এ কথা বলা ঠিক হবে না যে, পুজো সংখ্যা না বেরোলে বাংলা সাহিত্যের কোনও ক্ষতি হবে। শুধু বাংলা নয়, বিশ্বের যেকোনও ভাষার সাহিত্যেরই লাভ বা ক্ষতি নেই বলেই আমার বিশ্বাস। লাভ-ক্ষতি অনেকাংশে নির্ভরশীল সংস্কৃতি, সচেতনতা, বোধ এবং অন্বেষণের উপর। এগুলির সমন্বয়েই সাহিত্যের প্রসার, সভ্যতার গতিময়তা। সাহিত্য শুধু পুজো সংখ্যার উপর নির্ভর করে না, তা অনেকেই জানেন। সাহিত্য সৃষ্টি হতে পারে যে কোনও পরিস্থিতিতে, যেকোনও সময়। সেটাই তার স্বাভাবিক প্রকৃতি।
বাঙালি চিরকালই মননশীল বলেই পরিচিত বিশ্বের দরবারে। দুর্গাপুজো, ইদ বা অন্য কোনও ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে সাহিত্য সৃষ্টি এবং প্রকাশের এমন নজির বিভাজিত দুই বঙ্গদেশ ছাড়া অন্য কোনও প্রদেশে নেই বললেই চলে। দুর্গাপুজোর সঙ্গে শারদীয়া বা পূজা সংখ্যা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে গিয়েছে সম্ভবত ১২৭৯ বঙ্গাব্দ থেকে। কেশবচন্দ্র সেন প্রতিষ্ঠিত ও সম্পাদিত সাপ্তাহিক সংবাদপত্র ‘সুলভ সমাচার’ ইংরেজি ১৮৭২-এ ‘ছুটির সুলভ’ নামে প্রথম শারদীয় সংখ্যা প্রকাশ করে।
তখনকার পাঠক পরিসর আর এখনকার পাঠক পরিসর ভিন্ন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না । একটি সংবাদপত্রের সমীক্ষা অনুযায়ী, শুধু দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বে বাংলা ভাষায় (ম্যাগাজিন ফরম্যাটে বা ই-ফরম্যাটে) প্রকাশিত পত্রপত্রিকার সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। এদের মধ্যে কিছু বাণিজ্যিক, কিছু অবাণিজ্যিক, কিছু ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রকাশিত।
'ভার্চুয়াল' আর 'একচুয়াল' যেমন 'ইকুয়াল' নয়, তেমনই সংখ্যা কখনওই সাহিত্যের মাপকাঠি হতে পারে না। বাংলার সমাজ-রাজনীতি-মূল্যবোধ-মনন যে দিকে এগোচ্ছে তা ভাববার এবং বিবেচনার বিষয়। তবে এখনও বহু সংখ্যক মানুষ উৎসবকে উপলক্ষ করে অক্ষর এবং ভাষার সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছেন বা জুড়ে থাকতে চাইছেন। এতে অন্বেষণের মৃদু আলো যদি আরও কিছুদিন টের পাওয়া যায়, মন্দ কী!
বাকিটা তো বিশ্বখ্যাত বাঙালি দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখাতেই আছে-
কে লইবে মোর কার্য, কহে সন্ধ্যারবি।
শুনিয়া জগৎ রহে নিরুত্তর ছবি।
মাটির প্রদীপ ছিল, সে কহিল, স্বামী,
আমার যেটুকু সাধ্য করিব তা আমি।
লোকসভার পর ১১ ডিসেম্বর রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(সিএবি)
এ যেন এক অনিবার্য পরিহাস। চলছে তো চলছেই। এর নাম ‘গাফিলতি-ভাইরাস’, যা করোনার থেকে আরও আরও বেশি ভয়াবহ।
ও গানওয়ালা আর একটা গান গাও, আমার আর কোথাও যাবার নেই।
যা দেখা যাচ্ছে, খাবার ‘বেচা-কেনা-খাওয়া’ই এখন মানুষের সব থেকে বড় দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘বাঙালি-ভুলানো ছড়া’ই তাহলে এবার বাংলার মসনদের চাবিকাঠি?
তাঁর সাহিত্য সাধনায় তিনি খুঁজেছেন অখণ্ড মনুষ্যত্বকে এবং প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ককে