×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • মিশে যেতে চলেছে গঙ্গা আর ফুলহার

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 01-09-2021

    প্রতীকী ছবি

    মানুষকে উদ্বাস্তু করে ছাড়ছে নদী। এক প্রজন্ম আগে রাজনৈতিক কারণে ভিটেমাটি ছাড়া হয়ে যারা মালদায় এসে বসত গড়েছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ প্রাকৃতিক কারণে আজ আবার বাধ্য হচ্ছেন উদ্বাস্তু হতে। অমনই একজন মালদার বাসিন্দা তুষারকান্তি হাজরাতাঁর কথায়, ‘বাবার কাছে শুনেছিলাম সাতচল্লিশে ওপারের সব কিছু ছেড়ে ভারতে চলে এসেছিল আমাদের গোটা পরিবার। পরবর্তী সময়ে রামনগরের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যাই আমরা। আমার ওখানেই জন্ম, বড় হওয়া। কিন্তু ক্রমশ বুঝতে পারলাম যেভাবে এখানে নদীর ভাঙন চলছে কোনওদিন না আবার সব হারাতে হয়, তাই কোনও মতে জায়গা জমি বেচে কলকাতা চলে আসি এই বছর দু’য়েক হল। এই বৃদ্ধ বয়সে এসে বাবাকে আরও একবার নিজের জায়গা থেকে সরতে হল।' গলায় বিচ্ছেদ যন্ত্রণা স্পষ্ট ছিল তাঁর। কারণ? গঙ্গার ভাঙন। নদী গর্ভে সব হারানোর থেকে আগে থেকেই সব বেচে সরে আসা ভাল।

     

    ফুলহার নদ যেখানে গঙ্গায় এসে মিশেছে

     

    মালদায় গঙ্গার ভাঙনের অব্যাহতি নেই। সে বিরামহীন ভাবে পাড় ভেঙে চলেছে। তার গর্ভে একে একে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়ি, জায়গা, জমি, গ্রাম। চেষ্টা করেও আটকানো যাচ্ছে না কোনও ভাবে। তুষারবাবুর মতো বহু মানুষকেই তাঁদের বাড়ি, জমি সহ সর্বস্ব হারাতে হয়েছে। কিন্তু এরই মাঝে নতুন এক বিপদ চোখ রাঙাচ্ছে মালদার বাসিন্দাদের। 

     

    মহানন্দার শাখা নদ হল ফুলহার, যা বিহারের কিষাণগঞ্জের কাছে আলাদা হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মালদার ভূতনির কাছে গঙ্গার সঙ্গে মিশেছে। বর্তমানে গঙ্গার পাড় ভাঙার কারণে দুই নদীর দূরত্ব কমতে কমতে 1.2 কিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। এবং অনুমান করা হচ্ছে এভাবেই যদি গঙ্গার ভাঙন লীলা চলতে থেকে তাহলে আগামী 4-5 বছরের মধ্যে ফুলহার নদ গঙ্গায় মিশে যাবে। আর এখানেই লুকিয়ে আছে বিপদ। 

     

    আরও পড়ুন: তুষারের বদলে বৃষ্টি! এ কী অনাসৃষ্টি!

     

    গঙ্গার জল বহন ক্ষমতা 16 লাখ কিউসেক, আর ফুলহারের 4-5 লাখ কিউসেক। আর দু’টো নদীই বন্যাপ্রবণ। ফলে এই দু’টি নদী যদি মিশে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে বন্যার ঘটনা বাড়বে, বাড়বে ক্ষয় ক্ষতি এবং নদীর ক্ষমতা। এর ফলে এক লাখেরও বেশি মানুষ প্রভাবিত হতে পারেন। একেই এই অঞ্চলে নিয়মিত বন্যা হয়, সেখানে যদি দু’টি নদী মিশে যায়, তাহলে যে সেই বন্যার চেহারা আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধরবে, তা সহজেই অনুমেয়। 

     

    তাই বিপদের আশঙ্কা করেই সরকারি ভাবে বাঁধ মেরামতির চেষ্টা চলছে। দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজের অধ্যাপিকা নীলাঞ্জনা বিশ্বাস জানান, ‘এখানের নদীর স্রোত, জলের ক্ষমতা ইত্যাদি সবটা দেখেই বোঝা যাবে এই বাঁধ কতটা কাজ দেবে, বা আদৌ কাজ করবে কিনা। একেই এই অঞ্চলে নদী তার অবতল পাড় অর্থাৎ বাঁ দিকের পাড়কে ভেঙে চলেছে বহু বছর ধরে। এবং আগামীদিনেও এটা চলবে। বাঁধ নিয়ে সাময়িক ভাবে ভাঙন রোধ করা গেলেও তা যে দীর্ঘমেয়াদি হবে না, তা আগেও প্রমাণিত হয়েছে।' নীলাঞ্জনা বিশ্বাসের মতো স্থানীয় মানুষ সহ রাজ্যের আধিকারিক সকলেরই এ কথা জানা যে, যাই করা হোক এই অঞ্চলে কোনও ভাবেই দীর্ঘমেয়াদি প্রতিকার সম্ভব নয়, তবুও যতটা বিপদকে এভাবে ঠেকিয়ে রাখা যায় আর কী!

     


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    এক মহিলার রাজ্যেই অন্য মেয়েরাই নিরাপদ নয়, কারণ তিনি ধর্ষণের অজুহাত দিতে ব্যস্ত! 

    নগেন্দ্র প্রসাদের জীবনীর হাত ধরে দর্শক আবার হলমুখী।

    মন্দির মসজিদের মতো ঐতিহাসিক স্থাপত্যের গায়েও ধর্মের রং লাগানো হচ্ছে চিহ্ন দেখে।

    কলকাতা মেডিক্যালের ইন্টার্নরা জানিয়েছেন, প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মী N95 মাস্ক পাননি। হচ্ছে না স্বাস্থ্

    অনীক দত্তের অপরাজিত এবং সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।

    বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমারের খালবিলে থিকথিক করছে রাক্ষুসে সাকার মাছ

    মিশে যেতে চলেছে গঙ্গা আর ফুলহার-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested