‘দাদা মায়ের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড আছে। আপনারা নেবেন তো?’
‘না। এখানে ওসব চলে না। বন্ধ হয়ে গেছে।'
‘কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যে....’
‘বললাম তো চলে না। ক্যাশ বা কার্ড বা মেডিক্লেম। ওসব স্বাস্থ্য সাথী ফাথী চলবে না।‘
বেশিদিন নয়, মাত্র কুড়ি পঁচিশ দিন আগের কথা। মায়ের তখন হুহু করে অক্সিজেন লেভেল নামছে। 52, 48, 37। পাগলের মতো এ হসপিটাল থেকে ও হসপিটাল ছুটে বেড়াচ্ছি। দক্ষিণ কলকাতার হাজরার এক বিখ্যাত হাসপাতাল স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তারা পেশেন্ট নেবে না। অগত্যা বাধ্য হয়ে টালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছের একটি বড় হাসপাতালে ফোন করলে তারা জানায়, তারাও স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নেবে না। তারপর কাছেই তৃতীয় একটি নার্সিং হোমে গেলে তাদের রিসেপশনিস্টের সঙ্গে যে কথোপকথন হয়, সেটাই শুরুতে উল্লেখ করা হয়েছে। উপায়ন্তর না দেখে সেখানেই অবশেষে মা’কে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু ভোটের আগে রাজ্যে সরকার ঘোষণা করেছিল, এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজে একাধিক বার বলেছিলেন যে, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে যে সব হাসপাতালের নাম লেখা, সেগুলো তো বটেই, তা ছাড়াও রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালেও এই কার্ড গ্রাহ্য করা হবে! তারা তা নিতে বাধ্য। ভোটের আগে বহু মানুষ উপকৃত হলেও, ভোটের পরই ছবিটা যেন দুম করে বদলে গেল!
এতদিন ভাবছিলাম আমি একাই ভুক্তভোগী। কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়ে জানতে পারি আমি একা নই, আমার মতো আরও অনেকেই আছেন।
অপূর্ব মণ্ডল জানান, তিনি তাঁর বাবাকে ইএম বাইপাসের ধারে একটি বড় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও এই কার্ড গ্রহণ করেনি। তাঁদের ক্যাশ টাকা দিয়েই পেশেন্টকে ভর্তি করতে হয়।
আরও পড়ুন: প্রাণদায়ী অক্সিজেন বণ্টনের তথ্য গোপন করছে মোদী সরকার
অন্যদিকে, জনৈক রজনী ব্যানার্জি জানান, তাঁর বাবা করোনায় আক্রান্ত হলে সল্টলেকের একটি বিখ্যাত হার্ট ক্লিনিকে ভর্তি করানোর সময় ক্যাশ 68,000 টাকা জমা করতে হয়। এবং পরবর্তীকালে আর এই কার্ড সেই হাসপাতাল গ্রহণ করেনি। বাকি বিলের টাকাও তাঁদের ক্যাশেই মেটাতে হয়েছে। তিনি আরও জানান, ‘আমার এক প্রতিবেশী বৌদি, অত্যন্ত গরীব। তার গলব্লাডার অপারেশনের সময়েও এই কার্ড নেয়নি নিউ ব্যারাকপুর মিউনিসিপ্যালিটি হাসপাতাল। গরীব মানুষের যদি উপকারই না হয় তাহলে কেন এই প্রকল্প? বৌদির বর প্যারালাইসড। সে কোনও সুবিধা পেল না, অথচ একজন পার্টি করে বলে একই দিনে, একই হাসপাতালে তার পরিবার এই কার্ডের সুবিধা পেল।'
হ্যাঁ, এমনই অভিযোগ তুলেছেন রজনী। যদিও আমরা মায়ের সময় পরিচিত রাজনৈতিক নেতাদের যোগাযোগ ব্যবহার করে, তাদের ‘সোর্স’ কাজে লাগিয়েও এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা পাইনি। তবে কি বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের পার্টি মেম্বার হলে তবেই এই কার্ডের সুবিধা মিলবে? আর কেনই বা ভোট মিটতেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি আর মানা হচ্ছে না?
বর্তমান সময়ে যাদের ESI, মেডিক্লেম অথবা অন্য কোনও স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ নেই, তাদের জন্যই বিশেষ করে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। তারা কি এখন কোনও সুবিধাই পাবে না? এটা কি শুধুই ভোটের সময়ের জন্য বলবৎ ছিল? যদি তাই হয় তাহলে কেন বলা হয়েছিল রাজ্যের সর্বত্র এর সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে? কেন তখনই স্পষ্ট করে দেওয়া হল না একমাত্র কার্ডে উল্লিখিত হাসপাতালেই এই সুযোগ পাওয়া যাবে। এই হেনস্থার মানে কী?
প্রশ্ন থাকলেও উত্তর নেই। ভোটের আগে যে প্রকল্প সাধারণ মানুষের মধ্যে দারুন সাড়া জাগিয়েছিল, আজ কার্যত সেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা পাচ্ছে এমন মানুষের সংখ্যা শহর কলকাতায় অন্তত ভীষণই কম।
প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলার ছবি এবং কীর্তনের অপূর্ব মিশেল ধরা পড়েছে এই সিরিজে।
সংসার, ভালবাসা, সঙ্গে থাকা বা থাকার ইচ্ছে, সবটা নিয়ে একটা অত্যন্ত বাস্তববাদী সিনেমা।
ছোটু আর বান্টির স্বপ্ন কি ওদের গিন স্কিন পূরণ করতে পারবে?
মহামারীর সুযোগে কিছু কোভিড কিচেনের দৃষ্টিকটু রমরমা ব্যবসা।
এ দেওয়ালে বুদ্ধ, ও দেওয়ালে মমতা, ব্যঙ্গচিত্র থেকে ছড়া, হারিয়ে যাচ্ছে ভোটের আগের দেওয়াল লিখন।
মহারাষ্ট্রের ন্যানেঘাট ঝর্নার জল নিচে পড়ার বদলে আপাতদৃষ্টিতে রহস্যময়ভাবে উপরের দিকে উঠে যায়।