প্রতি বছর নিয়ম করে রামনবমীর সশস্ত্র মিছিল বাংলার জেলায় জেলায় নির্মাণ করেছে এক নতুন সংস্কৃতি, যা দেশীয় নয়, স্বাভাবিক নয়। এর বিপরীতে মানুষ আগলে রাখতে বদ্ধপরিকর তাদের সম্প্রীতির সংস্কৃতি।
হিন্দি হিন্দুস্থান হিন্দুত্ববাদের আগ্রাসী বুলডোজার সাম্প্রতিক অতীতে-বর্তমানে বারে বারে হানা দিয়েছে বাংলার বুকে। গোটা দেশের মতোই এই বাংলাও সম্প্রীতির সুদীর্ঘ ঐতিহ্য লালন করে এসেছে তার অন্তরে, মননে। তারই একটি ছোট্ট প্রয়াস দেখা গেল হুগলী জেলার শ্রীরামপুরে।
"ছোট খোকা বলে অ আ,
শেখেনি সে কথা কওয়া।'
ছন্দ মিলিয়ে লেখা সহজপাঠের ছড়ায় বাংলা ভাষায় অক্ষর শেখেনি, এমন শিশু খুঁজে পাওয়া দুষ্কর! বাংলার বহমান চেতনার সঙ্গেই কীভাবে যেন মিশে গেছে রবীন্দ্রনাথের সহজপাঠ। শিশুবেলায় কিংবা জীবন সায়াহ্নে, কখনওই ভোলা যায় না প্রথম জীবনের সাদাকালো ছবি আর ছড়ার যুগলবন্দি। এই চিরাচরিত শিশুপাঠ্যের আদলে এবার নির্মিত হল সম্প্রীতির ছড়া।
কালো কাগজে সাদা অক্ষরে এমনই ছড়া লিখে "বঙ্গ চেতনা পরিক্রমা'য় সামিল হয় শ্রীরামপুর মেলাবাড়ি বস্তির খুদেরা, ছিলেন বস্তিবাসী মানুষ ও নাগরিক সমাজের একাংশ। গত রবিবারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সমানাধিকারে লক্ষ্যে পরিক্রমাটিতে নতুন রূপে নির্মিত হল সহজপাঠের অন্য এক ভাষ্য, বিভাজনের বিরুদ্ধে, সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে।
শিশু কিশোর কিশোরী থেকে পথচলতি মানুষ, সকলের কাছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে এগিয়ে যায় জনা পঞ্চাশ মানুষের ছোট এক ফেরি। কেউ সেজেছে লালন ফকির, কেউ বা বিপ্লবী প্রীতিলতা, কিশোর কবি সুকান্ত। বাংলার চিরন্তন ভালবাসার প্রতীক রাধা কৃষ্ণও সেজেছিল দুই খুদে। এভাবেই শিশু, কিশোর-কিশোরীরা সামিল হয়েছিল গত 17 এপ্রিলের বাংলা নববর্ষের উদযাপন হল সম্প্রীতির পদযাত্রায়। সাম্প্রদায়িক শক্রকে রুখতে ছেলেমেয়েরা পোস্টার হাতে পথ হাঁটল সম্প্রীতির সহজপাঠ নিয়ে।
অ আ
"অতসী দিদি মাঠে বোনে ধান,
আনোয়ার ভাই পাশে বসে বেঁধেছে বাউল গান।'
ই ঈ
"ইফতারে যায় পড়শি বাড়ি পাড়ার দুগ্গা দিদি,
ঈদের দিনে মিলবে সবাই পার হয়ে এক নদী।'
আরও পড়ুন:অসুস্থ স্বাস্থ্যসাথী
উ ঊ
"উমাপতির ঘর ভেসে যায় আষাঢ় মাসের শেষে,
ঊনিশ দিন কাজ না পেয়ে শামিম ভুখা পেটে।'
এ ঐ
"এ সময়ে শুধুই ওঠে বিভাজনের বাক্য,
লড়ব মোরা একসাথে আর গড়ব মোদের ঐক্য।'
ও ঔ
"ওই যে কালো মেঘের মাঝে ঝলমলালো সূর্য,
হিংসা,দ্বেষ কাটিয়ে আসুক মনের ঔদার্য্য।'
এই দেশে, এই বাংলায় ঘরে কিংবা ইস্কুলে শিশুরা পাক এমনই সম্প্রীতির পাঠ। মুসলমান পড়শির বস্তি ভাঙতে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র বুলডোজার পাঠালে তা রুখতে হাত ধরুক অতসী আর আনোয়ার, উমাপতি আর শামিম।
দারাং জেলায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যা ও উচ্ছেদের প্রেক্ষাপটে রয়েছে একাধারে জমির অধিকারের প্রশ্ন
গবেষক হলেও দলিত তো! বদলায় না নির্মম ইতিহাস।
প্রতি দিনের রেলযাত্রা যেন এঁকে দেয় জীবনেরই জলছবি। বুনে চলে পাওয়া না-পাওয়ার আখ্যান।
বন্ধু বা আস্থাভাজন সঙ্গীর দ্বারা ধর্ষণের প্রবণতা সাম্প্রতিক কালে ক্রমবর্ধমান হচ্ছে ভারতের সমাজজীবনে।
মরিচঝাঁপির দলিত উদ্বাস্তু গণহত্যার চাপা পড়া ইতিহাস আজও প্রাসঙ্গিক
সাম্প্রদায়িক বিভাজনের নয়া ময়দান কুতুব মিনার