অন্য সময় যে কাজ করতে আপনাকে নিদেনপক্ষে দুই থেকে তিনবার সরকারি অফিসে হাজিরা দিতে হয়, ভোটের সময় সেটা একবারেই করা সম্ভব হয়। তার জন্য আবার আপনাকে বেশি ছোটাছুটিও করতে হয় না। হাত বাড়ালেই তখন সব পাওয়া যায়। মজার না? আমার তো বেশ লাগল ব্যাপারটা।
আসন্ন ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হিট প্রকল্প হচ্ছে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প। তো ভাবলাম সরকার যখন ব্যবস্থা করেছে, তো সেটা নেওয়া যাক। নাগরিকের অধিকার ছাড়ব কেন? অতএব যেমন ভাবা তেমন কাজ। মায়ের নামেই ফর্ম তোলা হল। লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্মটা নিতে লেগেছিল পাক্কা সাড়ে তিন মিনিট। আজ্ঞে ঠিক পড়লেন, সাড়ে তিন মিনিট। রোদের মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইন দিয়ে মোটেই অপেক্ষা করতে হয়নি। অবশ্য এটা কোনও পরীক্ষার ফর্ম হলে কী হত, তা বলা মুশকিল!
ফর্ম নেওয়ার সময়ই বলে দেওয়া হয়েছিল কী কী ডকুমেন্টস লাগবে। ফিল-আপ করে ডকুমেন্টস সমেত জমা দেওয়ার দিন পৌঁছলাম। সেদিন তো আরও মজার। লাইনের বালাই ছিল না। স্রেফ যাও, ফর্ম জমা দাও, ছবি তোলো, আর হাতে গরম কার্ড নিয়ে বাড়ি এসো। একটা ঘরে একই কাজ একসঙ্গে চার পাঁচটা টেবিলে চলছে। অতএব ভিড় জমার কোনও প্রয়োজনীয়তাই নেই। সরকারি কাজ যে এত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেদিনের আগে আমার ধারণাই ছিল না।
স্বাস্থ্যসাথী তো হল। এরপর এল বিধবা ভাতা। ভাবলাম এটাও করানো যাক। কী ভাবছেন আমাকে সল্টলেক দৌড়তে হয়েছিল? আজ্ঞে না মশাই। তাহলে নিদেনপক্ষে কর্পোরেশন অফিস? না, তাও না। পাড়ার মধ্যে কাউন্সিলরের অফিসেই কাজ হয়ে গেছে, তাও মাত্র একদিনে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই। হ্যাঁ, সরকারি কাজ সম্ভব, আর এত তাড়াতাড়িই। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এটা বিশেষ একটা সময়েই সম্ভব।
সাধারণ নাগরিক হিসেবে এখানে আমার একটাই প্রশ্ন, ভোটের সময় যদি সব কাজ এত জলদি হতে পারে, বাকি সময়গুলোয় নয় কেন? ভোটের সময় যদি পাড়ার মধ্যে বা বাড়ির কাছাকাছিই সমস্ত কাজ করে নেওয়া যায়, তাহলে অন্য সময় হিল্লিদিল্লি দৌড়তে হয় কেন? এখান থেকেই প্রমাণিত, যে কাজ মূল কার্যালয়ে সম্ভব, সেই একই কাজ কাউন্সিলর অফিস বা কর্পোরেশন অফিস থেকেও সম্ভব। তাহলে অন্যান্য সময় কেন সেই সুযোগ সুবিধা রাখা হয় না? এটা কি শুধুই ভোট পাওয়ার সহজ টোপ? ভোটের আগে কাজের সুবিধা করে দিয়ে মনে করিয়ে দেওয়া যে, আমরা কাজ করছি?
সাধারণ মানুষের সহয়তা করাই যদি মূল উদ্দেশ্য হয়, তাহলে কাজ সারা বছর, সবসময় এই ভাবেই চলুক। এই তৎপরতায়, আঞ্চলিক ভাবেই। মানুষের উপকার এভাবেই হবে। এটুকুই সাধারণ মানুষ চায় সরকারের থেকে। মানুষ সব মনে রাখবে, শুধু ভোট না, অন্য সময়ও।
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আজ শ্বেতাকাত্তির জয়ের স্বীকৃতি এক দিনের জন্য কানাডার কনসাল জেনারেল পদ।
এ দেওয়ালে বুদ্ধ, ও দেওয়ালে মমতা, ব্যঙ্গচিত্র থেকে ছড়া, হারিয়ে যাচ্ছে ভোটের আগের দেওয়াল লিখন।
সোমবার বেহালার ঐতিহ্যবাহী চণ্ডীপুজোর শেষ দিন।
ছোটু আর বান্টির স্বপ্ন কি ওদের গিন স্কিন পূরণ করতে পারবে?
ভোটের সময় ছাড়াও অন্যান্য সময় সরকার তৎপর হলে মানুষ বাঁচে।
হাল ফেরানোর আবেদন জানাতে বামেদের এবার নতুন গান লুঙ্গি ডান্সের প্যারোডি।