এসে সেই কলেজবেলার স্বপ্ন মনে পড়ে, স্মৃতির রঙিন পাতা উল্টে যায় মন। কারও কারও হদিস পাওয়া যায়, কেউ আবার হারিয়ে যায় চিরতরে। পুরনো প্রেম, নেশা ভুলে যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর হেসে উত্তরসূরির কাছে গল্প বলে, ‘আমাদেরও একটা ব্যান্ড ছিল জানিস!’ 

     

     

    ছবিটা আজও এক, পরিস্থিতি আজও এক। গল্পগুলোও। শুধু নামগুলো বদলে যায়। তাই তো অঞ্জন দত্তের তানিয়া গানটা এই ছবিটার মতোই প্রাসঙ্গিক হয়েই থেকে গেছে। জনপ্রিয়ও বটে! 

     

    ‘সময় থাকে না থেমে একদিন ভুলে যেতে হয়

    তাই হাতটাও আমাদের একদিন ঠিকই খুলে দিতে হয়,

    তবু ছাড়ব না আমরা হাত কিছুতেই মনের ভেতর

    যতই বদলে যাক চারপাশের এই শহর।

    জানি কাল ভুলে যাবে আমাদের গল্প এ দুনিয়া,

    তবু হয়তো থেকে যাবে আমাদের গান তানিয়া।'


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    মানুষের একটি অতি সাধারণ প্রবণতার কারণে একটি গোটা গ্রামকে দেখলে মনে হয়, সে যেন ঘুরছে!

    গত বছরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন থেকে এবারের রেড ভলেন্টিয়ার্স, মানুষের পাশে বামপন্থী তরুণ দল।

    প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলার ছবি এবং কীর্তনের অপূর্ব মিশেল ধরা পড়েছে এই সিরিজে।

    মনুষ্যসৃষ্ট দূষণ এবং অন্যান্য কারণে পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে জীব বৈচিত্র্যের বড় অংশ।

    বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ে আসে, নাকি লোকালয় বাড়তে বাড়তে তাদের জমি ছিনিয়ে নিচ্ছে?

    ভোট মিটতেই ভোল বদল! রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে মিলছে না পরিষেবা।

    আজও পাগলের মতোই বাঙালি-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested