"আমার আর 1 মিলিয়ন লাইক পাওয়া হল না।"
"মানে? কিসে 1 মিলিয়ন লাইক পাবি? কে দেবে?"
"টিকটকে"।
"এই না তুই ক'দিন আগেই "বয়কট চায়না" বলে রব তুলেছিলি। তা এই টিকটক কোথাকার অ্যাপ?"
বেশ কয়েকদিন ধরেই অনেকেই সরব হয়েছেন "বয়কট চায়না" ডাক দিয়ে, তাদের বক্তব্য চিনের যাবতীয় জিনিস ব্যবহার করা বাদ দিতে হবে, অথচ হাতে চিনা ফোন, আর সেই ফোনের প্রিয় অ্যাপটিও চিনা। সেই চিনা অ্যাপ দিয়েই সোশাল মিডিয়ায় যত আলাপ আলোচনা। আর এখন সেই প্রিয় অ্যাপ টিকটকের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল সরকার। আপাতত নেটিজেনরা এই নিয়ে দুই দলে বিভক্ত। কারও মতে ভালই হয়েছে, আর "মুজরা" দেখতে হবে না। চলছে মিমের বহর। অন্যদিকে কেউ বিনোদনের এই মাধ্যমটি হারিয়ে যথেষ্ট দুঃখিত। কিন্তু এতে কার কতটা লাভ? আর কারই বা ক্ষতি? কেনই বা এই পদক্ষেপ?
29 জুন ভারতীয় সরকার 59টি চিনা অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল, যার মধ্যে আছে অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটক, সঙ্গে জেন্ডার, শেয়ার ইট, ইউ সি ব্রাউজার, ক্লাব ফ্যাক্টরি, ক্যাম স্ক্যানারের মতো আরও বেশ কিছু বহুল ব্যবহৃত অ্যাপ রয়েছে। মিনিস্ট্রি অফ ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজির তরফে জানান হয়েছে ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, অ্যাপগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও চাইনিজ ফোন বা অন্যান্য জিনিসের উপর কেন জারি হল না নিষেধাজ্ঞা। উত্তরটা খুবই সহজ।
পেটিএম, স্ন্যাপডিল, ওলা, সুইগির মতো অ্যাপে আলিবাবা, শাওমি, টেন্সেন্টর মতো বড় বড় চাইনিজ কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে যা বন্ধ করতে গেলে ভারতীয় অর্থনীতিতেও তার প্রভাব পড়বে। ভারতের অর্থনীতির সঙ্গে চিনের বিনিয়োগ গভীরভাবে জড়িত। তা একদিনে বন্ধ করা সম্ভব না। ভারতের স্মার্টফোন মার্কেটের 80 শতাংশেরও বেশি চিনের দখলে। হঠাৎ করেই এই নির্ভরতা চলে যাবে না। অন্যদিকে চিনকে শিক্ষাও দিতে হবে। তার সহজ উপায় অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা। সাপও মরল অথচ লাঠিও ভাঙল না।
দ্রব্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে তা চিন নয় ভারতের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলবে কিন্তু অ্যাপ ব্যান করলে তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না, বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না ভারতীয় অর্থনীতি। কারণ ভারতে ইন্টারনেটের দাম অত্যন্ত কম, অথচ ক্রেতা বেশি। ভারতে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় 10 কোটি। অ্যাপে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে চিনকে জোর ধাক্কা দেওয়া যাবে বলেই বিশিষ্ট মহলের মত। চিনও এরপর বিনিয়োগ করতে গেলে ভাববে, কারণ বর্তমানে চিন ভারতের বহু স্টার্ট-আপ ব্যবসায় বিনিয়োগ করছে। এই পদক্ষেপের ফলে ভারতের বাজারে চিনের আগ্রাসন কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতের কাছে এই অ্যাপগুলোর সমস্ত বিকল্প অ্যাপ রয়েছে, ফলে জনগণের সমস্যা হবে না কিছুই।
যুদ্ধ আবহে, নিজের পিঠ বাঁচিয়ে, দেশের জনগণের সুরক্ষা এবং সুবিধার কথা মাথায় রেখেই এই 59টি চাইনিজ অ্যাপ ব্যান করা হয়। ভারতের ক্ষতি হবে না এতে বরং চাইনিজ অ্যাপের বাজার সংকুচিত হবে। সঙ্গে একটা ভয়ও থাকবে, আগামী দিনে ভারতকে দেখে অন্য দেশও যদি একই পথে হেঁটে এই চাইনিজ অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তবে চিনের সমস্যা আরও বাড়বে। এবং চিনের "ডিজিটাল সিল্ক রুটের" স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। তাই ভারতের এই পদক্ষেপ ছোট হলেও, তার ফল এবং ছাপ যে নিগূঢ় এবং দীর্ঘমেয়াদি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম হওয়ার দরুন দুই বোনেরই খুব ছোট বয়সে দেশপ্রেমের সঙ্গে পরিচয় ঘটে।
নিজেদেরই তৈরি করা সমস্যায় মানুষ এখন নিজেই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়ছে
মহাকাশ গবেষণায় যেন এক নতুন দিগন্ত খুলে দিল নাসার এই নতুন আবিষ্কার।
পুজো যখন সবার, উপহারও তো সবারই পাওয়ার কথা, নয় কী?
জয় শ্রীরাম বনাম জয় বাংলা ধর্মীয় সত্তার রাজনীতি বনাম ভাষা সত্তার রাজনীতি
আমাদের বদলের নেপথ্যে থাকে আমাদের চারপাশের মানুষ এবং পরিস্থিতি সেই কথাই মনে করাল এই ছবি।