4 সেপ্টেম্বর 2018 বিকেল 4.45 নাগাদ আমার শৈশব আর কৈশোরের যোগসূত্র ভেঙে পড়ে। একইসঙ্গে ছিন্ন হয়ে যায় বেহালা, বজবজ, মহেশতলা সহ দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সঙ্গে খাস কলকাতার যোগাযোগের প্রধান সূত্রটি। মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ায় গত বছর দু’য়েক প্রায় নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় এইসব এলাকার নিত্যযাত্রীদের। হাইড রোডের ধুলো, খারাপ রাস্তা, যানজটে দীর্ঘ সময় কেটে যেত গন্তব্যে পৌঁছতে। কিন্তু আবার এই এক সপ্তাহ ধরে যেন বেহালা তার চেনা ছন্দ, চেনা গতি ফিরে পেতে শুরু করেছে।
মাঝেরহাট ব্রিজের একদিকে আমাদের স্কুলের জুনিয়র সেকশনের বিল্ডিং, আর একদিকে হাই স্কুল। অতএব, একদম ছোট থেকেই এই ব্রিজ আমার জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এখানেই প্রথম দেখা ব্রিজের উপর দিয়ে ব্যস্ত গাড়ির যাতায়াত আর তার নিচ থেকে ট্রেনের আনাগোনা। সেই ব্রিজ ভেঙে পড়ার সঙ্গে অনেক স্মৃতি যেন ভেঙে গিয়েছিল। চেনা পথ বদলে গিয়েছিল নিমেষে। পাঁচ মিনিটের রাস্তা যেতে লাগত পনের-কুড়ি মিনিট। তার সঙ্গে দূষণ বাড়ছিল পাল্লা দিয়ে। গ্রীষ্মকালেও ধুলোর কারণে মনে হত যেন কুয়াশার আস্তরণ ছেয়ে আছে। অবশেষে সেই সমস্ত যন্ত্রণা থেকে যেন মুক্তি পাওয়া গেল। পুরনোকে ফিরে পাওয়া গেল নতুন রূপে।
1961 সালে মাঝেরহাট ব্রিজের কাজ শুরু হয়, এবং তা নির্ধারিত সময়ের আগেই জনসাধারণের জন্য খুলে যায় 1964 সালে। ‘জয় হিন্দ ব্রিজ’ জনসাধারণের জন্য খুলল 3 ডিসেম্বর 2020। সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঠিক 2 বছর 2 মাস পর। বর্তমানে ব্রিজটিতে চারটি লেন আছে। এবং মাঝে রয়েছে বেশ উঁচু একটি ডিভাইডার। তাকে সাজানো হয়েছে আলো দিয়ে।
নেতাজির আসন্ন 125 তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই ব্রিজের নতুন নামকরণ হয়েছে ‘জয় হিন্দ ব্রিজ’। মাঝেরহাট ব্রিজ নতুন নাম পেলেও আপামর বেহালাবাসীর কাছে সে ‘মাঝেরহাট’ নামেই চিরকাল পরিচিত থাকবে। দৈর্ঘ্যে বা সাজসজ্জায় নতুন জয় হিন্দ পুরনো মাঝেরহাট ব্রিজকে ছাপিয়ে গেলেও বদলাতে পারেনি বেহালার চেনা ছন্দকে। নতুন ব্রিজ উদ্বোধন হওয়া এবং গাড়ি চলাচল শুরু হওয়া মাত্রই তারাতলার বহু চেনা যানজট ফিরে এসেছে। হারিয়ে গিয়েছে দূষণের কারণে উড়তে থাকা ধুলোর কুণ্ডলী। এই ব্রিজে সাইকেল বা ধীর গতির যান চলাচলও বন্ধ। ব্রিজের দুই প্রান্ত থেকে হেঁটেও তাতে ওঠা নিষিদ্ধ। তবে রেললাইন পার হওয়ার জন্য মাঝের একটা অংশে ফুটপাথ তৈরি হচ্ছে, সিঁড়ি দিয়ে নিচের রাস্তা থেকে সেই ফুটপাথে উঠতে হবে। ফুটপাথ বানানোর কাজ জোর গতিতে চলছে।
এই নতুন মাঝেরহাট ব্রিজ যেমন শহরের দুই অংশকে আবার যুক্ত করল, তেমনই যেন আরও একবার আমার জীবনকে সহজ করে তুলে শৈশব আর কৈশোরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দিল।
মা কি সবার ক্ষেত্রে এক হয়? নাকি তফাৎ থাকে কোথাও?
সব শাশুড়ি কি সমান হয়? ভাল মন্দ কি সকলের মধ্যেই থাকে না?
এই পরিমাণে ফার সিলের মৃত্যু পরিবেশবিদদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ক্রমাগত ভাঙনের ফলে ফুলহার নদ এবং গঙ্গার ব্যবধান এক কিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে
ওষুধ, খাবার, মাদক, মারণ বোমা সবই ডেলিভারি দিচ্ছে ড্রোন– এবার তাকে সামলাতে হবে!
পেশা ছেড়ে নেশাকে বেছে নিয়েছিলেন পৌষমী।