×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • ফেলো কড়ি কেনো খবর, দাবি গুগলের কাছে

    বিতান ঘোষ | 27-02-2021

    প্রতীকী ছবি।

    করোনা মহামারীর প্রকোপ এবং দীর্ঘ লকডাউনে আর পাঁচটা শিল্পের মতোই সংবাদপত্রগুলিও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। সেই ধাক্কা এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা। তার পর বহু অর্থ, পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের বিনিময়ে পাঠকদের কাছে খবর পৌঁছে দিলে, লাভের মুখ দেখতে পারছে না সংবাদপত্রগুলোসংবাদপত্রগুলির দাবি বিশ্বের বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন,বহুজাতিক গুগল যেভাবে বিনামূল্যে পাঠকদের কাছে সংবাদ পৌঁছে দিচ্ছে, তাতে আর্থিক লোকসানের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। এই নিয়েই সংবাদপত্রগুলির তরফে ইন্ডিয়ান নিউজপেপার সোসাইটি (INS) গুগলকে তাদের প্রাপ্য লভ্যাংশ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।



    গুগলের ভারতীয় অধিকর্তা সঞ্জয় গুপ্তকে লেখা চিঠিতে INS-এর সভাপতি এল আদিমূলম জানিয়েছেন, তথ্যনিষ্ঠ এবং বিশ্বাসযোগ্য সংবাদ সংগ্রহ এবং তা পরিবেশনের জন্য যথেষ্ট অর্থ এবং মেধার প্রয়োজন। তার জন্যই সংবাদপত্রগুলি বিপুল অর্থ ব্যয় করে সাংবাদিক নিয়োগ করে। কিন্তু আজকের নেট দুনিয়ায় পাঠকরা এই সমস্ত খবর সম্পূর্ণ নিখরচায় পড়ে ফেলেন। ফলে বিজ্ঞাপনী আয়ের সুবাদে গুগল লাভের মুখ দেখলেও, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সংবাদপত্রগুলি।



    আদিমূলম তাঁর চিঠিতে আর একটি বিষয়েও জোর দিয়েছেন। তাঁর মতে, ভারত সহ গোটা বিশ্বে যেভাবে ভুয়ো খবর বা ফেক নিউজের রমরমা বাড়ছে, তাতে প্রতিষ্ঠিত এবং নথিভুক্ত সংবাদপত্রগুলির সংবাদের পর আরও বেশি নির্ভরশীল হওয়া উচিত। আদিমূলম স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, সংবাদপত্রে যেভাবে গুণমানের সঙ্গে আপস না করে, যে কোনও বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী এবং তথ্যসমৃদ্ধ খবর করা হয়, তা সংবাদের অন্যান্য মাধ্যম, বিশেষত অনলাইন মাধ্যমে হয় না। তাঁর মতে, গুগলের উচিত ভুয়ো ই-পোর্টালের বিকৃত খবরকে পাঠকদের সামনে হাজির না করে, সংবাদপত্রের খবরগুলিকে আরও বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া।



    প্রসঙ্গত, ভারতের সংবাদপত্রগুলি এখনও তাদের সংবাদ অনলাইনে পরিবেশন করার জন্য গুগলকে ছাড়পত্র দিয়ে রেখেছে। এবার সংবাদপত্রগুলির তরফে গুগলে সেই খবরের বিজ্ঞাপন বাবদ আয়ের অন্তত 85% দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। গত একবছরে সংবাদপত্রগুলির বিজ্ঞাপন বাবদ আয় কমেছে, করোনাভীতির কারণে সার্কুলেশনও কমেছে। এই পরিস্থিতিতে অনেক সংবাদপত্র ই-পেপারের মাধ্যমে পাঠকদের কাছে পৌঁছতে চাইলেও, গুগলের সাহায্যে অনেকেই বিনামূল্যে খবর পড়ছেন।



    এই প্রসঙ্গে প্রবীণ সাংবাদিক রজত রায় বলছিলেন, ‘খাদ্য, বস্ত্র কোনও কিছুই যখন আমরা বিনামূল্যে পাই না, তখন খবরটাও তো আমাদের পয়সা দিয়েই কেনা উচিত। ন্যূনতম একটা মূল্য না দিলে সংবাদপত্রগুলি চলবে কীভাবে?’ প্রায় অনুরূপ মন্তব্য আর এক সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ীরও। তাঁর মতে, ‘আবহাওয়া কিংবা জোয়ার-ভাটার খবর ছাড়া তদন্তমূলক, বিশ্লেষণধর্মী সংবাদ পড়তে হলে পাঠকদের ন্যূনতম একটা টাকা দেওয়া উচিত। কেননা, এইরকম খবর করতে, যথেষ্ট পরিশ্রম এবং অর্থ লাগে।' তবে, একইসঙ্গে তিনি জানালেন, ‘দেশের অনেক সংবাদপত্রই এখন সামান্য একটা অর্থের বিনিময়ে তাদের খবর পড়তে দেয়। অনেক সংবাদপত্র এখনও বিনামূল্যেই সেই সুযোগ দিয়ে আসছে। এটা নির্ভর করে সেই সংবাদপত্রের আর্থিক সঙ্গতি কতটা, তার ওপর। কিন্তু, গুগল যদি সংবাদপত্রের খবর দিয়ে নিজেরা মুনাফা করে, তাহলে সেই মুনাফার অংশীদার সংবাদপত্রগুলিকেও করা উচিত।'



    সম্প্রতি অষ্ট্রেলিয়ার আইনসভায় সংবাদপত্র আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সংবাদ পরিবেশন করতে হলে গুগলকে সংশ্লিষ্ট সংবাদদাতা সংস্থাকে টাকা দিতে হবে। বর্তমানে ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ভুক্ত দেশগুলিতেও গুগলকে এই নিয়ম মেনে চলতে হয়। এবার বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের তরফেও আর্জি জানানো হল, অর্থের বিনিময়েই পাঠকদের খবর পড়ার অধিকারকে সুনিশ্চিত করুক গুগল


    বিতান ঘোষ - এর অন্যান্য লেখা


    মহাভারতের অর্জুন রামায়ণের রামচন্দ্রকে হারিয়ে ফিরে এলেন পুরনো রাজনৈতিক আশ্রয়ে।

    নীলকন্ঠ পাখি ওড়াতে গিয়ে যারা নীলকন্ঠ হল যারা, তাদের প্রণাম।

    শিল্পীর শিল্পে সমকাল ধরা পড়লে, শাসক সর্বদাই ভয়ে থাকে।

    বাঙালির ঘরের উমা যে আটপৌরে শাড়ি পরে, জীবনযুদ্ধে লড়ে যেতে পারে, সমাজের শত শত দুর্গা যে এভাবেই বাঁচে।

    রাজনীতির হরিদাসদের অনৃতভাষণ আর চমকদারিতে ঢাকা পড়ে যায় হরিচাঁদ ঠাকুর এবং তাঁর সমাজ সংস্কার আন্দোলন।

    বিশ্বের পুরুষ প্রধানরা আজ সঙ্কটের দিনে যখন দিশাহীন, তখন সঠিক পথ দেখাচ্ছেন মহিলা রাষ্ট্রপ্রধানই।

    ফেলো কড়ি কেনো খবর, দাবি গুগলের কাছে-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested