এক মিনিটের মধ্যে 7 মিলিমিটার ছোলার ডালের উপরে বলপেন দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এঁকে বিরল এক শিল্পকর্মের জন্য ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ডে নাম উঠল জলপাইগুড়ির শুভ্রা মণ্ডলের। লকডাউনের মধ্যেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড এবং ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ডে নাম উঠল শুভ্রার। গত 15 জুলাই ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ডে তাঁর নাম নথিভুক্ত করা হয় সবচেয়ে কম সময়ে রবীন্দ্রনাথের সবচেয়ে ছোট ছবি আঁকার জন্য। মঙ্গলবার, 28 জুলাই জলপাইগুড়ি বিধানসভা থেকে তাঁর বাড়ি এসে সংবর্ধনা দেন বিধানসভা কো-অর্ডিনেটর প্রশান্তকুমার বর্মা, জলপাইগুড়ি জেলার কার্যকরী সভাপতি নুরজাহান বেগম, খারিজা বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রেখা মিত্র, যুব তৃণমূলের ব্লক কমিটির সভাপতি মেহবুব রহমান।
জলপাইগুড়ি পি ডি উইমেন্স কলেজের ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শুভ্রা মণ্ডল। খারিজা বেরুবাড়ি হাইস্কুল থেকে তাঁর পড়াশোনা। বাবা, মা, বোনের সঙ্গে ছোট্ট সংসারে থাকেন শুভ্রা। বাবার একটি স্টেশনারী দোকান। শুভ্রার বাবা-মা, বোন, আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, স্কুল-কলেজ সবাই আজ গর্বিত তাঁর জন্য। সেই খুশি আর সামলাতে পারছেন না শুভ্রা। তাঁর কথায়, "বাড়িতে কাল এত লোক সংবর্ধনা দিতে এসেছিলেন, যে তাঁদের বসতে দেওয়ার জায়গা হয়নি। আবার বাবাকে বলে গেছেন, 15 আগস্টের দিন ওঁকে নিয়ে যাব আমরা। সবার সামনে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।"
ছোট থেকেই আঁকার চেয়েও শুভ্রার বেশি ঝোঁক একটা জিনিস ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে কী করে আরেকটা জিনিস তৈরি করা যায় সেই দিকে। পড়াশোনার চাপে এইদিকে ঠিক করে মন দেওয়া হয়নি। লকডাউনে কলেজ বন্ধ থাকায় আবার তাঁর শিল্পীসত্ত্বা জানান দেয়, 'তুমি পারবেই।' কখনও গাছের পাতা কেটে পরিবেশ দূষণের বার্তা, লায়ন কিং বা যীশু সেনগুপ্ত বানাচ্ছেন, কখনও বা চকলেট দিয়ে শুঁয়োপোকা, আঙুর দিয়ে বেলুন, ফুল দিয়ে জামা বা চক কেটে শিল্পকলা। কিন্তু সর্বত্রই চোখ তাঁর বিশ্ব পরিসরে নিজের নাম দেখায়। কোন কোন শিল্পকলায় কে কে বিশ্বরেকর্ড করেছেন, সব তাঁর জানা।
লকডাউনে খাতা শেষ হয়ে যাওয়ায় গাছের পাতা কেটে চলতে থাকে তাঁর শিল্পকর্ম। এরপর তাঁর নতুন উৎসাহের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় ম্যাক্রো আর্ট। ডালের উপরে রবীন্দ্রনাথ, পশ্চিমবঙ্গের ম্যাপ, ভারতের ম্যাপ, এমনকি পৃথিবীর ম্যাপও এঁকে ফেলেন তিনি। শিল্প তো তৈরি হল, তবে তা কি সম্মান পাওয়ার যোগ্য? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডে নিজের নাম নথিভুক্ত করা। কিছুদিন পরেই সেখান থেকে উত্তর আসে, "আরেকটি ভিডিও করে সরাসরি বানিয়ে সেটা আমাদের পাঠাও"।
এরপর 3 জুন প্রাপ্তি হয় ইন্ডিয়া বুক রেকর্ডের সম্মাননা। এখন গুগল সার্চে উঠে আসছে তাঁর নাম। শুভ্রা মণ্ডল। তবে এখানেই থেমে থাকেননি শুভ্রা। এইবার সোজা ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ডে নাম নথিভুক্তকরণ এবং সেখানেও সম্মান প্রাপ্তি। লকডাউনের এই সময়ে সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প তুলে ধরলেন শুভ্রা। আগামীতে পথচলার ব্যাপারে তাঁর দৃঢ় উত্তর, "আমার লক্ষ্য আরও ভাল শিল্পকলা তৈরি করা।"
দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে তৈরি হল গান-
গোটা হলঘর সুশান্তের হাসিতে গমগম করছিল।
শিয়ালদহে রেল প্রথমবার ঝড় থেকে বাঁচতে ‘সিকিউরিং' প্রক্রিয়ার সাহায্য নিচ্ছে।
বর্তমান থেমে গিয়েছে, ভবিষ্যৎ কী?? আমরা জানি না।
সোশাল ডিস্ট্যানসিং বজায় রাখা তো দূরের কথা, বাজারের থলে হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়েই চলছে অনর্গল গল্প।
দূরত্ববিধি মেনে চলার বিষয়টা একপ্রকার 'মিথ'ই। টলিপাড়ায় করোনা-পরিস্থিতি 'বিট' করছে কীভাবে?