×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • নইম উদ্দিনের মধ্যেই বেঁচে রয়েছে রহমতরা

    রজত কর্মকার | 27-12-2019

    কাবুলিওয়ালা ছবির একটি দৃশ্য।

    দীর্ঘদেহী। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চির কাছাকাছি লম্বা। তার সঙ্গে মানানসই চেহারা। কটা চোখের চাহনিতে একটু সতর্কতার ছাপ। পোশাক এবং গড়ন দেখে যে কেউ একবাক্যে বলবেন, মধ্য বয়সি এই ভদ্রলোক আফগানিস্তানের বাসিন্দা। এক কথায় কাবুলিওয়ালা। নাম নইম উদ্দিন।

     

    আমার মধ্যবিত্ত ছাপোষা বাঙালি চেহারার সামনে যেন একটা বড় মানুষের দেয়ালের মতো। দিন দু’য়েকের ছুটি পাওয়ায় পরিবারের কাছে বোলপুরে যাচ্ছিলাম। এসপ্ল্যানেড থেকে দুপুরে বাসে করে যাওয়া স্থির করি। বাসে ওঠার পর স্ত্রীকে ফোন করে কথা বলছিলাম। ছেলে ঘুম থেকে উঠে যাওয়ায় ভয়েস কল পাল্টে যায় ভিডিও কলে। কথার বলার মাঝে মাঝে সম্পূর্ণ অযাচিত ভাবে দীর্ঘ দেহ বেশ খানিকটা ঝুঁকিয়ে প্রায় আমার মাথার কাছে এনে ফোনের স্ক্রিনে চোখ রাখছিলেন নইম উদ্দিন।

     

    স্ত্রী এক সময় বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কে উনি? বার বার মাথা ঝুঁকিয়ে দেখছে।’ আমিও খানিক সতর্ক হয়ে পেছনে ঘুরে তাকাই। দেখি একটু অপ্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নইম। তাকানোর পর ধীর পায়ে নীজের সিটে গিয়ে বসলেন। বাস ছাড়তে তখনও খানিক সময় বাকি। সিট ছেড়ে উঠে এলেন নইম। জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনার ছেলের নাম কী?’ বললাম, ‘ঋষাণ।’ শোনার পর আবার চলে গেলেন সিটে।

     

    বায়োস্কোপওয়ালা ছবির একটি দৃশ্যে ড্যানি ডেনজংপা

     

    কাবুলিওয়ালাদের সঙ্গে বাঙালির সম্পর্ক কয়েক শতকের। তপন সিনহার কাবুলিওয়ালা থেকে হাল আমলের দেব মেধেকারের বায়োস্কোপওয়ালা, সিনেমার থিম একই থেকে গিয়েছে। পরিবার-সন্তানকে বাড়িতে রেখে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের কোনও শহরে গিয়ে উপার্জনের আশায় দিনের পর দিন কাটিয়ে দেওয়া। রবীন্দ্রনাথের রহমত সে সময় মেয়ের একখনি হাতের ছাপ সঙ্গে করে এনেছিল। অবসর সময়ে একান্তে ওই ছাপটি দেখেই ছোট্ট মেয়ের কথা মনে করত সে।


    একশো বছরে দুনিয়া বদলে গিয়েছে, কাগজের ওপর হাতের ছাপের বদলে মোবাইলের স্ক্রিনে লাইভ ছবি এসেছে। রহমত হোক বা নইম উদ্দিন, বাবার মন একই রয়ে গিয়েছে।

     

     

     


    রজত কর্মকার - এর অন্যান্য লেখা


    দরজা খোলার শব্দে ঘোর থেকে বেরিয়ে এলেন ঠাকুর। ‘কে এলি, রিদে নাকি?’ উত্তর এল, ‘মিত্রোঁওওওও, আমি নরেন'

    বৃহস্পতিবার দুপুরে “রামের নামে” ফের চলল গুলি। ৭২ বছর পরেও যে নাথুরাম গডসে জীবিত রয়েছে

    এঁরা ঘুমের সুযোগ পান না এ কথা তাঁদের অতি বড় বন্ধু বা সমর্থকও বলতে পারবেন না। কিন্তু সুযোগ থাকা সত্ত

    স্টেশনে পুলিশের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রত্যেক যাত্রীর ই-পাস দেখে তবেই স্টেশনে প্রবেশের অনুমত

    ভাল করে বাংলা না বলেও বাংলার মানুষের জন্য প্রাণ কেঁদে ওঠে যাঁর, সেই ঘোষবাবু বদলের সঙ্গে বদলার স্বপ্ন

    যারা গণধর্ষণে অভিযুক্ত, যারা দু’ জন মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলার উপক্রম করেছিল, তারা জামিন পায় কী ভাবে?

    নইম উদ্দিনের মধ্যেই বেঁচে রয়েছে রহমতরা-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested