দেওয়ানগঞ্জের (Deoanganj) আদিবাসী নারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়লেন ক্যামেরার সামনে। তাঁরা বললেন, ""কিচ্ছু চাই না আমরা। কীসের দেউচা পাঁচামি? কীসের মিছিল?'' স্পষ্টতই জানালেন, তাঁরা কিচ্ছু চান না। যেমন আছেন তেমনই থাকবেন। নিজেদের খাবেন। এখানেই থাকবেন।
পরিস্থিতি ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হচ্ছে দেউচা পাঁচামির লালভূমে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেউচায় প্রকল্পের প্যাকেজ ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘দেউচা পাঁচামি (Deucha Panchami) সিঙ্গুর হবে না।’’ কিন্তু, আদিবাসীদের একাংশ যখন আপত্তি তুলছেন দেউচায় কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে, তখন তৃণমূল তার ‘মেশিনারি’ নিয়ে নেমে পড়েছে। আদিবাসীরাও অনড় তাঁদের অবস্থান থেকে৷ নিজেদের জমি, ভিটের বিনিময়ে কোনও প্রকল্প চান না তাঁরা।
তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) কয়লাখনি প্রকল্পের সমর্থনে সম্প্রতি মিছিল নিয়ে বেরতেই পথরোধ করেন আদিবাসী নারীরা। ঝাঁটা, কুঠার হাতে তাঁরা প্রকল্পের সমর্থনে মিছিলকারীদের আটকান। তৃণমূল কর্মীদের উপর চড়াও হয়ে ছিঁড়ে ফেলেন ফেস্টুন, পোস্টার। তৃণমূল কর্মীদের উদ্ধার করতে এসে পুলিশ আদিবাসীদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। আক্রান্ত হন আদিবাসী নারীরা৷ অভিযোগ আসে, আক্রান্ত আদিবাসীদের হাসপাতালে যাওয়ার পথ আটকায় পুলিশ বাহিনী। গভীর রাতে বাইকে চড়ে গোপনে হাসপাতালে পৌঁছন তাঁরা।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে বহিরাগত (outsiders) ইন্ধনের অভিযোগ করা হচ্ছে। বাস্তবের ঘটনাপ্রবাহে দেখা যাচ্ছে, এলাকায় আদিবাসী জনগণই এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করছেন। কোনও বহিরাগত নন। ভিটে-জমি থেকে উচ্ছেদিত হয়ে তাঁরা কয়লাখনি চান না।
আরও পড়ুন: দেউচা কতটা আলো, কতটা কালো?
গত শনিবারও প্রকল্পের অধীনে চাকরির ফর্ম বিলির কর্মসূচির দিন মিছিল করেন স্থানীয় আদিবাসীরা। স্লোগান তোলেন পুলিশি জুলুমের বিরুদ্ধে, কয়লা খনির বিরুদ্ধে। ‘বহিরাগত তত্ত্ব’-কে ঢাল করাই শাসকের অভ্যাস। এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর মনে রাখা প্রয়োজন অতীতের বিরোধী রাজনীতির দিনগুলি। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের আন্দোলনের ক্ষেত্রে বহু সংগঠকের মতো ‘বহিরাগত’ ছিলেন তিনিও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলপূর্বক জমি অধিগ্রহণ না করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এলাকায় চলছে শাসানি, ভীতিপ্রদর্শনের ‘মেশিনারি’। ভারত সরকারের আইন বলছে, কোনও এলাকায় সরকার জমি অধিগ্রহণ করলে তার আগে অধিবাসীদের মধ্যে জনশুনানির প্রক্রিয়া নিতে হয়। কয়লাখনি প্রকল্পের বিপরীতে যখন অনিচ্ছুক আদিবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, তখন কেন হচ্ছে না জনশুনানি? তবে কি বাংলায় জমি অধিকার আন্দোলনে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের, ভাঙড়ের পরবর্তী বিন্দু দেউচা পাঁচামি? এর উত্তর ভবিষ্যতের গর্ভে। সমসাময়িক ইতিহাস বলছে, জমি অধিগ্রহণের প্রশ্নে জনমত অস্বীকার করে কোনও শিল্পোদ্যোগ দিনের আলো দেখেনি।
বেকারত্বে জীর্ণ দেশের যৌবন, বিক্ষুব্ধ কর্মপ্রার্থীরা পথে নামছেন দেশের নানান প্রান্তে
সাম্প্রদায়িক হিংসার বাতাবরণে শ্রীরামপুরে অনুষ্ঠিত হল সম্প্রীতির লক্ষ্যে পদযাত্রা
বাংলায় রাজনীতিতে সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনাবলীল তার চিরায়ত অহিংসার ধারণার সঙ্গে একেবারেই মেলে না।
করোনায় শিক্ষাবঞ্চিত প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ারা পড়তে চায়, চায় স্কুলে যেতে।
রেলস্টেশনের চাতালে লকডাউনে স্কুলছুট কিশোরী রুকুর জীবন যেন সভ্যতার প্রদীপের তলার পোড়া পিলসূজ।
এপ্রিলে দেশের বেকারত্বের হার ছুঁলো 7.83 শতাংশ, কর্মক্ষেত্রে সংকট ক্রমশ উর্ধ্বমুখী