×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • ‘জয় করোনা’ মোচ্ছবের মেনু গোময়-গোমূত্র

    রজত কর্মকার | 16-03-2020

    মধ্যমণি স্বামী চক্রপাণি। পেছনে করোনো-র পোস্টার দেখা যাচ্ছে।

    ভাঁড়ে ভাঁড়ে ঠোকাঠুকি। সুরুত করে এক চুমুক মেরেই আরামে চোখ বুজে আসছে সকলের। মাইকে গান-বাজনা, ভজন-কীর্তন চলছে। সুসজ্জিত পাত্রে রাখা গাঢ় খয়েরি রঙের ‘মহাপ্রসাদ’ও রয়েছে। ভক্তদের তো আর অভুক্ত রাখা যায় না।

     

    আরও পড়ুন: আরে মাটি লাও... করোনা ভাইরাসের মূর্তি হবে

     

    আপনারা এটুকু পড়েই ভাবলেন, এ কোনও মঠ, মন্দিরের ইভেন্ট। যেখানে ভক্তরা নামগান এবং প্রসাদ বিতরণ করছেন। শেষের ব্যাপারটি রয়েছে। তবে এখানে খানিক টুইস্ট রয়েছে। সম্প্রতি দিল্লিতে হিন্দু মহাসভা ‘ভগবানের অবতার করোনা ভাইরাস’ থেকে বাঁচতে গোমূত্র পার্টি অরগ্যানাইজ করল। যেমন কথা, তেমন কাজ। একেবারে সাচ্চা ভদ্রলোক স্বামী চক্রপাণি। বলেছিলেন মূর্তি বানিয়ে পুজো করবেন, করলেন। বলেছিলেন গোবর এবং গরুর হিসু সেবন করলে রোগ দূরে পালাবে, সেটাও সকলের সঙ্গে ভাগ করে খেলেন। খেতে খেতেই মন্ত্র উচ্চারিত হল, ‘করোনা শান্ত হো...’।

     

     

    বিশ্বের লাখো লাখো ল্যাবে কোটি কোটি বিজ্ঞানী মাখা খুড়ে মরেও করোনা-র অ্যান্টিভাইরাস আবিষ্কার করতে পারেননি। হুঃ, তাঁদের কেউ আমাদের দেশি গরুর হিসুর গুণের খবর দেয়নি। আগে জানলে এত্ত মানুষ মারা যেত না। তবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের নেতাদেরও বোধহয় গোমূত্রের গুণাবলী সম্পর্কে কেউ জানায়নি। না হলে বেঙ্গালুরুতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ওরা বাতিল করতে না। এরা খামোখাই ভয় পাচ্ছে। হাতের সামনে অমৃত থাকতেও খুঁজে মরে ক্ষ্যাপা!

    করোনা কেমন দেখতে তারও বেশ কিছু পোস্টার বানিয়ে টাঙানো রয়েছে। আরে যা নিয়ে গোটা বিশ্বের মানুষের হাড়ে কাঁপুনি ধরেছে তা আদপে কেমন তা-ও দর্শন করতে পারছেন আগত ভক্তরা। চক্রপাণী-র আশপাশে বেশ কয়েকজন মাঝারি মাপের নেতাদেরও উপস্থিতি ছিল। তাঁরাও জানালেন, এত প্রাণী হত্যা ধম্মে সইল না। দিনগুলিও সোনার খাঁচায় রইল না। এখন বাঁচতে চাইলে ঢকঢক করে গোমূত্র পেটে চালান করুন সকলে। সকাল বিকেল ঠান্ডা ঠান্ডা গোবরও হাফ কিলো করে দই ভেবে সাটিয়ে দিন। ব্যস, করোনা দেবতা সন্তুষ্ট। তার পর গন্ডা গন্ডা মানুষ মারলেও কোনও পাপ লাগবে না।

    এই যেমন দেখুন না, দিল্লিতে গেরুয়া ফেট্টি বেঁধে কেমন মানুষ মারার খেলায় মেতেছিল কত লোক। খোঁজ নিলে হয়তো দেখা যাবে এঁদের মধ্যে ৯৯ শতাংশ মানুষই আমিষ ছোঁয় না। মাছ-মাংস খাওয়া মহাপাপ কিনা! কিন্তু মানুষ মারলে কোনও দোষ নেই। মানুষের মাংস তো আর খাওয়া হচ্ছে না। এটা মন থেকে অনুভব করার বিষয়। তলিয়ে না ভেবে খামোখা চেঁচামেচি করে লোকজন।

     

    তবে ওসব নিয়ে আপনারা মাথা ঘামাবেন না। হিসু সেবন চালিয়ে যান। চিয়ার্স।

     

     


    রজত কর্মকার - এর অন্যান্য লেখা


    যারা গণধর্ষণে অভিযুক্ত, যারা দু’ জন মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলার উপক্রম করেছিল, তারা জামিন পায় কী ভাবে?

    আমিও তোমায় অভিশাপ দিচ্ছি, ঢপেন্দ্র ছোদ্দা, তুমিও 56-র গেরোয় আটকে যাবে বারবার।

    দেশের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে, তাদের তো গুলি করেই মারা উচিত, তাই না?

    পেটের জ্বালায় মায়ের বুকে হয়তো একটু আশ্রয় খুঁজছিল শিশু মন।

    দেশে ভূতের সংখ্যা কম নেই, তাদের মুখে রাম নামেরও বিরাম নেই। এমন পরিস্থিতিতে রামায়ণই আদর্শ ধারাবাহিক।

    বিগত সাড়ে তিন দশক ধরে চেরনোবিল সারা বিশ্বের বহু মানুষের কাছে কৌতুহলের বিষয়। ঠিক কী হয়েছিল সে রাতে?

    ‘জয় করোনা’ মোচ্ছবের মেনু গোময়-গোমূত্র-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested