×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করলেন অশোক দাস, সমাজের তোয়াক্কা না করেই

    অর্যমা দাস | 27/10/2019

    অশোক দাস

    সপ্তম শ্রেণী অবধি পড়াশোনা। কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করলেন অশোক দাস, সমাজের তোয়াক্কা না করেই। মেয়ের বাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয় চিরতরের জন্য। ডিগ্রি না থাকায় এতটা তাচ্ছিল্যের বদলা শুরু ঠিক এই দিন থেকেই।তখন তিনি বাসের হাওড়াগামী বাসের এক কন্ডাক্টার। কোলকাতা শহরের এক চিলতে কামরায় নব দম্পতির সংসার শুরু। সেই সংসারে দুবেলা নুন আনতে পান্তা ফুরায়। কিন্তু একদিনের জন্যও পড়াশোনায় ছেদ ঘটেনি তাঁর স্ত্রীর। কলেজের প্রথম বর্ষ থেকে এম.এ, পুরোটা পড়াশোনা করেন তিনি, স্বামীর উদ্যোগেই। এখানেই শেষ নয় তাঁর জীবনের সফলতার গল্পের। অশোক দাসের সেই এক কামরার ঘরকে সংসারে রূপান্তরিত করার জন্য টাকা রোজগারের ছিল অসীম পরিশ্রম। আর সেই জীবন গোছানোর তাগিদে তাঁর পড়াশোনাটা হয়ে ওঠেনি কখনোই। তবে তাঁর দুই ছেলের শিক্ষাজীবন একেবারেই সাফল্যমণ্ডিত বলা যায়। বর্তমানে তাঁর বড় ছেলে ভারতবর্ষের এক নাম করা বহুজাতিক সংস্থায় সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এবং ছোটো ছেলে এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী। বয়স বাড়ছে, কিন্তু পড়াশোনার তাগিদটা আর গেল কই? ছোটো বৌমা ইতিহাসে পি.এইচ.ডি করছেন। তাতে তাঁর উৎসাহই সবচেয়ে বেশি। পড়াশোনার সময় তাঁর একদম বাঁধা। সেই সময় একটু বেচাল দেখলেই কড়া শাসন শ্বশুরমশাইয়ের। অশোক দাসের কথায়, "ভয়ে বেচারির বিয়ের পরেও সংসারধর্ম শুরু হল না। ছাত্রজীবনের কঠোর বেড়াজালেই থেকে গেল তার দিনগুলো।


    এখন তিনি 45নম্বর বাসস্ট্যান্ডের স্টার্টার। 1নং এয়ারপোর্ট, বিরাটি, বেলেঘাটা, গৌরিপুর-এই চার জায়গায় তাঁকে বসতে হয়। বাস এলে নাম্বার, নাম, সময়, তাড়িখ লিখে রাখা এবং অন্য বাসের সাথে কন্ডাক্টরকে নির্ধারিত করে দেওয়া, এই কাজ করেন তিনি সারাদিন। তবে রাতে বাড়ি ফিরে তাঁকে ফোনে আর পাওয়া যায় না। ফোন করলেই ওদিক থেকে উত্তর আসে, "আমি নাতনির সঙ্গে খেলতে ব্যস্ত। পড়ে ফোন করুন।" নাতনি হল বড় ছেলের মেয়ে। কাজ করার মত সক্ষম যখন তিনি থাকবেন না, জীবনে বেঁচে থাকার একমাত্র চাবিকাঠি হবে তাঁর এই নাতনি বলে দাবি তাঁর। আজ সংসারে তাঁর অর্থের কোনও প্রয়োজন না পড়লেও একসময় এই ঘটনাটাই ছিল একেবারে উল্টো। বাবার মত চাষের জমিতে ভাগচাষ করবেন না বলে হঠকারিতায়েই কলকাতা চলে আসা। কলকাতায় এসে প্রথমে হোটেলের কেবিন মোছা থেকে শুরু করে বাসের হেল্পার, বাসের কন্ডাক্টারি এবং শেষে গাড়ি চালানো শিখে বাসের ড্রাইভার হন তিনি। তবে পড়াশোনা করতে না পারার এই যে তীব্র যন্ত্রণা তা তাঁকে কোনোদিনই দুর্বল করে তোলেনি। বরং বাড়িয়েছে খিদে। আজ তিনি জীবনে সম্পূর্ণভাবে সফল। মাথার উপর থেকে সমস্ত চাপ সরে গেছে তাঁর। 45নম্বর বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশে যদি কখনোও যান একবার আলাপ করে আসতে পারেন মানুষটির সঙ্গে। আপনি শুধু এগিয়ে যাবেন ওনার দিকে, উনি নিজেই মুখিয়ে আছেন আপনার সঙ্গে গল্প করার জন্য।


    অর্যমা দাস - এর অন্যান্য লেখা


    রবীন্দ্রভারতীর কর্তৃপক্ষ পরবর্তী বছর থেকে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করবেন বলে জানিয়েছেন

    বর্তমান থেমে গিয়েছে, ভবিষ্যৎ কী?? আমরা জানি না।

    লকডাউনে ঘরে বসেই নাটক নিয়ে নতুন ‘এক্সপেরিমেন্ট’ করেছে ‘ফোর্থ বেল থিয়েটার’

    সোশাল ডিস্ট্যানসিং বজায় রাখা তো দূরের কথা, বাজারের থলে হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়েই চলছে অনর্গল গল্প।

    আমপানের পর রায়দিঘিতে ক্ষয়ক্ষতির সুযোগ নিয়ে রমরমিয়ে চলছে কালোবাজারি।

    রামায়ণের যুগের পরও দু-দুটো যুগ চলে গেল, মানুষ এখনোও বলবেন অযোধ্যা কিনা 'রামলালা'র একার?

    কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করলেন অশোক দাস, সমাজের তোয়াক্কা না করেই-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested