বিশ্ব উষ্ণায়ন ছাড় দিল না পৃথিবীর সব থেকে উঁচু পর্বতটিকেও। এভারেস্টের বরফ গলছে দ্রুত হারে। এবং সেই গতি কতটা ভয়ঙ্কর তা বুঝিয়ে দিচ্ছে এতদিন ধরে এভারেস্টের বরফের মধ্যে জমে থাকা পর্বতারোহীদের মৃতদেহগুলি প্রকাশ্যে এসে।
হিমালয়ের হিমবাহগুলো শুধু যে দ্রুত হারে গলছে তাই নয়, সরু হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। এভারেস্টে ওঠার পথে যে খুম্বু হিমবাহ পেরিয়ে যেতে হয়, তার হ্রদ আকারে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বরফের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় 2 ডিগ্রি বেশি সেখানে। ফলে তা সহজেই গলে যাচ্ছে। কিন্তু বরফ গলা তো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তাহলে এতে এত চিন্তার কী আছে? আশুতোষ কলেজের পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক অরিজিৎ চ্যাটার্জি বলেন, ‘বরফ তো গলবেই, নইলে পাহাড়ি নদীগুলো জল পাবে কোথা থেকে? কিন্তু তার যে মাত্রায় গলা উচিত ছিল তার থেকে অনেক গুণ বেশিমাত্রায় বরফ গলে যাচ্ছে। শেষ 20-25 বছরে যা বরফ জমা ছিল হিমালয়ে, তার 25 শতাংশ গলে গিয়েছে। 2060 - 70 সালের মধ্যে অর্ধেক এবং 2100 সালের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ বরফ গলে যাবে বলে মনে করছে বিজ্ঞানীরা। উল্টে পাহাড়ে তুষারপাতের মাত্রা প্রায় এক চতুর্থাংশ কমে গিয়েছে।‘ এর ফলে কী ঘটতে পারে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘নদীগুলো যেমন গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, ইত্যাদি বন্যা ঘটাবে এক সময়। তারপর ক্রমশ পরিষ্কার জলের জোগানে ঘাটতি ঘটাতে থাকবে। এক সময় সেচ কাজ বা খাবার জন্য জল পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে এর ফলে। এছাড়া সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে, যা উপকূল অঞ্চলের জন্য চিন্তার কারণ।'
বরফ গলে আগামীদিনে কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আসতে চলেছে তা তো ভবিষ্যতই বলবে। কিন্তু বর্তমানে সমস্যায় পড়েছে নেপাল এবং চিন। এখন উত্তর গোলার্ধে শীতকাল চলছে, আর দু’মাস বাদেই বসন্ত আসবে, বরফ গলবে নতুন করে তখন সামনে আসতে থাকবে একের পর এক মৃতদেহ, যেমনটা শীত শুরু হওয়ার আগে হচ্ছিল। এর ফলে নেপালের পর্বতারোহী সংস্থাগুলো বিপদে পড়েছে।
এভারেস্টে উঠতে গিয়ে প্রায় 300 এরও বেশি পর্বতারোহী তাঁদের প্রাণ হারিয়েছেন, এখনও 100-র বেশিমৃতদেহ সেখানেই বরফে ঢাকা পড়ে আছে। আর বর্তমান সময়ে যে ভাবে বরফ গলছে সেগুলো সামনে বেরিয়ে আসছে। চিন তাও উদ্যোগ নিয়ে কিছু মৃতদেহ সরাতে সক্ষম হয়েছে, কিন্তু সমস্যায় পড়েছে নেপাল। এক একটি মৃতদেহ সরাতে প্রায় 30 থেকে 70 হাজার মার্কিন ডলার খরচ হতে পারে মনে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, অত উচ্চতা থেকে এই প্রক্রিয়া চালানো যেমন খরচসাপেক্ষ, তেমনই কষ্টসাধ্য। এরই সঙ্গে, বরফের স্তর কমে আসায় সাউথ কোল এবং খুম্বু হিমবাহের দিক থেকে সব থেকে বেশি মৃতদেহ বেরিয়ে আসছে। ইদানিংকালে তো এই মৃতদেহগুলো পর্বতারোহীদের কাছে এক একটি ল্যান্ডমার্ক হয়ে উঠেছে। এই বিষয়ে অধ্যাপক অরিজিৎ চ্যাটার্জি বলেন, ‘যে মৃতদেহগুলো এতদিন বরফে ঢাকা ছিল তা বর্তমানে প্রকাশ্যে এলে পচতে শুরু করবে, যা ট্রেকার্সদের পক্ষে ক্ষতিকারক। পরিবেশেরও ক্ষতি করবে।'
সবটা মিলিয়ে যে এক ভয়ঙ্কর পরিবেশ এবং অবস্থা তৈরি হয়ে আছে এভারেস্টে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একে তো তুষারপাতের তুলনায় বরফ গলার মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে চিন্তা বাড়াচ্ছে মৃত পর্বতারোহীদের দেহগুলো। এখন এটাই দেখার বিষয়, চিনের মতো নেপাল সরকারও কি মৃতদেহগুলো সরানোর ব্যাপারে তৎপর হবে, নাকি তাদের প্রকৃতির কোলেই রেখে আসা হবে চিরতরে, এতদিন যেমনটা ছিল। তবে সেই দৃশ্য যে পর্বতারোহীদের জন্য বিশেষ সুখকর বা আরমদায়ক নয় সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আমরা অনেক সময়ই আমাদের দায়িত্ব ভুলে যাই, কিন্তু কেউ যখন সেটা স্মরণ করিয়ে দেয়?
ক্যান্সার থেকে জীবনের নানান বাধা অতিক্রম করে প্রিয়াঙ্কা আজ সফল ব্যবসায়ী।
ভারতের শাস্ত্রীয় নৃত্য তথা সাংস্কৃতিক জগতে এক বিশাল শূন্যতা রচনা করে চলে গেলেন বিরজু মহারাজ।
ভয় দেখিয়ে অস্ত্রের নাচ দেখিয়ে রাম নবমী পালন
কলকাতা মেডিক্যালের ইন্টার্নরা জানিয়েছেন, প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মী N95 মাস্ক পাননি। হচ্ছে না স্বাস্থ্
হাত ধোওয়া বা স্যানিটাইজ করা উচিত, এই অভ্যেস থাকা অবশ্যই ভাল। কিন্তু অমূলক ভয় থাকা নয়।