×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • করোনা, রাজনীতি, ওটিটি: তিনের গেরোয় বাংলা ছবি

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 18-11-2021

    প্রতীকী ছবি

    করোনা (Covid19) আতঙ্ক কাটিয়ে ধীরে ধীরে সব কিছুই ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে আবারও। রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল (Cinema Hall), ইত্যাদি সবই খুলে গিয়েছে 70 শতাংশ লোক নিয়ে। কিন্তু রেস্তোরাঁ, শপিং মল, ইত্যাদিতে মানুষ যেমন যাচ্ছে সিনেমা হলে কি তেমন লোক হচ্ছে? বিশেষত বাংলা ছবিতে (Bengali Movie)? 

     

    পুজোর পর থেকে বেশ কটি বাংলা সিনেমা রিলিজ করলেও দেব অভিনীত গোলন্দাজ (Golondaaj) ছাড়া বাকিগুলো নিয়ে তেমন চর্চা জনমানসে খুব একটা দেখা গেল না। কারণটা কী? কেবলই করোনা আতঙ্ক নাকি অন্য কিছু? 

     

    চিত্র পরিচালক শৈবাল মিত্র 4thpillarwethepeopleকে জানান, "করোনা আতঙ্ক তো আছেই। পাশাপাশি মানুষের পছন্দও দায়ী। সিনেমা হলে লোক হচ্ছে। কিন্তু বাংলা সিনেমার থেকে বরাবর যেমন হয়ে আসছে এবারও তাই হচ্ছে, হিন্দি এবং ইংরেজি ছবিই মানুষ বেশি করে দেখতে যাচ্ছেন। ফলে বাংলা ছবিগুলো চলছে না। মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে তো তেমন বাণিজ্যিক ছবি না হলে বাংলা ছবি এক সপ্তাহের বেশি রাখেই না। ছবি চললেও, লোক হলেও মাল্টিপ্লেক্সের মালিকরা বলে দেন ব্যবসা হচ্ছে না, ছবি রাখব না। এর দোষ খানিকটা দর্শকদেরও।' ঠিকই তো যাদের জন্য ছবি বানানো হচ্ছে তারাই যদি না দেখে তাহলে কাদের জন্য ছবি বানানো হবে? কাদের জন্যই বা সিনেমা হলে সেই ছবি রাখা হবে!

     

    আরও পড়ুন:সিনেমা: অল্প হলেও সত্যি

     

     শৈবাল মিত্রের মন্তব্য, "দক্ষিণ ভারতে ল্যাঙ্গুয়েজ লয়্যালটি বলে একটা জিনিস আছে, যেটা আমাদের মধ্যে নেই। আমরা নিজেদের মাতৃভাষায় বানানো ছবির বদলে অন্য ভাষার ছবি দেখতে বেশি পছন্দ করি। বাংলা সিনেমা যে দর্শকরা দেখেন তাঁরা যদি আগামী দিনে আরও বাংলা ছবি দেখতে চান, এই ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে রাখতে চান তা হলে তাঁদের বাংলা সিনেমা দেখতে আসতে হবে, শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেই হবে না। আসলে আমরা ভুলে যাই, বাংলা ছবি আর হিন্দি ছবির বিনোদন তো এক নয়। আর এক হবেও বা কী করে? দুটোর বাজেটের কত ফারাক থাকে বলুন তো! ফলে তুলনা করলে মুশকিল! আর দিওয়ালির সময় তো আমার ছবি (তখন কুয়াশা ছিল) চলতেই দিল না, তারপরের সপ্তাহে স্লট পেলাম। তখন শুধুই "সূর্যবংশী' সব বড় বড় হলে। এখনও তাই।'

     

    শৈবাল মিত্রের কথায় হিন্দি এবং বাংলা ছবি নিয়ে দর্শক ও সিনেমা হলের মালিকদের এক চাপা বৈষম্য আছে তা স্পষ্ট ধরা পড়ে। যদিও এই কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু শুধুই হিন্দি ও বাংলা ছবির মধ্যে রেষারেষি, করোনা আতঙ্ক এই দুই কারণে বাংলা সিনেমা দেখতে দর্শকরা তেমন হলমুখী হচ্ছেন না? নাকি আরও কোনও কারণ দায়ী?

     

    আরও পড়ুন:সিঙ্গল স্ক্রিন হলের স্বাভাবিক মৃত্যু

     

    চিত্র পরিচালক শৈবাল ব্যানার্জি জানান, "ওটিটিতে মানুষ ঘরে বসে বিনোদন পেয়ে যাচ্ছে তা হলে আর কষ্ট করে কেন হলে আসবে সিনেমা দেখতে? একান্ত যদি তেমন বিনোদনমূলক, আকর্ষণীয় কিছু না হয় যা ফোনে দেখে মজা নেই, তখনই মানুষ হলমুখী হবে। কিন্তু এখন সেই উদ্যোগ কই?' এই বিষয়ে সহমত শৈবাল মিত্রও। তাঁর কথায়, "ঠিকই, এখন সেই ছবিই বানানো হচ্ছে যা মানুষ চাইছে। আর ওটিটি তো সিনেমার কাছে মৃত্যুবাণ।'

     

    এক দিকে করোনার ভয়, অন্য দিকে আছে ওটিটির জুজু, আর আছে অলক্ষ্যে থাকা রাজনীতি এবং রেষারেষি। ফলে তিনের চাপে বাংলা ছবি। নতুন নতুন ছবি রিলিজ করলে দর্শক সেই অর্থে টানতে পারছে না। দর্শকরা যেন হল বিমুখ। কী করলে এই খরা কাটবে কেউ জানে না। কিন্তু এমনটা বহুদিন চললে তা যে বাংলা ছবি এবং ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুব একটা ভাল বিষয় হবে না এ জানা কথা। 

     

    এখন তো ঘরে ঘরে বিনোদন পৌঁছে গিয়েছে, টিভির পাশাপাশি আছে ওটিটি। মাসিক টাকা দিয়ে সাবস্ক্রিপশন নিলেই হাতের মুঠোয় নিজের পছন্দমত বিনোদন হাজির। কিন্তু লক্ষ্য করেছেন কি, ওটিটিতে বাংলা ছবি কটা রিলিজ হয়? দর্শকরা সাধারণ ভাবে এটা লক্ষ্যই করেন না। একই সঙ্গে এর ফলে যে একটা গোটা ব্যবসা, বহু মানুষের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে তা বোধহয় খুব স্পষ্ট ভাবে আমাদের কারও কাছেই ধরা দিচ্ছে না। 

     

    তবে চিত্র পরিচালক সুব্রত সেন একদম অন্য কথা, আশার কথা শোনালেন। তাঁর মন্তব্য, "করোনা পরবর্তী সময়ে সিনেমা হলে দর্শক সংখ্যা বাড়ছে।" তিনি আশাবাদী, বাংলা সিনেমা আবার বহু মানুষের মনোরঞ্জন করবে। বাংলা সিনেমা দেখতে মানুষ আবার হলে ভিড় জমাবেন। কারণ তিনি মনে করেন, "এই দেড় বছর ঘরে বসে সিনেমা দেখে মানুষ বিরক্ত হয়ে গিয়েছেন। এখন সিনেমা হল যেন তাঁদের কাছে এক টুকরো স্বাদ বদল।' ফলে নেগেটিভ না ভেবে পসিটিভ থাকাই ভাল, তাঁর মত অনুযায়ী।


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    করোনা আবহে ভার্চুয়াল পিকনিকেই ভরসা রাখছে স্কুলগুলি

    পাতাখোর হলে যেন চুরির অপরাধ আর ধর্তব্য নয়!

    ক্রমাগত ভাঙনের ফলে ফুলহার নদ এবং গঙ্গার ব্যবধান এক কিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে

    বামেদের প্রার্থী তালিকায় তরুণ এবং যুবরা কি পারবেন মানুষের মন জয় করতে

    পরবর্তীকালে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। কিন্তু যাওয়ার সময় পুলিশের সামনেই হুমকি দিয়ে যায়

    এনজাইমের ঘাটতির ফলে পুরুষ হয়ে যায় মহিলা।

    করোনা, রাজনীতি, ওটিটি: তিনের গেরোয় বাংলা ছবি-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested