×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • ভোলা যাবে না সুশান্তকে: মৌমিতা

    অর্যমা দাস | 15-07-2020

    ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সি(2015)-র একটি দৃশ্য

    সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু হওয়ার পরে কেটে গিয়েছে একমাস। কেমন আছেন তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন? এখনও কতটা কষ্ট পান সহকর্মীরা? কতটা ভুলতে পেরেছে তাঁকে সাধারণ মানুষ? ‘ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সি’-র প্রাক্তন প্রেমিকা লীলা (মৌমিতা চক্রবর্তী) 30 দিন পরেও ভুলতে পারছেন না ব্যোমকেশ বক্সিকে। মৌমিতা পেশায় অভিনেত্রী এবং একই সঙ্গে পরিচালক। 2013-14 নাগাদ 'ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সি'-তে অভিনয় করেন সুশান্ত সিং রাজপুতের সঙ্গে। এখনও তাঁর জীবনের প্রতি পদে তাঁর চোখে ভেসে উঠছে বন্ধু সুশান্তের মুখটা। তাঁর স্মৃতিগুলো এখনও ভীষণ তরতাজা। সুশান্তের সহ-অভিনেত্রী মৌমিতা চক্রবর্তী www.4thpillars.com-কে জানালেন সুশান্ত সিং রাজপুতের সঙ্গে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা।

     

    প্রশ্ন: 30 দিন কেটে গেল। তোমার সহকর্মী সুশান্ত সিং রাজপুত আর নেই। ব্যপারটা মেনে নিতে পেরেছ?

    উত্তর: সত্যি বলতে এই ঘটনাটা আমি এখনও পর্যন্ত মানতে পারিনি। এটা সত্যি বলে গ্রহণ করার মতো মনের জোর আমার নেই।

     

    প্রশ্ন: তোমার প্রথমবার সুশান্তের সঙ্গে আলাপের ঘটনাটা কেমন ছিল?

    উত্তর: বালিগঞ্জের একটি হোটেলে ব্যোমকেশ বক্সির ওয়ার্কশপ আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে প্রথম দেখা হয় ওর সাথে। দিবাকর ব্যানার্জী আলাপ করিয়ে দিয়ে আমার ছোটবেলার অনেক গল্প বলছিলেন সুশান্তকে। ও খুব মজা পাচ্ছিল। গোটা হলঘর ওর হাসিতে গমগম করছিল, আর আমি দিবাকর ব্যানার্জির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে চুপ করতে ইশারা করছিলাম। সুশান্ত পরে আমার ওই চোখ পাকানোটা অনেকবার ভেঙিয়ে দেখাত শুটিংয়ের সময়। তখন একবারের জন্যও ভাবিনি যে, কিছু বছর বাদে এই কথাগুলো সুশান্তের মৃত্যুর পর এভাবে বলতে হবে। তবে, প্রথম দিনেই ও যেভাবে মাটির মানুষের মতো ব্যবহার বজায় রেখে মিশে গিয়েছিল কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে, তা মন ছুঁয়ে যায়।

     

    প্রশ্ন: সহ-অভিনেতা হিসেবে সুশান্ত সিং রাজপুতের সঙ্গে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা কেমন?

    উত্তর: যতটা কঠিন, ঠিক ততটাই আবার সোজা।

    কেন কঠিন? কঠিন কারণ সুশান্ত অনস্ক্রিন এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়েনা অন্য কাউকে। অসাধারণ দক্ষ অভিনয় ক্ষমতা ওর। কাজেই ওর সাথে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করা খুব শক্ত, খুবই কঠিন।

    কেন সহজ? ওর অসাধারণ কো-অপারেশনের জন্য একবারও মনে হয়নি যে আমি বোম্বের এক বিখ্যাত হিরোর সামনে দাঁড়িয়ে অভিনয় করছি। এতটাই সহজ করে নিয়েছিল। প্রতিটা সিনের আগে কোনও না কোনও মজার কথা বলতই, যা শুনলে হিটলারও হাসতে বাধ্য হত। এক কথায় বলতে গেলে, পরিস্থিতি হালকা করতে জানত ও, যাতে সিনগুলো খুব ভাল ভাবে, নিখুঁত ভাবে বেরিয়ে যায়।

     

    প্রশ্ন: তোমার চোখে কেমন মানুষ ছিলেন সুশান্ত?

    উত্তর: অত্যন্ত পরিণত একজন মানুষ, যে জীবনে নেতিবাচক কিছুই ভাবতে পারত না। ভীষণ স্বপ্ন দেখতে ভালবাসত। আর পড়াশোনার খুব গুরুত্ব ছিল ওর কাছে। তবে ওর একটিই নেগেটিভ স্বভাব চোখে পড়েছিল। খুব সহজে সবাইকে বিশ্বাস করে ফেলত। খারাপ মানুষও যে হতে পারে পৃথিবীতে, সেটা যেন সুশান্ত ভাবতেই পারত না। ওর চোখে সমগ্র পৃথিবী ও পৃথিবীর সবকিছু খুব সুন্দর।

     

    প্রশ্ন: তোমার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল? তবে তা কতটা?

    উত্তর: অবশ্যই ছিল। আমার বোম্বে গিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরক তো সুশান্তই। ওর কথাতেই বোম্বে যাওয়া ফাইনাল করি। সেখানে গিয়ে বেশ ভালই যোগাযোগ হত। আমি যেহেতু বোম্বেতে এক্কেবারে নতুন, তাই নিয়মিত খোঁজ খবর রাখত, যে আমি কাজ পাচ্ছি কিনা, কোথায় থাকছি ইত্যাদি ইত্যাদি...

    শেষ কথা হয় গতবছর দশেরাতে।

     

    প্রশ্ন: তোমার চোখে সুশান্তের ভাল লাগার জিনিসগুলো কী কী ছিল?

    উত্তর: আমি যতটুকু জানি সুশান্ত অঙ্কের খুব, খুব, খুউউব কঠিন সমস্যাও নিমেষে সমাধান করতে পারত। আমার যেটা ভাল লাগত ওর শিশুসুলভ, অমায়িক ব্যবহার, আর কিছু শেখার ইচ্ছা।

     

    প্রশ্ন: সুশান্ত সিং রাজপুত বেঁচে থাকলে তোমার মতে ঠিক কী কী ভাবে উপকৃত হত বলিউড?

    উত্তর: বলিউড অনেক অন্যরকম ছবি পেত যেগুলোতে অভিনয় করার সাহস ও দক্ষতা সবার থাকে না।

    বলিউডে বেশিরভাগ লোকজনকে বড্ড ক্লোন লাগে। সব একইরকম দেখতে প্রায়। সেদিক দিয়ে সুশান্তকে কখনওই একঘেয়ে লাগেনি দর্শকদের।

    আর সবচেয়ে বড় উপকার যেটা হত সেটা হল, ওকে দেখে আরও পাঁচটা সাধারণ ঘরের ট্যালেন্টেড ছেলে মেয়েরা কাজ করার অনুপ্রেরণা পেত। কারণ সম্পূর্ণ বহিরাগত হয়েও ও যে জায়গাটা নিজের জন্য তৈরি করেছিল, তা বলাই বাহুল্য।

     


    অর্যমা দাস - এর অন্যান্য লেখা


    রামায়ণের যুগের পরও দু-দুটো যুগ চলে গেল, মানুষ এখনোও বলবেন অযোধ্যা কিনা 'রামলালা'র একার?

    সোশাল মিডিয়া জুড়ে যুবসমাজের এক বিশাল অংশকে এই ‘করোনা উৎসব'কে ব্যঙ্গ করতে দেখলাম।

    শিয়ালদহে রেল প্রথমবার ঝড় থেকে বাঁচতে ‘সিকিউরিং' প্রক্রিয়ার সাহায্য নিচ্ছে।

    গোটা হলঘর সুশান্তের হাসিতে গমগম করছিল।

    বাজারে চাল, আলু, মুড়ি একেবারেই নেই। আর নেই যেটা সচেতনতা।

    ভোলা যাবে না সুশান্তকে: মৌমিতা-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested