ন্যাশনাল এমার্জেন্সি, মেডিক্যাল এমার্জেন্সি শুনেছেন। কিন্তু ক্লাইমেট এমার্জেন্সি (Climate Emergency)? অনেকেই নামটা না শুনলেও আগামী দিনে এটাই হতে চলেছে সকলের সব থেকে বেশি ভাবনার বিষয়। 13-18 সেপ্টেম্বরের সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গে, মূলত কলকাতায় একটা দিনও এমন গেছে, যেদিন বৃষ্টি হয়নি? না তো! একটানা অতি ভারী বৃষ্টিতে (Heavy Rainfall) বিরক্তি ধরে গেছে? এটাই হচ্ছে ক্লাইমেট এমার্জেন্সির একটা ছোট্ট পার্ট, ওই ট্রেলার আর কী! এই ছবিটা গোটা দেশ জুড়েই চলছে।
প্রথমে আগে জেনে নেওয়া যাক এই ক্লাইমেট এমার্জেন্সি জিনিসটা কী? ক্লাইমেট এমার্জেন্সি হচ্ছে এমন একটা পরিস্থিতি, যেখানে জলবায়ুর (Climate) কারণে মানব সভ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনকে অন্তত কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করা যেতে পারে, গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানো যেতে পারে, যা প্রকৃতির ক্ষতি করছে। ইংল্যান্ড প্রথমবারের জন্য ক্লাইমেট এমার্জেন্সি ঘোষণা করে। নিউজিল্যান্ডও গত বছর ক্লাইমেট এমার্জেন্সি ঘোষণা করে প্রতিজ্ঞা করেছে যে, 2025-এর মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাস উৎপাদন সম্পূর্ন বন্ধ করবে।
এবার আসা যাক আমাদের দেশ, ভারতের কথায়। আমাদের দেশের কৃষিকাজ মৌসুমী বায়ু এবং বৃষ্টির উপর ভীষণরকম নির্ভরশীল। এ কথা আমরা সকলেই স্কুলের বইতে পড়েছি। কিন্তু সেই বৃষ্টির ধরনই যদি এবার বদলে যায়? এবং এই বদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলা যায়?
আরও পড়ুন: জীবনের 9 বছর কেড়ে নিচ্ছে দূষণ!
13 সেপ্টেম্বর উড়িষ্যার আস্তরঙে মাত্র 24 ঘণ্টায় 530 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, গুজরাটের জুনাগড়ের বিসাবদরে মাত্র আট ঘণ্টায় 347 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বাংলায় তো একটা নিম্নচাপ সরলে আর একটা এসে হাজির হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটা জিনিস লক্ষ্য করেছেন কি, যতদিন বৃষ্টি হচ্ছে একরকম, বৃষ্টি থামলেই ভ্যাপসা একটা গরম পড়ছে? উত্তরবঙ্গে কখনও টানা বৃষ্টি হলে দক্ষিণবঙ্গ শুকনো গরমে হাঁসফাঁস করছে। নইলে একটানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে যাচ্ছে। বাদ নেই দিল্লি, মহারাষ্ট্র, বিহার কেউই! দিল্লিতে যেখানে বর্ষার চার মাসে 653 মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা, সেখানে সেপ্টেম্বরের 13 তারিখের মধ্যেই 1142 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অল্প সময়ে অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে।
আইপিসিসি (IPCC) যদিও তার রিপোর্টে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে, ক্লাইমেট এমার্জেন্সি আসন্ন, 2050-এর মধ্যে জলবায়ুতে বেশ বড়সড় একটা পরিবর্তন আসবে, পাল্লা দিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, অতি ভারী বৃষ্টি, বন্যা, খরা এগুলো বাড়বে। 2100 সালের মধ্যে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা 2 মিটারের বেশি বাড়বে, ডুবিয়ে দেবে বহু উপকূলীয় অঞ্চল। কিন্তু 2050-এর বহু আগেই যেন তা আমরা টের পাচ্ছি। ইতিমধ্যেই বহু ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ফলে এখন থেকেই যদি আমরা সচেতন না হই, গ্রিনহাউজ গ্যাস সহ যা যা আমাদের প্রকৃতির ক্ষতি করে, জলবায়ুতে পরিবর্তন আনতে পারে সেগুলো না কমাই, তাহলে বিপদ আসন্ন এবং তা সময়ের আগেই এসে দরজায় হাজির হবে।
সাহায্য করতে গিয়ে আগামীদিনের জন্য আরও বেশি বড় ক্ষতি করে আসছি না তো আমরা?
কলকাতার শরৎকাল, শারদোৎসব সবই বদলেছে, বদলেছে রেডিওতে মহালয়া শোনার অভ্যেস, তবে সবটা কি বদলে গেছে?
বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্রীড়াঙ্গনে যেটুকু ভারতের সাফল্য, তার পুরোটাই এ যাবৎ মেয়েদের।
ভূত চতুর্দশী নিয়ে উন্মাদনা আজ আর নেই, রমরমিয়ে বাড়ছে সাহেবেদের আদলে হ্যালোউইনের পার্টি।
ভোটের সময় ছাড়াও অন্যান্য সময় সরকার তৎপর হলে মানুষ বাঁচে।
দূষণ যে এত ভয়াবহ হতে পারে তা কে জানত!