×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • করোনার চেয়েও মারাত্মক মিথ্যা

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 30-03-2020

    প্রতীকী ছবি

    ভাইরাসের থেকেও দ্রুত ছড়ায় ফেক নিউজ। বেশ কয়েকদিন ধরেই সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে একটি ভিডিও, যাতে দাবি করা হয়েছে 23°C-এর বেশি তাপমাত্রায় করোনা ভাইরাস ছড়ায় না। বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য  ভিডিওর বক্তা অর্কপ্রভ সিনহার পরিচয় দেওয়া হয়েছে AIIMS-এর ডাক্তার বলে। বস্তুত এই নামে AIIMS-এ কোনও চিকিৎসকই নেই23°C-এর বেশি তাপমাত্রায় করোনা ভাইরাস ছড়ায় না এমন কোনও দাবি বিজ্ঞানী মহল থেকে আজ অবধি করাও হয়নি। এই ধরনের ভ্রান্তিমূলক ভিডিও মারাত্মক ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই করোনা ভাইরাসের চেয়ে সোশাল মিডিয়ার মিথ্যার ভাউরাস আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে।

     

    আদপে সত্যিই কতটা যোগাযোগ আছে তাপমাত্রা আর COVID-19 এর? তাপমাত্রা কি সত্যি কমাতে পারে করোনার প্রভাব?

     

    চিনে এই মারণ রোগ থাবা বসায় 2019-এর ডিসেম্বরে। চীনের তাপমাত্রা তখন নেহাতই কম, 8°C আশেপাশে। জানুয়ারির 29 তারিখ থেকে ভয়াবহ ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে COVID-19 কিন্তু লক্ষ করলে দেখা যাবে উত্তর গোলার্ধের থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কম। করোনার যে মহামারী রূপ সেটা কিন্তু একটা নির্দিষ্ট "বেল্টের’ মধ্যেই সীমাবদ্ধ। 30°-45°N অক্ষাংশের মধ্যে এর ভয়াবহতা চরম। যদিও তার বাইরেও ছড়িয়েছে এই রোগ। কিন্তু সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা বা ভয়াবহতা দুইই কম খানিকটা হলেও। দক্ষিণ আফ্রিকা, মাদাগাস্কার, পানামা, আর্জেন্টিনা সহ দক্ষিণ গোলার্ধের বিভিন্ন দেশে অনেকেই COVID-19 -এ আক্রান্ত। তবে সংখ্যায় কম। এমনকি মৃত্যু সংখ্যাও কম সেখানে। তাহলে এর নেপথ্যে কি তাপমাত্রা রয়েছে? কারণ ডিসেম্বর - ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল চলছিল। তাপমাত্রাও 30-35°C এর আশেপাশেই ছিল সর্বত্র। অন্যদিকে ইতালি, লন্ডন, কানাডা, চিনে তাপমাত্রা ছিল - থেকে 10°C - এর মধ্যে।

    অনেক ভাইরোলজিস্টদের মতে, যে জায়গাগুলোয় তাপমাত্রা বেশি সেখানে করোনা সেই অর্থে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। যতটা তাড়াতাড়ি সে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে ছড়িয়েছে। ইতালির তাপমাত্রা 10°C সেখানে তাদের আক্রান্তের সংখ্যা  চারগুণ বেশি থাইল্যান্ডের তুলনায়, যার তাপমাত্রা 35°Cআবার অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, তাপমাত্রা নয়, COVID-19 কমাতে পারে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি। তবে এর কোনওটাই কিন্তু সর্বজনস্বীকৃত বৈজ্ঞানিক সত্য নয়, নানা ধরনের হাইপোথিসিস মাত্র।

     

    কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন এমনিই শীতকালে নানান ভাইরাল ফিভার, ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়ায়। আবার গরমের সঙ্গে কমতে থাকে এদের প্রভাব। কিন্তু করোনার ক্ষেত্রে তা কতটা ফলদায়ক হবে এখনই বোঝা যাচ্ছে না। কারণ উত্তর গোলার্ধে ইতিমধ্যে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করলেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমছে না। কমছে না মৃত্যু হারও। সবে ডিসেম্বরে এই ভাইরাসটি আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। তাই এখনই বলা যাচ্ছে না গরম কতটা প্রভাব ফেলবে COVID-19- এর উপর। ফলত গরম বা তাপমাত্রার সঙ্গে করোনার সম্পর্ক কতটা তা প্রমাণিত হয়নি। সঠিক ভাবে কিছু বলাও যাচ্ছে না তাই।

     

    গরম কি কমিয়ে দেবে করোনার প্রভাব নাকি বদলে যাবে তার Behavioural Attitude’? যেমনটা ইতিমধ্যেই সে করতে শুরু করেছে চীনে। যারা সেরে উঠেছিলেন করোনা থেকে তাদেরই 3-10% ফের আক্রান্ত হয়েছে এই রোগে। অতএব গরম কতটা আটকাবে এই মারণ রোগের থাবা, সত্যি কতটা যোগাযোগ আছে গরম আর COVID-19- এর তা সময় বললেও আপাতত সোশাল মিডিয়ায় ছড়াতে থাকা ভিত্তিহীন ভিডিওগুলো যে একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয় তা বোঝা গেল।

     


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    ক্যান্সার থেকে জীবনের নানান বাধা অতিক্রম করে প্রিয়াঙ্কা আজ সফল ব্যবসায়ী।

    বিধানসভা ভোট এবং করোনার কারণে পিছিয়ে গেছে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক, কিন্তু রয়ে গিয়েছে অনেকগুলো প্রশ্ন

    এক মহিলার রাজ্যেই অন্য মেয়েরাই নিরাপদ নয়, কারণ তিনি ধর্ষণের অজুহাত দিতে ব্যস্ত! 

    রিচা শুক্লার শর্ট ফিল্ম রিসেশন মানুষের মনের একটি দিক তুলে ধরেছে।

    বরাবর যে বর্ণবৈষম্য চলে আসছে তার ছাপ করোনা সংক্রমণের হারেও পড়েছে এবং ফল হিসেবে প্রাণ হারিয়েছেন বহু

    ইচ্ছেপূরণের গল্প দেখাল ‘ঘরেলু’ শর্ট ফিল্মটি। 

    করোনার চেয়েও মারাত্মক মিথ্যা-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested