×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • হীরালিনী দুর্গোৎসব: অনুষ্ঠান বাতিল, মন খারাপ বোলপুরের

    রজত কর্মকার | 28-10-2020

    লালমাটির মাঝে কালো সাপের মতো পথ। সভ্যতার চিহ্নে রুখা জমি খানিক শহুরে নকল পেলবতা পেয়েছে। গত বছর পর্যন্ত যে সোনাঝুরির জঙ্গলে ঢোকার আগে থেকেই ডুম ডুম ডুম...ধিতাং...ডুম ডুম ডুম... মাদলের আওয়াজ ভেসে আসত, সেখানে এ বছর নিঝুম-নিস্তব্ধ সোনাঝুরি হাটের আগেই বাঁ দিকে লাল মাটির রাস্তা নেমে গিয়েছে। তারই শেষ প্রান্তে হীরালিনী দুর্গোৎসব আদতে আদিবাসীদের মহোৎসব হয়ে উঠত। কিন্তু করোনার কালো গ্রাসে এ বছর সবই গিয়েছে। না রয়েছে বিক্রেতাদের পসার, না হয়েছে মেলা, বাতিল হয়েছে বাউল গান থেকে ছৌ নাচের অনুষ্ঠানও। তাই শারদীয়াতে মন খারাপের মোড়কেই ছিল বোলপুর।

     

    যারা শহর কলকাতার দুর্গাপুজোতে ঘুরে পায়ে ফোস্কা ফেলেন, তারা কোথাও না কোথাও নিশ্চয়ই স্বেচ্ছাচারী সেবকের হাতে নাজেহাল হয়েছেন। সোনাঝুরিতেও অনেক সেবক ছিলেন, কিন্তু তাঁরা কেউই স্বেচ্ছাচারী ছিলেন না। গাড়ি পার্কিং থেকে লাইন করে পুজোর মণ্ডপে পৌঁছনো, গোটা বিষয়টি অভিভাবকের মতো দেখাশোনা করছিলেন তাঁরা। এঁরা সকলেই স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। আসলে এই পুজোটা তো ওদেরই। তাই করোনার আবহে যতটা সতর্ক থাকা যায়, তার সব চেষ্টা করেছেন ওরা।

     

     

    2001 সালে শিল্পী বাঁধন দাসের হাত ধরে হীরালিনী দুর্গোত্সব এবং মেলার সূচনা। তার পর ধীরে ধীরে কলেবরে অনেকটাই বেড়েছে এই পুজো। পুজোতে প্রথম থেকেই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন যুক্ত ছিলেন। এখন রাজ্যের গণ্ডি টপকে তা ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত গ্রামে ছড়িয়ে গিয়েছে। সেখান থেকেও বহু আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিবছর আসেন এখানে অংশ নিতে। পুজোর প্রত্যেক দিন সাঁওতালি নাচ-গান-যাত্রায় মুখরিত হয়ে ওঠে সোনাঝুরি ও বল্লভপুরের জঙ্গল। মূর্তি তৈরি থেকে পুজোর জোগাড়, মেলার ভিড় সামলানো, সবই নিপুণ দক্ষতার সঙ্গে করেন ওরা। তবে এ বছর মেলা বা অনুষ্ঠান না হওয়ায় পুজোর আবহ খানিক ফিকেই ছিল।

     

    পুজোর মূল উদ্যোক্তা প্রয়াত বাঁধন দাসের ইচ্ছে অনুযায়ী, প্রথম পাঁচ বছর মাটি, কাঠ, বাঁশ, লোহা দিয়ে তৈরি প্রতিমাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করা হয় পুজোতে। প্রাকৃতিক সম্পদ অপব্যবহার না করে তা পুনর্ব্যবহার করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। সে প্রথাই চলে আসছে গত দু’দশক ধরে।

     

    প্রকৃতির মাঝে থাকেন বলেই ওরা এর মর্ম বোঝেন। তাই প্রকৃতিকে কখনও টেকেন ফর গ্রান্টেড হিসাবে ধরেন না। পুজোর মধ্যে দিয়ে সকলকে এই বার্তাও দিচ্ছেন ওরা– উপাসনা এবং প্রকৃতি প্রেম আলাদা নয়। প্রকৃতি না বাঁচলে বাঁচবে না কেউই। বার্তা দিচ্ছেন ওরা।

     

     


    রজত কর্মকার - এর অন্যান্য লেখা


    যারা আমায় মনের মধ্যে রাখতে পারে না, তারাই চিৎকার করে আমার ভক্ত বলে পরিচয় দেয়।

    আমিও তোমায় অভিশাপ দিচ্ছি, ঢপেন্দ্র ছোদ্দা, তুমিও 56-র গেরোয় আটকে যাবে বারবার।

    প্রয়োজন না থাকলেও একটু বেশিই মাছ কিনে ফেললাম। বাবা হিসাবে আর এক সন্তানের জন্য এটুকু তো করা যেতেই পার

    স্টেশনে পুলিশের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রত্যেক যাত্রীর ই-পাস দেখে তবেই স্টেশনে প্রবেশের অনুমত

    দেশে ভূতের সংখ্যা কম নেই, তাদের মুখে রাম নামেরও বিরাম নেই। এমন পরিস্থিতিতে রামায়ণই আদর্শ ধারাবাহিক।

    পোধানমন্তীর ডাকে সাড়া দিয়ে ঘটি-বাটি-খোল-করতাল-কাশি-বাঁশি সব নিয়ে দলবল-সহ বেরিয়ে পড়েছিলেন রাস্তায়।

    হীরালিনী দুর্গোৎসব: অনুষ্ঠান বাতিল, মন খারাপ বোলপুরের-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested