×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • একদম ঠিক, দেশের ‘গদ্দার’দের গুলি মারুন

    রজত কর্মকার | 02-03-2020

    প্রতীকী ছবি

    এত বিতর্কের কী আছে জানি না। ঠিকই তো বলছে ওরা। যারা দেশের সঙ্গে, দেশের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে, তাদের তো গুলি করেই মারা উচিত, তাই না?

     

    বিশ্বাসঘাতকতার ঘটনা কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরেই ঘটছে। দিন বলা ভুল, বরং কয়েক দশক ধরেই টানা বিশ্বাসঘাতকতা হয়ে চলেছে। এর প্রায় সবটাই হয় দেশের জনগণের সঙ্গে। প্রত্যেকবার ভোটের আগে। বিভিন্ন আকাশ-কুসুম প্রকল্প জনতার দরবারে নুন-লঙ্কা-চিনি মাখিয়ে প্লেটে সাজিয়ে দেন কিছু ‘গদ্দার’। তার উপর বিশ্বাস করে ভোট দিয়ে বা না দিয়ে দেশের পর দশক ধরে ঠকে আসছেন জনতা-জনার্দ্দন।

     

    তার পর আসা যাক সরকারি দফতরের কাজ প্রসঙ্গে। ছোট, বড়, মেজো – যে কোনও কাজের ক্ষেত্রে ‘প্রণামী’ দেওয়া দীর্ঘ দিনের রীতি। আমরা একপ্রকার ধরেই নিই, কাজ করার জন্য রাজনৈতিক নেতাই হোক বা সরকারি কর্মী, প্রণামী নেওয়াটা তাদের অধিকার। এমন বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় নেহাতই নিম্ন বা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে রাজনীতির আঙিনায় আসা ব্যক্তি, বিশেষত তিনি যদি শাসকদলের ঘনিষ্ট হন, তবে কয়েক বছরের মধ্যেই কোনও বিশেষণ দিয়ে তাঁর বিত্তকে মাপা যায় না। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন? উত্তর ওই একটাই, প্রণামী। আর নেতা হওয়ার সুবাদে তাঁর কত-শত বিশেষ বিশেষ অধিকার থাকে তা আর না-ই বা বললাম। এটা কি দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা নয়? সেই সমস্ত জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা নয়, যাঁদের ভোটে মসনদে বসার অধিকার পেলেন ওই ‘বিত্তশালী’ নেতা?

     

    একটু প্রশাসনের দিকেও নজর দিন। হয়তো সকলেই জানবেন, চোখ বাঁধা বিচারের দেবীর এক হাতে দাঁড়িপাল্লা এবং অন্য হাতে একটা তলোয়ার থাকে। ওই তলোয়ারটাই হল পুলিশ-প্রশাসন। যাঁরা শহরের রাস্তায় একটু রাত করে বাড়ি ফেরেন তাঁরা এই প্রশাসনের দশা ভালোই জানবেন। মালবাহী গাড়ি থেকে হাত বাড়িয়ে রাস্তায় ঝনঝন শব্দে ফেলে দেওয়া কিছু খুচরো কুড়োনোর ধুম দেখলে হরির লুটের বাতাসার কথা মনে পড়ে যেতে পারে। প্রণামী কম হলে বাইক নিয়ে ধাওয়া করে লরি চালকের কাছ থেকে অতিরিক্ত প্রণামী আদায় করেন প্রশাসনের রক্ষকরা। বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, কোনও প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তা নেয়না। এটা কি নিজের দায়িত্ব, কাজের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা নয়? ধর্ষণে অভিযুক্ত বিধায়ক হলে অভিযোগকারিনীর বাবাকে লক-আপে পিটিয়ে মেরে ফেলা কি বিচার চাইতে আসা গরিব মেয়েটির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা নয়?

     

    রাজনৈতিক স্বার্থে দাঙ্গা লাগিয়ে যারা সাধারণ মানুষ মারে, তারা কি দেশের ভাবমূর্তিকে গোটা বিশ্বের কাছে কালিমালিপ্ত করছে না? গোমূত্র ও গোবর সর্বরোশ নাশক ওষুধ প্রচার করে অশিক্ষিত-অর্ধ শিক্ষিত মানুষের বিশ্বাসকে এরা খুন করছে না? আশ্চর্যের বিষয়, যারা এই প্রচার করে, তারাই দেশের সেরা হাসপাতালে চিকিসার জন্য ভরতি হয়। সে সময় গোমূত্র বা গোবরের কথা এরা ভুলে যান। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে ভেন্টিলেশনে পাঠিয়ে, দেশের বেকারদের সংখ্যা ৪৫ বছরের সবচেয়ে বাড়িয়ে এরা যুবাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে।

     

    ওরা ঠিকই বলছে, এমন বিশ্বাসঘাতকরা দেশের চতুর্দিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরা দেশের মান-সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে, দেশের ঐক্য, ভাবমূর্তিকে জুতো মেরে গোটা দেশের জন্য বিশ্বাসঘাতকতা করছে। ওরা তো এদেরই গুলি মারার কথা বলছে, তাই না? আপনরাও তো ওদের সঙ্গে একমত, তাই না?

     


    রজত কর্মকার - এর অন্যান্য লেখা


    দেশে ভূতের সংখ্যা কম নেই, তাদের মুখে রাম নামেরও বিরাম নেই। এমন পরিস্থিতিতে রামায়ণই আদর্শ ধারাবাহিক।

    অসহায় চোখে ওরা দেখছিল আর ভাবছিল, যদি ফুলের পাপড়ির বদলে ওগুলো রুটি, বাতাসা, মুড়ি, মিষ্টি হত, তবে...

    আন্তর্জাতিক খুশি দিবসেই ফাঁসিতে ঝোলানো হল নির্ভয়ার ধর্ষকদের। খুশির দিনই বটে!

    মাননীয় হঠাৎ আটের আস্ফালন ছেড়ে ৯-এর ঘাড়ে চড়ে বসলেন কেন? কারণ নিশ্চয়ই আছে।

    পোশাক এবং গড়ন দেখে যে কেউ একবাক্যে বলবেন, মধ্য বয়সি এই ভদ্রলোক আফগানিস্তানের বাসিন্দা।

    দেশের প্রধান সেবকের অনুগামীর সঙ্গে এমন চরম বালখিল্য আচরণ মানা যায়?

    একদম ঠিক, দেশের ‘গদ্দার’দের গুলি মারুন-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested