জীবন এখন গোটাটাই মুঠোফোন বা ল্যাপটপ বন্দি। বাইরের ধুলো নেই, রোদে ঘোরা নেই, কিছুই নেই। বাচ্চারাও বিগত দশ মাস তাদের সহপাঠীদের দেখেনি। ক্লাস বলতে অনলাইনে পড়াশোনা, পরীক্ষা এবং পড়া দেওয়া। ক্লাসের মাঝে হইহই, গল্প, টিফিন পিরিয়ডে মাঠে খেলাধুলো কিছুই নেই এই বছর। গল্পের সেই ‘সেলফিশ জায়েন্ট’ এসে যেন কঠোর ভাবে বাচ্চাদের তাদের পছন্দের বাগানে প্রবেশ করতে মানা করে দিয়েছে। করোনাই যেন সেই সেলফিশ জায়েন্ট, যে আমাদের সব চেনা সমীকরণ পাল্টে দিয়েছে। একা করে দিয়েছে ভীষণ ভাবে। কিন্তু তার মাঝেও কিছু স্কুল নতুন ভাবনা নিয়ে আসছে, এই বন্দিদশার মাঝেও শিশুদের মুক্তির স্বাদ খানিকটা হলেও এনে দিতে সক্ষম হচ্ছে।
ডিসেম্বর মাস পড়ে গেছে, আর করোনার ভয়ে পিকনিক হবে না, তা কখনও হয়? তাই দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি স্কুল তাদের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য আয়োজন করে ফেলেছিল ভার্চুয়াল পিকনিক সেশন। ভাবছেন পিকনিক তাও ভার্চুয়াল, কী ভাবে সম্ভব! তাই তো? সম্ভব, টেকনোলজির যুগে দাঁড়িয়ে অসম্ভব প্রায় কিছুই নেই। 12 ডিসেম্বর এম পি বিড়লা হাইস্কুল আয়োজন করে এই ভার্চুয়াল পিকনিকের। ছাত্র ছাত্রীরা কেউ তাদের বাড়ির ছাদ, বা বারান্দা, ইত্যাদি থেকে যোগ দেয় সেই পিকনিকে। আড্ডা চলে, হয় গানের লড়াই, মেমরি গেম। শিক্ষক, শিক্ষিকারাও অংশ নেন এই খেলাগুলোতে। বাচ্চাদের কেউ স্যান্ডউইচ বানায়, কেউ বা সরবত। কেউ গিটারে ঝঙ্কার তোলে।
ক্লাস ফাইভের ছাত্র উজান গুপ্ত 4thPillars-কে জানাল, তার এই অভিনব পিকনিকের অভিজ্ঞতার কথা। সে বলল, ‘ভালই মজা হল। আমি স্যান্ডউইচ, মিক্সড ভেজিটেবল, কেক, ইত্যাদি নিয়ে বসেছিলাম। অনেক কিছু খেলাম। গানের লড়াই হল তাতে গান গাইলাম। গিটারও বাজিয়েছি। তবে বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে দৌড়তে, খেলতে পারলাম না। অনলাইনেই দেখলাম সবাইকে। আসল পিকনিকের থেকে একটু কম মজা হল।' উজানের সহপাঠী সম্পূর্ণা চক্রবর্তী আবার অন্য কথা শোনাল। সম্পূর্ণা জানাল, ‘আমি এর আগে কখনও স্কুল পিকনিকে যাইনি। এই প্রথম পিকনিকে অংশ নিলাম ভার্চুয়াল পিকনিক হল বলে। খুব মজা করেছি আমি বন্ধুদের সঙ্গে। আমি নিজের হাতে স্যান্ডউইচ বানিয়েছি, ম্যাম খুব প্রশংসা করেছিল ওটা দেখে। লেমনেডও বানিয়েছিলাম। আমরা, ম্যামেরা সবাই মিলে এক সঙ্গে গান গেয়েছিলাম। মেমরি গেমে অংশ নিয়েছিলাম যেমনটা আমরা ক্লাসে খেলতাম, তেমনই যেন। একটা নতুন অভিজ্ঞতা হল।'
শুধু এম পি বিড়লা হাইস্কুল নয়, একই ভাবনা ভেবেছে দক্ষিণ কলকাতার আর এক বেসরকারি স্কুল। সেই স্কুলের অঙ্ক শিক্ষিকা কস্তুরী দাস জানান, ‘বাচ্চারা এখন একদম বাড়িবন্দি। ওদের একটু আনন্দ দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন। সময়ের সঙ্গে আমাদেরও পাল্টাতে হবে তাল মিলিয়ে। শুধুই ভার্চুয়াল পিকনিক নয় আমরা চেষ্টা করছি ‘আন্ডার সান’ ক্লাস করাতে কয়েকটা, ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে তবে।' করোনা আমাদের যেমন এক দিকে বাড়িতে আটকে রেখেছে, তেমনই আর একদিকে তার জন্যই এত সুন্দর সব অভিনব ভাবনা দেখা যাচ্ছে চারপাশে, আর এই ভাবনাগুলোই যেন ভবিষ্যতের দিনগুলো কেমন আসতে চলছে তার একটা নিদর্শন রেখে যাচ্ছে আমাদের সামনে। সব মিলিয়ে শীতের মরশুমে বেশ কিছু স্কুল যে এই ভার্চুয়াল পিকনিকে মেতে উঠেছে তা বলাই যায়।
নতুন প্রকাশিত ছবি ‘অল্প হলেও সত্যি’ কতটা দাগ কাটল দর্শকদের মনে?
বর্তমান সময়ে যেমন বেড়েছে দাবানলের ঘটনা তেমনই বেড়েছে তার তীব্রতা। কিন্তু কেন?
শহরের আনাচ কানাচে খোঁজ পাওয়া যায় রমা সর্দারদের যাঁরা নিজের শর্তে বাঁচেন।
শাহিনবাগ, সিংঘু বা চেন্নাই, প্রতিরোধের সামনের সারির দখল এখন মহিলাদের হাতেই।
স্বামী ধর্ষণ করলেও সেটা ধর্ষণই কর্নাটক হাইকোর্টের এই রায় বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে নতুন ভাবনার দরজা খুলে দ
কলকাতা কেন্দ্রিক দক্ষিণবঙ্গ দিন দিন বাজ পড়ার হটস্পট হয়ে উঠছে।