‘কখনও আমরা কোনও চরিত্রকে বেছে নিই, কখনও বা চরিত্রটিই আমাদের বেছে নেয়।' শেরশাহ চরিত্রে অভিনয় করার পর এমন কথাই জানিয়েছেন অভিনেতা সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে কার্গিল যুদ্ধের অন্যতম নায়ক ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার বায়োপিক, ‘শেরশাহ’। এবং ইতিমধ্যেই দর্শকদের মধ্যে দারুন সাড়া ফেলেছে এই ছবি।
এর আগেও এলওসি কার্গিল ছবিতে বিক্রম বাত্রার গল্প দেখানো হয়েছে, কিন্তু সংক্ষিপ্ত ভাবে, যেহেতু ছবিটি ছিল গোটা কার্গিল যুদ্ধের উপর। তবে সদ্য প্রকাশিত শেরশাহ ছবিটি সম্পূর্ণ ভাবে বিক্রম বাত্রাকে নিয়েই বানানো হয়েছে, তাই দৃশ্যে কার্গিল যুদ্ধের পাশাপাশি বাত্রার ব্যক্তিগত জীবন দেখানো হয়েছে। এই ছবিটি দীর্ঘ 5বছর ধরে তৈরি করা হয়েছে। এবং বিশাল বাত্রা, ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার ভাই নিজে সিদ্ধার্থকে বেছে নিয়েছিলেন তাঁর ভাইয়ের ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য।
আরও পড়ুন:সিনেমা: মিমি
সিনেমায় দেখা গিয়েছে বিক্রম বাত্রা কীভাবে ছোট থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন এবং নিজেকে সেই ভাবে তৈরি করেছিলেন। ডিম্পলের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব ও প্রেম দেখা যায় এই ছবিতে। বিক্রম বাত্রা বরাবরই একজন প্রাণখোলা, হাসিখুশি মানুষ ছিলেন। খুব খারাপ সময়েও তাঁর মুখে হাসি লেগে থাকত। প্রতিটা সম্পর্কের প্রতিই তিনি দারুন কমিটেড ছিলেন, তাই কার্গিল যুদ্ধে যাওয়ার আগে তিনি ডিম্পলকে শিখ মতে বিবাহ করে যান, এই আশ্বাস দেওয়ার জন্য যে, তিনি তাঁকেই ভালবাসেন এবং তাঁর সঙ্গেই বাকি জীবন কাটাতে চান। শুধু তাই নয়, তাঁর দায়িত্ববোধ যে কতটা প্রখর ছিল সেটাও এই ছবিতে ধরা পড়ে। বিক্রম বাত্রার সহকর্মী বংশী গুলিতে নিহত হন, তারপর তিনি ছুটিতে যখন বাড়ি ফেরেন তিনি তাঁর দেওয়া কথা মতোই বংশীর বাচ্চার ভবিষ্যতের জন্য ফিক্সড ডিপোজিটের ব্যবস্থা করেন। তিনি অত্যন্ত সহজে মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারতেন, এবং তাঁর ব্যবহার, কথার জন্য সকলেই তাঁকে ভালবাসত, পছন্দ করত। বাত্রার সাহস, অদম্য জেদের জন্য তাঁকে শের শাহ বলা হত। তাঁর নেতৃত্বেই কার্গিলের অন্যতম দুই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট 4875 এবং 5140 ভারত পুনুরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। শেষ সময় যখন তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে গেছেন এবং বুঝতে পারেন যে মৃত্যু আসন্ন, তখন তিনি সব কিছুকে ভুলে একা এগিয়ে যান শত্রুদের উদ্দেশ্যে এবং তাঁদের মারতে শুরু করেন। যতক্ষণ তাঁর দেহে প্রাণ ছিল, ততক্ষণ তিনি লড়াই চালিয়ে যান।
এই ছবিতে তাঁর বলা দু’টি ডায়লগ খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। প্রথমত, ‘এ ফৌজি লিভস বাই চান্স, লাভ বাই চয়েস অ্যান্ড কিলস বাই প্রফেশন’, দ্বিতীয়ত, ‘এক ফৌজি কী রুতবে সে বড়া কোই রুতবা নেহি হোতা, ওয়ার্দি কী শান সে বড়া কোই শান নেহি হোতি, আউর আপনে দেশ সে বড়া কোই ধর্ম নেহি হোতা।' সিনেমাটির বেশ কিছু জায়গা গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো।
শেরশাহের সব কটি গানই বেশ সুন্দর। এবং শেষ দৃশ্যে যখন ডিম্পল বাত্রার শেষকৃত্যের সময় দৌড়ে আসে তখন তা দর্শকের চোখে জল আনতে বাধ্য করবে।
যেমন অনবদ্য স্ক্রিপ্ট, তেমনই সুন্দর দৃশ্যায়ন। সুন্দরী কাশ্মীরের অপরূপ দৃশ্য এই ছবিতে ধরা পড়েছে। সিদ্ধার্থ মালহোত্রার কেরিয়ারে এই ছবিটি একটি মাইলস্টোন হয়ে থাকবে। দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন তিনি এই ছবিতে। ডিম্পলের ভূমিকায় থাকা কিয়ারা আডবাণীও দারুন, তাঁর চোখ মুখের অভিব্যক্তি অসাধারণ ছিল গোটা সিনেমায়। বিশেষত যখন সিদ্ধার্থ তাঁকে শিখ মতে বিবাহ করেন এবং শেষ দৃশ্যে তিনি শ্মশানে ছুটে আসেন, এই সময় দু’টিতে কিয়ারার অভিনয় দুর্ধর্ষ ছিল। সব থেকে বড় কথা এই ছবিতে প্রতিটি চরিত্রকে বাস্তবের চরিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে এত সুন্দর করে বাছা হয়েছে যে, বাস্তবের সঙ্গে অসম্ভব রকমের মিল পাওয়া গিয়েছে।
রেটিং: 4.8/5
বিশ্ব জুড়ে হুহু করে ছড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স। কিন্তু কী এই রোগ, কী ভাবে হয়?
অ্যাক্রোপলিস মলে চলছে কলকাতা স্ট্রিট ফুড ফেস্টিভ্যাল।
স্মরণকালের মধ্যে পূর্ব অ্যান্টার্কটিকায় গরম বাড়ছে নজিরবিহীনভাবে!
ওমিক্রন ছড়াচ্ছে, সতর্কতা কই?
বাংলা সিনেমার দর্শক সংখ্যা কী কমছে? নেপথ্যে কী কারণ?
পৃথিবীর থেকে প্রায় 930 কোটি আলোকবর্ষ দূরে সম্প্রতি প্রাচীনতম ছায়াপথ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা।