×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • যুদ্ধক্ষেত্র ইউক্রেন: সাম্রাজ্য বিস্তারের ইতিবৃত্ত  

    রাতুল গুহ | 08-03-2022

    প্রতীকী ছবি।

    কনকনে শীতল আবহাওয়া যেন এ'বছর আরও নিষ্ঠুর ইউক্রেনের জনপদগুলিতে। রুশ সেনাবাহিনীর হামলায় জনজীবন ত্রস্ত, বিপর্যস্ত। কিয়েভ এবং খারকিভ শহর দু’টির দখল ইউক্রেনের হাতে থাকলেও ইউক্রেনের একাংশ রুশ সেনার হাতে। যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক যুগে যুগে নির্ধারণ করেছে পৃথিবীর রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্র ও পেরিফেরির শক্তিগুলিকে। বর্তমান ইউক্রেন (Ukraine) সংকটকে তাই খণ্ডতার দর্শনে না বুঝে দেখা প্রয়োজন আন্তর্জাতিক রাজনীতি - রাষ্ট্রনীতির ইতিহাসের সময়রেখা ধরে।

     

    সোভিয়েত ইউনিয়ন 1991 সালে ভেঙে যায় বহুবিধ কারণে। তাই, সোভিয়েত এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মতাদর্শগত কোনও সংঘাত সাম্প্রতিককালের দ্বন্দ্বের বিষয়ও নয়। ‘দি গ্রেট আমেরিকা’ বিগত সাত দশক ধরে লাগাতার সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের নীতি কার্যকর করেছে। মধ্য প্রাচ্যের খনিজ তেলের প্রতি তার শ্যেনদৃষ্টি থেকেছে। কখনও ঠাণ্ডা ঘরে আলোচনার মাধ্যমে, কখনও বা যুদ্ধ করে নিয়ন্ত্রণে এনেছে সৌদি আরব, ইরাক সহ মধ্য প্রাচ্যকে। ওয়ারশ চুক্তি 1991 সালে হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসকবর্গ ক্রমাগত শক্তিশালী করেছে সামরিক জোট ন্যাটো (NATO)-কে। ন্যাটোর পশ্চিমগামী অগ্রসর হওয়ার ধারাবাহিক পরিণতিতে ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতিকে বিবেচনা করা যেতে পারে৷ 

     

    আজকের ইউক্রেন সমস্যার প্রেক্ষিত বোঝা প্রয়োজন বিশ্ব অর্থনীতি- রাজনীতির সাপেক্ষে। 1991 পরবর্তী সময়ে ওয়ারশ চুক্তির আর অস্তিত্ব রইল না। সোভিয়েত চূর্ণ হল মতাদর্শগত দিক থেকে, অর্থনীতি বা ভূখণ্ডের হিসেবেও। একাধারে দুনিয়ার ত্রাতা ও বিভীষিকা হয়ে উঠল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে বুঝে ন্যাটো সামরিক জোটকে আরও শক্তিশালী করার কাজে নামলেন বিল ক্লিন্টন। পূর্ববর্তী ওয়ারশ চুক্তিভুক্ত রাষ্ট্রসহ ইউরোপের ছোট ছোট কম শক্তিশালী দেশগুলিকে ন্যাটোর অধীনে এসেছে। ন্যাটোর এই সম্প্রসারণবাদী প্রক্রিয়া চলেছে বিংশ শতকের শেষ লগ্ন থেকে সাম্প্রতিক কালেও। চেক রিপাবলিক, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড প্রথম পর্যায়ে 1999 সালে যুক্ত হয় ন্যাটো সামরিক জোটে। 2004, 2009 ও 2017 সালে ধাপে ধাপে যুক্ত হয় বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, রোমানিয়া, আলবেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, নর্থ ম্যাসেডোনিয়ার মত একগুচ্ছ রাষ্ট্র। বোঝা প্রয়োজন স্বেচ্ছায় নয়, মার্কিন নিয়ন্ত্রিত বিশ্ব ব্যবস্থায় বেঁচেবর্তে থাকতেই এই বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল দুর্বল রাষ্ট্রগুলিতে। 

     

    অন্যদিকে, পুতিন ক্ষমতায় আসার পর রাশিয়া শক্তিশালী হয়ে থাকে সামরিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিপরীতে রাশিয়া-চিন দ্বৈত শক্তির উদ্ভবেই আজকের পরিস্থিতি। ক্রমশ সম্ভবত আবারও তিন দশক আগেকার মতোই দ্বিমেরু বিশ্বের দিকে এগোচ্ছি আমরা। মতাদর্শগত বা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় উভয়ই ধনতান্ত্রিক, সাম্রাজ্যবাদী। বিরোধ সম্পদের ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে, নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। 

     

    মস্কো, সেন্ট পিটারবার্গ সহ রাশিয়ায় ছোট বড় শহরগুলিতে পথে নেমেছে হাজারে হাজারে মানুষ।  পুতিনের যুদ্ধবাজ মানসিকতার বিরুদ্ধে তার  মতামত রাখছেন বাস্তবে, ভার্চুয়াল মিডিয়াতে।

     

    সার্বিক ভাবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে নির্ধারিত হতে চলেছে আগামীর আন্তর্জাতিক রাজনীতির দ্বন্দ্ব। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধে বিরুদ্ধ কন্ঠ জানান দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় নীতি, সেনা অভিযানের সঙ্গে জনসাধারণের বিরোধ ও দূরত্ব। প্যারাট্রুপার থেকে কোনও এক বসন্তে গোলাপগুচ্ছ ঝরে পড়ার স্বপ্ন এখনও স্বপ্নই রয়ে গেল!

     


    রাতুল গুহ - এর অন্যান্য লেখা


    কাজের জগতে ইংরেজির বিকল্প নেই এই সত্যি কথাটা মানতে না পেরে সোশাল মিডিয়ায় ক্ষেপে উঠল সেন্টিমেন্টাল আত

    করোনায় শিক্ষাবঞ্চিত প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ারা পড়তে চায়, চায় স্কুলে যেতে।

    শ্রীলঙ্কায় কাগজের অভাবে বন্ধ পরীক্ষা, খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানির এমন তীব্র আকাল কখনও দেখেনি সেই দেশ।

    রাজস্থানের করৌলিতে দাঙ্গা পরিস্থিতি, দেশে সর্বত্র হিন্দুত্ববাদের ঘৃণার রাজনীতি চলছে।

    মাধ্যমিকের শূন্য খাতা আরও একবার দেখাল ডিজিটাল ক্লাসরুমের প্রকৃত ছবিটা

    বাংলায় রাজনীতিতে সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনাবলীল তার চিরায়ত অহিংসার ধারণার সঙ্গে একেবারেই মেলে না।

    যুদ্ধক্ষেত্র ইউক্রেন: সাম্রাজ্য বিস্তারের ইতিবৃত্ত  -4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested