লক্ষ্মণের এইবার বড্ড অভিমান হয়েছে মনে মনে। রামায়ণের যুগের পরও দু-দুটো যুগ চলে গেল, মানুষ এখনোও বলবেন অযোধ্যা কিনা 'রামলালা'র একার? এ তো আর সহ্য হয় না। স্ত্রী উর্মিলাকে ছেড়ে 14 বছর জেষ্ঠভ্রাতার সেবা করলেন তিনি। লঙ্কার যুদ্ধে রাবণের পুত্র মেঘনাদকে বধ করলেন তিনি। উত্তরকাণ্ডে রাম সীতাকে নির্বাসিত করলে, তাঁকে উদ্ধার করলেন তিনি। এদিকে রাম হলেন রঘুবংশের রাজা, আর কণিষ্ঠভ্রাতা লক্ষ্মণ হলেন প্রধান সেনাপতি। অন্ধ ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে মেনে নিয়েছিলেনও তিনি তা সাদরে। তবে আজও এই অযোধ্যা নিয়ে মাতামাতি, দাঙ্গা, কোর্ট, রায়, তাঁকে বড়োই ঈর্ষান্বিত করে। তাঁর এখন মনে হয়, এত বিস্তৃত বাল্মিকীর লেখা একটা মহাকাব্যের থেকে 'রাম' ছাড়া আর কাউকে মনে রাখল না কলি যুগের মানুষ? বৃথা বাকি সবার বীরত্ব?
মাথা গরম। রাগের বসে বীর লক্ষ্মণ আবেদন করেই বসলেন মর্তের রাজ দরবারে, একটা 'লক্ষ্মণ মন্দির'ও চাই অযোধ্যায়। শুধু লক্ষ্মণ মন্দির কেন? সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা যখন হবেই, তবে শুধু রাম, লক্ষ্মণই নয়, ভরত এবং শত্রুঘ্নের নামেও হতে হবে দুটো মন্দির। এবার তো বিচারালয়ের মাথায় হাত। সুন্নিমিয়াকে তো মন রাখতে 5একর জমি দিয়ে বসে আছেন বিচারপতিরা, মসজিদ করতে। আবার তিনটে হিন্দু মন্দির? অযোধ্যায় আর জায়গা কোথায়? মর্তের রাজ দরবারে সবাই পড়েছে চরম বিপাকে। চার ভাইয়ের নামে চারটে মন্দির হওয়ার পর যদি এবার তেত্রিশ কোটি দেব-দেবী প্রত্যেকের একটা মন্দির দাবি করে বসেন? মহাভারতের সমস্ত মনীষীরাও তো আছেন। ঘাম মুছে, ঢোক গিলতে গিলতে বিচারালয়ের বিচারপতিদের আলোচনার বিষয়বস্তু কিন্তু এবার অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে। লক্ষ্মণ যদি ব্যাপারটা সোস্যাল মিডিয়ায় পাবলিক করে দেয়, আর সরকারের জারিজুরি যদি সামনে চলে আসে, তবে তাদের তো একেবারে চাকরির সঙ্গে সঙ্গে গর্দানটাও যাবে। দেশের আর্থিক মন্দা, বেকারত্ব, গরিবের অর্থাভাব, খাদ্যাভাব, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের চরম অবস্থা, কিছুই আর চাপা থাকবে না, সবকিছু একে একে চোখের সামনে এসে পড়বে মর্ত্যবাসীর। এখন কী করবে তাঁরা? সবশেষে বিচারকমণ্ডলী অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন, 'রাম'-এর ঘটনা 70বছর কাটিয়ে দেওয়া যেতে পারলে, লক্ষ্মণের ঘটনা আরও 140বছর কাটিয়ে দেওয়া হোক। এই জীবদ্দশায় আর একটা অযোধ্যা নিয়ে মামলা পোষাচ্ছে না। রামরাজত্ব শেষ হলেই শুরু হোক লক্ষণরাজত্ব।
রামায়ণ মহাভারত ছেড়ে এবার অন্য ফাইল নিয়ে আয়। দেখি! এবার ওই আকাশে চলা যুদ্ধ বিমানটা নিয়ে কিছুক্ষণ কাটাই।
দশ টাকার চাল-ডালের জন্য মরিয়া ভারতসন্তান তোমার।
লকডাউনে ঘরে বসেই নাটক নিয়ে নতুন ‘এক্সপেরিমেন্ট’ করেছে ‘ফোর্থ বেল থিয়েটার’
‘সবসময় মনে হচ্ছে আমরা বাঁচব তো শেষ অবধি?'
সোশাল মিডিয়া জুড়ে যুবসমাজের এক বিশাল অংশকে এই ‘করোনা উৎসব'কে ব্যঙ্গ করতে দেখলাম।
রঙের আমি, রঙের তুমি, রং দিয়ে যায় চেনা।
শহরের অচেনা 'গানওলা' স্বপন সরকার