যে বছরটা গোটা দুনিয়ার কাটল অনলাইন পড়াশোনা করে সেই বছরেই পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন বাংলার এমন এক শিক্ষক যাঁর ছাত্রছাত্রীদের কাছে পড়াশোনাই প্রায় এক বিলাসিতা। দু টাকা টিউশন ফি নিয়ে সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অংশের ছেলেমেয়েদের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছেন বর্ধমানের আউশগ্রামের বাসিন্দা 75 বছর বয়সী সুজিত চট্টোপাধ্যায়। দীর্ঘ 16 বছর এই কর্মযজ্ঞ চালানোরই স্বীকৃতি তাঁর 2021 সালের পদ্মশ্রী সম্মান।
সুজিত চট্টোপাধ্যায় ছিলেন রামনগর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, 2004 সালে অবসর নেওয়ার পর একদিন তাঁর তিন ছাত্রী তাঁর অনুরোধ জানায় পড়ানোর জন্য। এই অনুরোধে সাড়া দেন সুজিতবাবু। সেই থেকেই পথ চলছে ‘সদাই ফকিরের পাঠশালা’। বর্তমানে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় 350, এবং তারা অধিকাংশই আদিবাসী সম্প্রদায়ের। দীর্ঘ 17 বছরের নিরলস পরিশ্রম এবং এই অসামান্য উদ্যোগের জন্য তিনি এ বছর পদ্মশ্রী পাচ্ছেন। এই পাঠশালা বসে সুজিত বাবুর বাড়ির লম্বা বারান্দায়। সকাল সন্ধে দু’বেলাই চলে এই মানুষ গড়ার কারখানা। সকাল 6 টা থেকে সন্ধ্যা 6 টা অবধি চলে সদাই ফকিরের পাঠশালা। সুজিত বাবুর ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে প্রায় 80 শতাংশই মেয়ে। তিনি মনে করেন নারী শিক্ষার আরও প্রচার ও প্রসার প্রয়োজন।
কিন্তু সবার থেকে কোথায় আলাদা সুজিত বাবু? তিনি বিশ্বাস করেন বিনামূল্যে শিক্ষাপ্রদান সম্ভব নয়। তাই তিনি তাঁর ছাত্র ছাত্রীদের থেকে বছরে নেন মাত্র 2 টাকা। ওটাই তাঁর পারিশ্রমিক. যারা অর্থের অভাবে গৃহশিক্ষক রাখতে পারে না, তাদের সহায় হন সুজিত বাবু। তাঁর এই চেষ্টাকে ব্যর্থ হতে দেয় না তাঁর ছাত্র ছাত্রীরাও। পরীক্ষায় দারুন ফল করে তা উপহার দেয় তাদের গুরুমশাইকে।
সুজিত বাবু শুধুই দুঃস্থ ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষার ভার কাঁধে তুলে নিয়েছেন এমন নয়। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত বাচ্চাদের জন্যও অনুদান তুলে দেন নিয়মিত। বয়সকে তোয়াক্কা না করেই আজও ঝাঁপিয়ে পড়েন একের পর এক সামাজিক গঠনমূলক কাজে। তিনি স্বপ্ন দেখেন এই সমাজকে বদলে দেওয়ার।
সুজিতবাবু কদিন আগে ‘দ্য টেলিগ্রাফ এডুকেশন ফাউন্ডেশন’-এর পক্ষ থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর মতো শিক্ষক যে আমাদের রাজ্য তথা দেশে বর্তমান সময়ে আরও বেশি সংখ্যায় প্রয়োজন,তা বলাই বাহুল্য।
বিশ্ব জুড়ে হুহু করে ছড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স। কিন্তু কী এই রোগ, কী ভাবে হয়?
বাংলার সঙ্গীত জগৎ আপাতত ডিজিটাল কনসার্টময়।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব যেন মারণ উৎসব না হয়, তার চেষ্টা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদেরই করতে হবে।
মানুষ যাতে নিজেকে বাঁচাতে পারে, তার জন্য বাতাসে কতটা বিষ মিশছে, প্রতিনিয়ত তার হিসেব দেবে জলবায়ু ঘড
সুন্দরবনের একটি অতি সাধারণ মেয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেখানকার স্বাদ পৌঁছে দিচ্ছেন একা হাতে।
পুজো যখন সবার, উপহারও তো সবারই পাওয়ার কথা, নয় কী?