এই সমাজের বদল চান? ২
সারা শরীর রক্তাক্ত। অসম্ভব শীতের রাতে প্রীতমের গায়ে এক টুকরো সুতোও ছিল না। পাঁচজন মেয়ে খুবলে খাওয়ার পর প্রীতম ও তাঁর বান্ধবী রিয়াকে চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল রাস্তার ধারে। রাস্তা থেকে তুলে যখন প্রীতমকে হাসপাতালে ভরতি করা হল, তখন ও বাঁচবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। চিকিত্সকদের অক্লান্ত চেষ্টায় বেঁচে যায় সে। পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে দিন দশেক সময় লেগেছিল পুলিশের। পেশায় তারা কেউ খালাসি, কেউ বাসচালক, কেউ হেল্পার। বিচারাধীন হলেও নামগুলো প্রকাশ্যে এসেছিল। অনিতা সিং, পদ্মা পাসোয়ান, জানকী ঠাকুর, সুনীতা সিং এবং গুড্ডি কুমারী।
এদের মধ্যে গুড্ডির বয়স ছিল সবচেয়ে কম। পুলিশের খাতা অনুযায়ী সতেরো থেকে আঠারো হতে সে সময় ১২ দিন বাকি ছিল। যদিও তা নিয়ে কোনও অকাট্য প্রমাণ দাখিল করা যায়নি। তদন্তে উঠে আসে, রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বান্ধবী রিয়ার সঙ্গে বাড়িতে ফিরছিল প্রীতম। জমজমাট রাস্তা থেকে বাসে ওঠে ওরা। কিন্তু সেই বাসযাত্রা প্রীতমকে প্রায় মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়েছিল। বাসের মধ্যেই অভিযুক্তরা ওকে বেধড়ক মারধর করে। তার পর শুরু হয় গণধর্ষণ। মারের হাত থেকে পার পায়নি রিয়াও। বয়ান অনুযায়ী, রিয়া প্রীতমকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সকলে। গুড্ডিই নাকি অভিযুক্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিংস্র ছিল। চলন্ত বাসে ধর্ষণ করার পর নগ্ন করে রিয়া এবং প্রীতমকে রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে চলে যায়। ধর্ষণের পর প্রীতমের নিতম্বে একটা লোহার রড বেশ কয়েকবার প্রবেশ করায় অভিযুক্তরা। মুখে কাপড় গুজে সেই আওয়াজ আটকালেও, হাসপাতালে যন্ত্রণার চিত্কার আটকানো যায়নি।
আরও পড়ুন: এই ধর্ষণ আর কত দিন? প্রশ্ন অমিতের
অনেক কষ্টে প্রাণ বাঁচানো গেলেও, শরীরের ক্ষত সারতে দীর্ঘ কয়েক মাস লাগে প্রীতমের। এর মাঝে পুলিশ চার্জশিট পেশ করে। শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। কয়েকবার প্রীতমের কাছে পুলিশ এসে জবানবন্দি নিয়ে গিয়েছে। প্রায় ৭ মাস পর একটু একটু করে হাঁটতে শুরু করে প্রীতম। ওর বাবার নিরন্তর সেবায় ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে এগিয়ে যায় প্রীতম। মা পুলিশ-আদালত সব সামলান।
কোনও অজ্ঞাত কারণে ৯ মাস বাদে একটি শুনানিতে জামিন পায় অভিযুক্তরা। গুড্ডিকে আগেই জুভেনাইল হোমে পাঠানো হয়। এর পর থেকেই শুরু হয় হুমকি। কখনও প্রীতমকে মেরে ফেলার। কখনও তার পরিবারকে। তবে কোনও কিছুতেই দমেননি ওঁরা। অক্টোবরের এক সকালে ডাক্তারের চেম্বারে যাওয়ার পথে প্রীতমের রাস্তা আটকে দাঁড়ায় কয়েকজন মুখ ঢাকা মেয়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চারজনই অ্যাসিড বাল্ব ছুড়ে বাইকে চেপে পালিয়ে যায়। ফের একবার যন্ত্রণায় কুঁকড়ে রাস্তায় শুয়ে পড়ে প্রীতম।
ডাক্তারি পরীক্ষার পর দেখা যায়, তার দু’টি চোখই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দেহের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে গভীর ক্ষত। প্রীতমের মা আদালতে দাঁড়িয়ে বার বার দাবি করেন, অভিযুক্তরাই এই জঘন্য অপরাধ করেছে। তবে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। তিন মাস কেটে গিয়েছে। এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে প্রীতম।
শরীর পঙ্গু হলেও মনটা এখনও সচল প্রীতমের। যত ক্ষণ ওর জ্ঞান থাকে, ভাবে, যারা গণধর্ষণে অভিযুক্ত, যারা দু’ জন মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলার উপক্রম করেছিল, তারা জামিন পায় কী ভাবে? আইনের হাত নাকি অনেক লম্বা, এমনটাই সে শুনেছে ছোটবেলা থেকে। তবে সেই হাত থেকে বার বার জামিন ফস্কে যায় কী ভাবে? প্রীতমের পুড়ে যাওয়া ক্ষতের মতোই জ্বলন্ত সেই প্রশ্ন।
আপনারা কী বলেন?
দেশে ভূতের সংখ্যা কম নেই, তাদের মুখে রাম নামেরও বিরাম নেই। এমন পরিস্থিতিতে রামায়ণই আদর্শ ধারাবাহিক।
দেশের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে, তাদের তো গুলি করেই মারা উচিত, তাই না?
৫ জানুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখ ঢাকা গুন্ডাদের আক্রমণের পর এ ভাষায় গর্জে
2018 সালে সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনায় চতুর্থ গ্রাম হিসাবে দোমারি-কে দত্তক নেন নরেন্দ্র মোদী।
আমরা হয়তো দেখতে পাইনি, কিন্তু এই অভুক্ত মানুষগুলো গোলাপি চাঁদকে একটা গোটা রুটিই দেখেছে।
বিরাট অর্থনৈতিক ক্ষতে আপাতত মলমের কাজ করছে ওয়ার্ক ফর্ম হোম।