×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • স্বাধীনতার সৈনিক অসমের কনকলতা এবং ভোগেশ্বরী

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 13-08-2021

    কনকলতা এবং ভোগেশ্বরী

    দেশের পূর্বভাগের দু’টি জায়গা, একটা মেদিনীপুর, আর একটা অসম। মাত্র 9দিন আগে পরের ঘটনা, দুই জায়গায় দু’জন নারী এগিয়ে চলেছেন, হাতে জাতীয় পতাকা, গলায় বন্দেমাতরম ধ্বনি। দেশপ্রেমের জন্য দু’জনেরই কপালে জুটল গুলি। দু’জনেই লুটিয়ে পড়লেন মাটিতে, হাতে সেই জাতীয় পতাকা। একজনের বয়স 72, আরেকজন 17কিন্তু কোনও তফাৎ তাঁদের মধ্যে ছিল না। এঁরা হলেন মাতঙ্গিনী হাজরা এবং কনকলতা বড়ুয়া।

     

    মাতঙ্গিনী হাজরার কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু 17 বছরের কনকলতা বড়ুয়া হলেন এক স্বল্প পরিচিতা স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা অসমের প্রথম নারী শহীদ। সেখানকার অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্ট ফেডারেশনের নেত্রী ছিলেন তিনি। মৃত্যু বাহিনীতে যোগ দেন খুব অল্প বয়সে। 20সেপ্টেম্বর 1942সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় কিছু নিরস্ত্র নাগরিককে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে মিছিল করে রওনা দেন। লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশদের পতাকা নামিয়ে সেখানে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা। থানার কাছাকাছি তাঁদের মিছিল এসে পৌঁছলে পুলিশ এগোতে বারণ করে, কিন্তু তবুও তাঁরা সেই নিষেধ উপেক্ষা করে এগোতে থাকেন। পুলিশ-ইন-চার্জ রেবতী মোহন সোমের আদেশে পুলিশ তখন গুলি চালাতে শুরু করে। সিপাই বগাই কছাড়ীর গুলি এসে লাগে সামনের সারিতে থাকা কনকলতার বুকে। তাঁর হাতে তখন ধরা জাতীয় পতাকা। বারণ না শোনায় তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মাত্র সতেরো বছর বয়সে দেশের জন্য প্রাণ দেন তিনি। 

     

    আরও পড়ুন:স্বাধীনতার সৈনিক অগ্নিকন্যা দুই বোন কল্যাণী ও বীণা দাস

     

    অন্যদিকে গৃহবধূরাও যে ব্রিটিশদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিল এবং অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল, তার অন্যতম উদাহরণ হলেন অসমেরই আর এক অগ্নিকন্যা ভোগেশ্বরী ফুকাননী। আট সন্তানের মা ভোগেশ্বরী ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় নানান প্রতিবাদ মিছিল ইত্যাদিতে যোগ দেন। 1942 সালে ব্রিটিশ পুলিশ অসমের বেহরমপুরের কংগ্রেস অফিস দখল করে নেয়। তখন স্থানীয় কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে ভোগেশ্বরী ও তাঁর পুত্ররা সেই অফিস পুনরুদ্ধারের কাজে যোগ দেন। কিন্তু পরবর্তী সময় ক্যাপ্টেন ফিঞ্চ (মতান্তরে ফিনিস) বিপুল সৈন্য নিয়ে আবার ফিরে আসেন, তখন কংগ্রেসীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ শুরু হয়। ক্যাপ্টেন ফিঞ্চ রত্নমালা নামক এক স্বাধীনতা সংগ্রামীকে আঘাত করেন এবং তিনি তৎক্ষণাৎ মাটিতে পড়ে যান। ষাট বছর বয়সী ভোগেশ্বরী ফুকাননী তখন রেগে গিয়ে তাঁর হাতে থাকা পতাকার লাঠি দিয়ে সজোরে ক্যাপ্টেনের কপালে আঘাত হানেন। এরপর ক্যাপ্টেন তাঁর কপালে গুলি করে তাঁকে হত্যা করেন। 

     

    দেশকে স্বাধীন দেখার জেদ যখন চেপে বসে তখন বয়স, সংসার কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না আর। সেই কথা যেন অসমের বিস্মৃতপ্রায় এই দুই অগ্নিকন্যার লড়াই আরও একবার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়।

     

     


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    ভাষণের দিন শেষ, রাজনৈতিক প্যারোডিই এখন প্রচারের নতুন ভাষা

    এই 2020 সালেও সমাজের চোখে নব বিবাহিত বরের মৃত্যু মানেই কনে অপয়া রাক্ষসী

    কার্গিল যুদ্ধের নায়ক বিক্রম বাত্রার জীবনের নানান গল্প তুলে ধরেছে শের শাহ।

    বড় বড় কথা আর অজস্র কন্যাশ্রী সত্ত্বেও মেয়েরাই মেয়েদের বড় শত্রু, বারবার প্রমাণিত হচ্ছে এই বাংলায়

    রসিকতা নয়। কলকারখানা বন্ধ, আকাশ ও সড়কপথে যান চলাচল অনেক কম। সব মিলিয়ে সারা পৃথিবীতেই দূষণের মাত্রা

    75 বছর বয়সী শিক্ষক সুজিত চট্টোপাধ্যায় পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন

    স্বাধীনতার সৈনিক অসমের কনকলতা এবং ভোগেশ্বরী-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested