অপরাজিতার বন্ধু
রেটিং: 4.5/5
বাড়ির বয়স্করা বলেন, জীবনে সত্যিকারের বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। অনেক সময় আমরা যাকে সারাজীবনের বন্ধু বলে মনে করি, পথ চলতে গিয়ে তাদের আসল রূপ ধরা পড়ে। বন্ধুত্বের হাত ছেড়ে যায়, দূরত্ব বাড়তে থাকে ক্রমশ। গত সাড়ে তিন মাস যাবৎ বাড়িতে বন্দি থাকায় যেমন খারাপ চিন্তা, নেতিবাচক ধারণা বাড়ছে, তেমনই আমরা সময় পাচ্ছি নিজেদের চেনার, জানার। আত্মোপলব্ধি হচ্ছে যেন আমাদের। ঠিক যেমনটা "বন্ধু’ শর্ট ফিল্মের রমার হয়েছে। অন্ধকারে থেকেও আলোর সন্ধান পেল সে তার দুই বন্ধুর জন্য।
রমা (অপরাজিতা আঢ্য) একজন গৃহবধূ, ছোটবেলায় সে দারুণ নাচ করত, গাইত। কিন্তু এখন সংসারের জাঁতাকলে সবই অতীত। ওর বাড়িতেই কাজ করে ঝর্না (দীপান্বিতা নাথ)। করোনার ভয়ে রমার বর বারণ করে দিয়েছে, যেন ঝর্না এই সময় না আসে। কিন্তু সে আসে, রোজ একবার করে দেখা করে যায় তার আদরের বৌদির সঙ্গে, যাকে সে মায়ের মতো ভালবাসে। রমাও তাকে সন্তানের মতো স্নেহ করে। ওদের কথোপকথনে ধরা পরে জীবনের নানান গল্প। রমা নিঃসন্তান, সে পুতুল আঁকড়ে সেই শোক ভুলে থাকে। তার বর নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে, পছন্দ করে না আর রমাকে, ওর বারবার ফোন করাকে। বিরক্ত হয় তার প্রেমিকাও। শাশুড়ি রমাকে পছন্দ করে আনলেও সন্তান না হওয়ায় সে এখন তার চক্ষুশূল। অন্যদিকে ঝর্নার স্বামীও রোজ মদ্যপান করে ওকে মারধর করে। দেখা যায় সমাজের দুই স্তরের দুই নারী আসলে একই পথের পথিক।
ঝর্না কথায় কথায় জানায় রমার এক স্কুলের বন্ধু'র ( মানসী সিনহা) কথা, যে বর্তমানে একজন উকিল। সে তার বন্ধুর এই দৈন্যদশায় ক্ষুব্ধ। রমার সেই বন্ধু ওকে বলেছিল, সে যেন বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসে, ডিভোর্স দেয়। কিন্তু সে কথায় রমা কর্ণপাত করেনি। ঝর্না ওকে বুদ্ধি দেয়, সে যেন অন্তত নিজের কথা এবার ভাবে, রোজগার করে নিজের পায়ে দাঁড়ায়।
অবশেষে লক ডাউনের ফলে সারাদিন গৃহবন্দি থেকে সমস্তটা ভাবে রমা। বোঝে শুধুমাত্র লোকলজ্জার কথা ভেবে নিজেকে কীভাবে সে অপমান করেছে, অসম্মান করেছে। তাই সিদ্ধান্ত নেয়, সে তার বন্ধু'র ডাকে সাড়া দেবে। বরকে যেহেতু ফোন করা নিষেধ, তাই ভিডিও করে তাতে সমস্ত কথা জানিয়ে সে বাড়ি ছেড়ে নতুন জীবনের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ে। গোটা ছবিতে দেখা গিয়েছে এক নারীর ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। একই সঙ্গে ধরা পড়েছে কাজের মেয়ের আর গৃহকর্ত্রীর এক সুন্দর সম্পর্ক। সারা পাড়ার গল্প উঠে এসেছে তাদের কথায়। অতনু হাজরা তাঁর এই সিনেমায় বুঝিয়েছেন প্রকৃত বন্ধু ও ভালবাসার অর্থ।
অপরাজিতা আঢ্য, মানসী সিনহা দু’জনেই যে দাপুটে অভিনেত্রী, তার ছাপ আবারও দেখা যায় এই শর্ট ফিল্মে। তারই মধ্যে নজর কেড়েছেন দীপান্বিতা। ভীষণ সাবলীল অভিনয় করেছেন বাড়ির পরিচারিকার ভূমিকায়। সুবীর কুমার বিশ্বাসের এডিটিং যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে। কারণ গোটা অভিনয়টাই যে যার বাড়ি থেকে করেছেল, অথচ শর্ট ফিল্মটি দেখে তা বোঝার উপায় নেই। সিনেমাটিতে দুটি রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহার করা হয়েছে।
অপরাজিতা আঢ্য অভিনীত, অতনু বিশ্বাসের ‘বন্ধু’ দর্শকের চোখে জল এনে এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরবে তাদের সামনে।
রিচা শুক্লার শর্ট ফিল্ম রিসেশন মানুষের মনের একটি দিক তুলে ধরেছে।
মুঠোফোন বা কম্পিউটারে কল্পনা-রং-রেখা ফুটিয়ে তোলার পোশাকি নাম
নতুন প্রকাশিত ছবি ‘অল্প হলেও সত্যি’ কতটা দাগ কাটল দর্শকদের মনে?
হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল, শোনার কেউ নেই?
পথ কুকুরদের জন্য শ্রীলেখার Pawsome Date
বরাবর যে বর্ণবৈষম্য চলে আসছে তার ছাপ করোনা সংক্রমণের হারেও পড়েছে এবং ফল হিসেবে প্রাণ হারিয়েছেন বহু