দেশের অর্থনৈতিক সংকটকালে বন্ধ হয়ে গেল ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় স্তরের পরীক্ষা। শুনতে অবাস্তব মনে হলেও এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের ছাত্রছাত্রীরা। সোমবার থেকে বিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কাগজ ও কালির অভাবে আপাতত স্থগিত সমস্ত পরীক্ষা। ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের (Western Province) শিক্ষা মন্ত্রকের এক কর্মকর্তা জানান, কাগজ ও প্রয়োজনীয় কালির অভাবে প্রধান শিক্ষকরা পরীক্ষা আয়োজন করতে পারছেন না।
শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে 1948 থেকে আজ পর্যন্ত কোনও দিন এমন চরম আর্থিক সংকটের মধ্য পড়েনি। বাস্তবে কেবল কাগজপত্র নয়, টান পড়েছে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি তেলের ভাণ্ডারেও। অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণ বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ে ঘাটতি। এর ফলেই প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে বাধা পড়ছে, দেশে দেখা দিচ্ছে আর্থিক সংকট।
বাস্তবে এই ছোট দ্বীপরাষ্ট্রটি বৈদেশিক ঋণে জর্জরিত। তা সত্ত্বেও মুখ থুবড়ে পড়া অর্থনীতিকে অক্সিজেন দিতে ভরসা আন্তজার্তিক মুদ্রা তহবিলই। আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (IMF)-এর কাছ থেকে সম্প্রতি 2 কোটি 20 লক্ষ ডলার ঋণ চেয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে আশ্বস্ত করে IMF জানায়, তারা ‘বেইল আউট’-এর অনুরোধ বিবেচনা করে দেখছে। অন্যদিকে, খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী আমদানির জন্য ভারতের কাছ থেকে 100 কোটি ডলার সাহায্য পেয়েছে শ্রীলঙ্কা।
স্বাধীন শ্রীলঙ্কায় এমন সংকট আগে দেখেনি জনগণ। লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে মুদিখানায়, পেট্রোল পাম্পে। গত রবিবার কলম্বোতে জ্বালানি তেলের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে মৃত্যু হয় দুই সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধের। জ্বালানি তেলের পাশাপাশি ঘাটতি বিদ্যুৎ উৎপাদনেও, লোডশেডিং নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংকট কালে রেশনিং ব্যবস্থার মাধ্যমে চিনি, গুঁড়ো দুধ, চাল, ডাল দেওয়া হচ্ছে দেশবাসীকে। IMF-এর সাহায্য নিয়ে কবে ঘুরে দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি, এ প্রশ্নই এখন দ্বীপরাষ্ট্রের জনসাধারণের। কবে অন্ধকার কেটে আলোর দেখা পাওয়া যাবে, মিলবে খাদ্যৃ-ওষুধ-বিদ্যুৎ পরিষেবা, সেই অপেক্ষাতেই শ্রীলঙ্কাবাসী।
এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি গত দশকেও ছিল সমৃদ্ধশালী, অর্থনৈতিক ভাবে স্বনির্ভর, তবে কেন এই চরম সংকট? রাজাপক্ষে নিজের কাঁধে এই আর্থিক সংকটের দায় না নিয়ে দুষছেন কোভিড মহামারীকে। জনসাধারণ ও বিরোধী পক্ষ অবশ্য রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ইতিমধ্যেই। বাস্তবে বিপুল ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। চিনের অর্থনৈতিক ব্লু প্রিন্ট অনুযায়ী চলতে গিয়েই এই পরিণতি, অভিমত অনেক বিশেষজ্ঞের। স্থানীয় সূত্রে আরও দু’টি দিক উঠে আসছে। প্রথমত, শ্রীলঙ্কা নির্ভরশীল পর্যটন শিল্পের ওপর, দেশের 10 শতাংশ জিডিপি আসে এই ক্ষেত্র থেকে। কিন্তু, 2020 পরবর্তী সময়ে কোভিডের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই শিল্প। এছাড়াও, রাসায়নিক সার ব্যবহার বন্ধ করে ‘অর্গানিক ফার্মিং’ পদ্ধতিতে চাষাবাদের নয়া পরিকল্পনা করেছিল শ্রীলঙ্কা সরকার। এক্ষেত্রেও লাভের মুখ দেখেনি রাজাপক্ষে সরকার, কমেছে উৎপাদনের পরিমাণ। এই কারণেও খাদ্যের সংকট তরান্বিত হয়েছে। IMF কিংবা চিন ও ভারতের মতো বৃহৎ রাষ্ট্রের কাছে কার্যত নিজেদের সমর্পণ করছে শ্রীলঙ্কা সরকার। কিন্তু বৈদেশিক সহযোগিতার আড়ালে কূটনৈতিক চালে কতখানি ঘুরে দাঁড়াতে পারে ছোট এই দ্বীপরাষ্ট্রটি, তাই এখন দেখার বিষয়।
সাম্প্রদায়িক হিংসার বাতাবরণে শ্রীরামপুরে অনুষ্ঠিত হল সম্প্রীতির লক্ষ্যে পদযাত্রা
বাংলায় রাজনীতিতে সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনাবলীল তার চিরায়ত অহিংসার ধারণার সঙ্গে একেবারেই মেলে না।
সাম্প্রতিক ইউক্রেন সংকট তুলে ধরল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সাম্রাজ্যবাদী সংঘাতকেই।
সাম্প্রদায়িক বিভাজনের নয়া ময়দান কুতুব মিনার
সরাসরি ধর্মের জিগির না তুলে অর্থনৈতিক শোষণ এবং বঞ্চনার মাধ্যমে ভারতের মুসলিম সমাজকে দুর্বল করার চেষ্
বীরভূমের দেওয়ানগঞ্জে প্রকল্পের সমর্থনে তৃণমূলের মিছিল রুখলেন আদিবাসী নারীরা