দীর্ঘ 83 দিন বাড়িতে থাকার পর আবার শুটিং শুরু হয়েছে টলিপাড়ায়। করোনার সঙ্গে যুঝতে কোমর বেঁধে প্রস্তুত সমস্ত কলাকুশলীরা। শুটিং, অবশ্যই একটা দলবদ্ধ কর্মকাণ্ড এবং এ ক্ষেত্রে দূরত্ববিধি মেনে চলার বিষয়টা একপ্রকার 'মিথ'ই বলা চলে। তাহলে, টলিপাড়া করোনা-পরিস্থিতি 'বিট' করছে কীভাবে?
প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর অন্তর হাত স্যানিটাইজ করে সরকারি বিধি মেনেই চলছে শুটিং। শিল্পীরা শুধুমাত্র ক্যামেরার সামনে অভিনয় করছেন মাস্ক খুলে। বাকি সময় পুরোটাই মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস - শুটিং ফ্লোরে মেনে চলা হচ্ছে যাবতীয় সুরক্ষাবিধি। মেকআপ আর্টিস্ট এবং হেয়ার স্টাইলিস্টদের সর্বক্ষণ ব্যবহার করতে হচ্ছে পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস্। অভিনয়ের প্রয়োজনে শিল্পীদের কাছাকাছি দাঁড়ানো অথবা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখা হচ্ছে। বেশিরভাগ শট নেওয়া হচ্ছে ব্লকে। এডিটিং-এর মাধ্যমে পরে তা জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। কোনও কম্পোজিশনের ক্ষেত্রেও একই ফ্রেমে অভিনেতা অভিনেত্রী মেনে চলছেন প্রয়োজনীয় দূরত্ব। তবে, এতকিছুর পরও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কলাকুশলীরা। আতঙ্ক এই যে, এত সীমাবদ্ধতা এবং বিধিনিষেধ মেনে শুটিং হচ্ছে... তারপরেও সবাই ঠিক থাকব তো?
সিনেমাটোগ্রাফার মধুরা পালিতের কথায়, "শুটিং ফ্লোরে যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করা সম্ভব, ততটা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব সেটের মধ্যে বজায় রাখা একটু কঠিন বটে। কারণ, একটা সেটের মধ্যে সবাই যদি 6ফুট দূরে দাঁড়ায় তাহলে বলতে হয়, কাজ করাটা সম্ভব নয়। তাই যতটা দূরত্ব বজায় রেখে সবচেয়ে ভাল কাজ সম্ভব, সেটাই করা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্বের থেকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধির উপর। কিছুক্ষণ পরপরই স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। মেকআপ আর্টিস্ট এবং হেয়ার ড্রেসাররা, যাদের সবচেয়ে কাছাকাছি এসে কাজ করতে হয়, তাঁরা পিপিই কিটস্ পরেই কাজ করছেন। সেটে বেশি লোক থাকছে না। শুটিং-এর সময় যাদের কাজ নেই, তাঁরা বাইরে চলে যাচ্ছেন। এইভাবে যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে টলিপাড়ায় কাজ চলছে।"
পরিচালক অয়ন সেনগুপ্ত সরকারি এবং ফেডারেশনের সমস্ত বিধি মেনেই শুটিং শুরু করেছেন। জি বাংলার 'কী করে তোকে বলব'-এর সেটে শুটিং চলছে পুরোদমেই। সেখান থেকে তাঁর কিছু অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি। "এই গল্পটা একেবারেই প্রেমের গল্প। নায়ক-নায়িকার কাছে আসা, সম্পর্ক গড়ে তোলা রয়েছে এখানে। ফলে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। তবুও কিছু করার নেই, শো মাস্ট গো অন। গল্পে করোনার চর্চা আনা হয়েছে। এবং সেখানে কলাকুশলীরা মাস্কের ব্যবহার করছেন। চেয়ার, টেবিল, খাট বা যা যা জিনিস শুটিং-এ ব্যবহার হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে সেগুলো। এইভাবে কঠোর সচেতনতার মধ্যে দিয়েই চলছে শুটিং।"
অভিনেত্রী মেঘমিত্রা ঘোষের কথায়, 'শুটিং ফ্লোরে মেকআপ করে নেওয়ার পরে তো আমি আর মাস্ক পরতে পারব না, সব ঘেঁটে যাবে। তাই শুটিং ফ্লোরে আট থেকে দশ ঘন্টা মাস্ক ছাড়াই থাকতে হচ্ছে। এইভাবেই যতটা সম্ভব সুরক্ষাবিধি মেনেই চলছে শুটিং'।
যা বোঝা যাচ্ছে, টলিপাড়ার শুটিং সম্পূর্ণ ঝুঁকিবিহীন নয়। তা-ই কেউ কেউ শুটিং-এ এখনও রাজি নন। কোনও কোনও চ্যানেলে পুরনো এপিসোড দেখানো হচ্ছে এখনও। কালারস বাংলার অনিল কুরিয়াকোসার কথায়, "এখনও পুরনো এপিসোডই দেখানো চলছে। আরও কিছুদিন যাক, তারপর আবার নতুন এপিসোড শুট হবে।"
মেকআপ আর্টিস্ট সৌরভ দে বললেন, " পিপিই কিটস্, মাস্ক, গ্লাভস্ তো পরতেই হচ্ছে আমাদের, এ ছাড়া নিজেদের পুরো স্যানিটাইজ করে তবেই সেটে ঢুকতে হচ্ছে। 5-10মিনিট অন্তর হাত স্যানিটাইজ করা এবং হাত দিয়ে মেকআপের বদলে ব্রাশ ব্যবহার করছি আমরা। তবে, ভয় করছে না খুব একটা। কারণ, অভিনেতারাও পুরোপুরি স্যানিটাইজড হওয়ার পরই সেটে ঢুকছেন। এভাবেই চলতে হচ্ছে আমাদের।"
তবে, এতদিন বাদে নিজেদের ডেরায় ফিরতে পেরে টলিপাড়ার বেশ কয়েকজন অভিনেতা অভিনেত্রী যে বেজায় খুশি, তা দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে তাদের মাস্ক পরিহিত ছবি-সেলফিতে। ইতিমধ্যেই ইন্টারনেটে ভাইরাল সরাসরি ইন্দ্রপুরী স্টুডিও থেকে রাণী রাসমণি এবং তাঁর মেয়েদের মাস্ক পরিহিত সেলফি বা জুন আন্টির শ্রীময়ীর পরিবারের সঙ্গে হাসিমুখের ছবি। বিধি নিষেধ সঙ্গে নিয়েই টলিপাড়া ফিরছে নতুন উদ্যমে। ভয়কে জয় করার উদ্দেশ্যেই এগিয়ে চলছেন তাঁরা।
বর্তমান থেমে গিয়েছে, ভবিষ্যৎ কী?? আমরা জানি না।
অনলাইন আদানপ্রদানের ফলে কীভাবে খরচ এবং পরিশ্রম কমানো যায়, তা বুঝেছেন অনেকেই।
আমার নাগরিকত্বের প্রমাণ চাওয়ার তুমি কে হে বাপু?
দশ টাকার চাল-ডালের জন্য মরিয়া ভারতসন্তান তোমার।
সোশাল ডিস্ট্যানসিং বজায় রাখা তো দূরের কথা, বাজারের থলে হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়েই চলছে অনর্গল গল্প।
বিরল এক শিল্পকর্মের জন্য ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ডে নাম উঠল জলপাইগুড়ির শুভ্রা মণ্ডলের।