×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • আগে ঘণ্টা বাজাননি, করোনা তাড়িয়ে নাচলেন জেসিন্ডা

    বিতান ঘোষ | 17-06-2020

    করোনা মোকাবিলায় বিশ্বের বড় রাষ্ট্রগুলি যখন কার্যত দিশাহীন তখন প্রশান্ত মহাসাগরের এক ছোট দ্বীপরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড নিজেদের করোনামুক্ত ঘোষণা করে বাকি বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল। দেশে করোনায় আক্রান্ত শেষ রোগীটির সুস্থ হওয়ার খবর দিতে এসে রীতিমতো আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন। তিনি বলেছিলেন, খবরটা পেয়ে তিনি ঘরের মধ্যেই দু’পাক নেচে নিয়েছিলেন। যদিও গত 17ই জুন নিউজিল্যান্ডে নতুন করে দুজন করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। ইংল্যান্ড ফেরত দুই মহিলার দেহে এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়ার পরই কিন্তু নড়েচড়ে বসে সে দেশের প্রশাসন। অভিযোগ ওঠে বিদেশ ফেরত এই দুই ব্যক্তির ক্ষেত্রে যথেষ্ট কোয়ারেন্টাইন বিধি পালন করা হয়নি। কালবিলম্ব না করে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তদন্তের নির্দেশ দেন আর্ডেন। এদের সংস্পর্শে আসা 320 জন ব্যক্তিকে দ্রুত চিহ্নিত করে তাদের কোয়ারেন্টাইন ও পরীক্ষা করোনোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বোঝাই যাচ্ছে, এই ব্যাপারে তিনি বিন্দুমাত্র আপস করতে রাজি নন। মহামারী মোকাবিলায় এই আপসহীন মনোভাব কি বিশ্বের ‘বলশালী’ রাষ্ট্রপ্রধানরা দেখাতে পেরেছেন? আমেরিকা বা ভারত করোনামুক্ত হলে ট্রাম্প বা মোদীও কি অর্ডেনের মতোই এক চক্কর নেচে নিতেন? জানা নেই, কিন্তু ব্যাপারটা কল্পনা করা একটু কঠিন।

     

    জেসিন্ডা কিন্তু নিছক নেচেই দেশকে করোনামুক্ত করেছিলেন, এমনটা কিন্তু নয়। গত 3রা ফেব্রুয়ারি থেকেই নিউজিল্যান্ড সমস্ত রকম আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ রেখেছিল। 28শে ফেব্রুয়ারির পর থেকে সেখানে লেভেল 3পর্যায়ের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। 50 লক্ষ মানুষের আবাসস্থল এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে প্রায় 24 লক্ষ মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, নিউজিল্যান্ডের করোনা-প্রতিহত করার পিছনে প্রধানতম কারণটি হল, সেখানকার প্রশাসনের সদিচ্ছা ও মহামারী প্রতিরোধে স্বচ্ছতা। আর্ডেন ঠিক কী উপায়ে করোনাকে প্রতিহত করতে চান, তা আগাগোড়া দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। বাকি বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রপ্রধান যেমন এর বিরুদ্ধে কোনও সুস্পষ্ট অবস্থান নিতে পারেননি, নিউজিল্যান্ডে অন্তত তেমনটা হয়নি। তাই তারা আজ করোনাকে রুখে দিতে অনেকটাই সফল প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা নাচেন, এবং কাজের কাজও করেন।


    ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসবাদী হামলার সময় দায়িত্বশীল ও সংযমী প্রশাসক হিসাবে যিনি নিজের প্রশাসনিক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন, সেই আর্ডেনই যখন নিজের দেশে করোনাকে প্রায় রুখে দিলেন, চারদিকে আলোচনা শুরু হল। একটা পুরনো বিতর্ক হঠাৎ নতুন করে চর্চিত হতে শুরু করল যে, কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলায় মহিলা প্রশাসকরা কি পুরুষদের থেকে বেশি সফল? কিন্তু সফল হলেও কেই বা তাদের হাতে সেই দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছে? পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কাছে তার ভূমিকা তো এখনও কয়েকটা নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আবদ্ধ। সে ‘ঘরনী', সে ‘সংসারী', সে ‘সন্তানপালক'মুসোলিনি থেকে হালের ট্রাম্প এই ধারণায় বিশেষ ব্যত্যয় ঘটেনি। কলম্বিয়া বিজনেস স্কুলের নেতৃত্ব ও নীতিবিদ্যার অধ্যাপিকা ক্যাথরিন ডাবলিউ ফিলিপস একটি পরিসংখ্যান থেকে দেখাচ্ছেন, 1950 থেকে 2004, বিশ্বে 54 বছরের মানব ইতিহাসে 188টি দেশের মধ্যে মাত্র 48টি দেশে মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। 2017-এর আর একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, বিশ্বের বিভিন্ন সংসদে মহিলা প্রতিনিধির সংখ্যা মাত্র 23.3 শতাংশ। লিঙ্গসাম্যের পক্ষে এই অন্ধকারময় বাস্তবতার সামনে কিঞ্চিৎ রুপালি রেখা এই যে, গত শতাব্দীর তুলনায় এই মহিলা প্রতিনিধিত্বের হার 6.5 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু, মোটের ওপর রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণে যে নারীরা এখনও সমান সুযোগ সুবিধা পাননি, তার ভুরিভুরি উদাহরণ রয়েছে।

    পুরুষ রাষ্ট্রপ্রধানদের পাশে তাঁদের স্ত্রী তথা ফার্স্ট লেডিদের উপস্থিতি যতই নজরকাড়া হোক, আসলে এর পিছনেও তাদের ‘শোম্যানশিপ'-এর একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সুন্দরী স্ত্রী সেক্ষেত্রে তাঁর পৌরুষের বিজ্ঞাপন। আমাজনের জঙ্গলে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ড নিয়ে যখন সারা বিশ্ব তোলপাড়, তখন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ টুইট করে বলেছিলেন, "আক্ষরিক অর্থেই আমাদের বাড়িটা জ্বলছে।‘ তার প্রত্যুত্তরে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বোলসেনারো বলেছিলেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট নাকি আমাজন নিয়ে এক বড়সড় চক্রান্তের অংশীদার এবং এই চক্রটা নাকি ব্রাজিলকে 'উপনিবেশ' বানাতে চায়। এখানেই থামেননি বোলসেনারো। এক সমর্থকের টুইটকে কার্যত সমর্থন জানিয়ে ম্যাক্রোঁর স্ত্রীকে নিয়ে অশ্লীল ইঙ্গিত করলেন। সেই টুইটে বলা হয়েছিল, ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর চেয়ে বয়সে 24 বছরের বড় ব্রিজেট ম্যাক্রোঁর তুলনায় বোলসেনারো-পত্নী মিশেল বোলসেনারো অনেক বেশি সুন্দরী আর আকর্ষণীয়। আর সেই হীনমন্যতাতেই নাকি বোলসেনারোর পরিবেশ নীতির সমালোচনা করেছেন ম্যাক্রোঁ। একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বরাজনীতিতেও যে নারীর পারঙ্গমতাকে বাহ্য সৌন্দর্য আর যৌন আবেদনের নিক্তিতে মাপা হয়, তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন দক্ষিণ আমেরিকার এই শক্তিশালী দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান।


    1960 সালে স্বামী সলোমান বন্দরনায়েকের মৃত্যুর পর সিলোন তথা শ্রীলঙ্কার মসনদে বসেছিলেন তাঁর স্ত্রী সিরিমাভো বন্দরনায়েকে। বিশ্বের ইতিহাসে সেই প্রথম কোনও মহিলা রাষ্ট্রনায়কের ক্ষমতাসীন হওয়া। ফ্রীডম পার্টির সভানেত্রী হিসাবে, তিন দফায় প্রায় 20 বছর উপমহাদেশের দক্ষিণ প্রান্তের এই দ্বীপরাষ্ট্রটিকে শাসন করেছিলেন তিনি। ব্যাঙ্ক, বিমা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যাপক জাতীয়করণ এবং তামিল-সিংহলি দ্বৈরথের শান্তিপূর্ণ মীমাংসায় উদ্যোগী হওয়ার জন্য তাঁর কার্যকাল স্মরণীয় হয়ে আছে। "গুঙ্গি গুড়িয়া' থেকে "ইন্দু' হয়ে "প্রিয়দর্শিনীএই সুদীর্ঘ পথটা কম সমস্যাপূর্ণ ছিল না ইন্দিরা গান্ধীর কাছে। তবু অনায়াসে সব বাধাকে জয় করেছিলেন তিনি। নিজলিঙ্গাপ্পা, মোরারজী দেশাইয়ের মতো রক্ষণশীল সিণ্ডিকেটকে প্রায় গুরুত্বহীন করে দিয়ে শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেস দলকে নিজের মতো পরিচালনা করেছিলেন। 1971-এ মার্কিন রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সনের হুঁশিয়ারিকে কার্যত অগ্রাহ্য করে, যেভাবে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে লড়াই করা বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেন, তাতে তাঁর দল, সারা দেশ, এমনকী গোটা বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। একমাত্র ব্রিটেনের মার্গারেট থ্যাচার ছাড়া আর কোনও মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান এইভাবে পড়শি রাষ্ট্রে আগ্রাসী সামরিক নীতি গ্রহণ করেননি। আবার কূটনৈতিক প্রয়োজনে পরাজিত পড়শি রাষ্ট্রের নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান জুলফিকার আলি ভুট্টোর সঙ্গে সিমলা চুক্তি সম্পাদন করে তিনি সীমান্তে স্থিতাবস্থাও ফিরিয়ে এনেছিলেন। নেহরুর আমলের অনেক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে তাঁর সময়ে উপেক্ষা করা হলেও, নেহরুর সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির মডেলকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

    জার্মানির প্রথম মহিলা চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল। 2005 সালে ক্ষমতায় এসে জার্মানির ভঙ্গুর অর্থনীতিকে নতুন প্রাণ দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি ব্রিটেনের ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া নিয়ে যখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে সে দেশের দর কষাকষি চলছে, তখন ইউনিয়নকে প্রায় একা হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন মর্কেল। মুজিব-কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটেছে। 2019 সালে সে দেশের জিডিপি গ্রোথ ছিল 7.88 শতাংশ, যা অনেক উন্নত দেশের জিডিপি গ্রোথের তুলনায় অনেকটাই বেশি। উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে হাসিনা বিদেশনীতির ক্ষেত্রেও তাঁর বিচক্ষণতার পরিচয় দিচ্ছেন। সর্বদা পুরুষের উত্তরাধিকারী বা অনুবর্তী হিসাবেই যে মহিলারা দেশের শাসনভার সামলেছেন, এমন কিন্তু নয়।

    তবু, এখনও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে অনেক সামাজিক ট্যাবু রয়ে গেছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ার যখন ডেভিড বেন গুরিয়ন মন্ত্রীসভার শ্রম ও বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন, তখন বেন গুরিয়ন তাঁর প্রশংসা করে বলেছিলেন, "তুমি হচ্ছ আমার মন্ত্রীসভার একমাত্র পুরুষ।' গোল্ডা মেয়ার বেন গুরিয়নের এই উদার মনোভাবে আপ্লুত হলেও তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, "ক্যাবিনেটের অন্য সদস্যদেরও যদি আমি একইভাবে বলি, আপনারা মেয়েদের মতো, তখন তারা সেটাকে প্রশংসাবাক্য হিসাবে নেবেন তো?' ইজরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর উত্তর ছিল না। তিনি জানতেন, লিঙ্গসাম্য অর্থে নারীকে পুরুষের সমকক্ষ হতে হবে, এর উল্টোটা নয়। ফকল্যান্ড যুদ্ধের ব্যাপক সাফল্যে ভর করে লন্ডনের 10, ডাউনিং স্ট্রীটে নিজের জায়গা পাকা করেছিলেন মার্গারেট থ্যাচার। তাঁর কঠোর ও অনমনীয় নীতির জন্য অনেকেই তাঁকে 'আয়রন লেডি' বলেন। সমাজতত্ত্ববিদরা বলছেন, থ্যাচারের পোশাক, আচরণ, সবকিছুই ছিল তখনকার আর পাঁচটা মেয়েদের থেকে আলাদা। তাই, মেয়ে হিসাবে তাঁর সৌন্দর্য, আবেদন কিংবা পেলব আচরণের অভাব এবং পরিবর্তে তাঁর চরিত্রের "স্বভাববিরুদ্ধ' কাঠিন্যই উঠে এসেছে "আয়রন লেডি' অভিধায়।

    বিশ্বে গণতন্ত্রের সুদীর্ঘ যাত্রাপথে নেতৃত্বের জায়গায় নারীদের আসা খুব বেশিদিনের নয়। দু'শত বছর আগে যে দেশ থেকে প্রথম ভোটাধিকারের দাবিতে মেয়েরা আন্দোলন করেছিল, সেই আমেরিকা এখনও কোনও মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান পায়নি। 2016-এর নির্বাচনে আশা জাগিয়েও সাদা বাড়ির বাসিন্দা হতে পারেননি হিলারি ক্লিন্টন। আমেরিকা, ভারত, রাশিয়া, ব্রাজিল সহ সারা দেশেই যে আধিপত্যকামী উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রচারে গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করা হচ্ছে, তাতে কোথাও যেন নারীকে ‘অবলা' হিসাবে হেয় করার মানসিকতা লুকিয়ে রয়েছে। উগ্র পুরুষতান্ত্রিক আস্ফালনের সঙ্গে এমনভাবে জাতীয়তাবাদকে মিশ্রিত করা হচ্ছে, যাতে নির্বাচকমণ্ডলী মনে করছেন মেয়েরা দেশের স্বার্থে এমন সব কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। মেক্সিকো সীমান্তে পাঁচিল তুলতে পারবেন না কিংবা পড়শি দেশকে কঠোর যুদ্ধবাজ নীতি দিয়ে 'সবক' শেখাতে পারবেন না। পুরুষ রাষ্ট্রপ্রধান বুক ঠুকে বুকের ছাতির প্রশস্ততার কথা বলবেন, বিরোধী দলের মহিলা নেত্রীকে কুৎসিত ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন, তবেই না শৌর্যবান রাষ্ট্রের গরিমা বাড়বে!

    এখনও মহিলা রাজনীতিকদের বিরোধী দলের পাশাপাশি নিজের দলের পুরুষ কিংবা পুরুষতান্ত্রিকতায় বিশ্বাসী নারীদের সঙ্গে লড়তে হয়। সেখানে মহিলা রাজনীতিককে শুধু তাঁর নীতির জন্যই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় না, তাঁর বেশভূষা, এমনকী যৌন অভিরুচি নিয়েও তির্যক মন্তব্য শুনতে হয়। ইতিহাসের সাক্ষ্যপ্রমাণ বলছে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলায় মহিলা রাষ্ট্রপ্রধানরা অনেক স্থিতধী হয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন। আবার প্রয়োজনে কঠোরও হয়েছেন। সত্যিই তো, ইন্দিরা গান্ধী যে সাহসিকতার সঙ্গে অপারেশন ব্লুস্টার করেছেন, পোখরানে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেছেন, তাতে কি মনে হয় নারী হিসাবে তিনি আজকের পুরুষ রাষ্ট্রপ্রধানদের তুলনায় কম সাহসী ছিলেন? নির্দিষ্ট গোয়েন্দা রিপোর্ট সত্ত্বেও তিনি নিজের শিখ দেহরক্ষীদের উপর ভরসা রেখেছিলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ভয়ে বাঙ্কারে আশ্রয় নেননি।

    বিশ্বের ‘ছাতিধারী' শক্তিশালী পুরুষ রাষ্ট্রপ্রধানরা আজ এত বড় সঙ্কটে কার্যত দিশাহীন। মহামারী মোকাবিলায় তাদের পরস্পর বিরোধী অবস্থান, অসংবেদনশীল মন্তব্যে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বমঞ্চে অর্ডেনদের সাফল্য প্রমাণ করে, প্রশাসক হিসাবে মেয়েরা কোনও অংশে কম নন, বরং বেশ কিছু ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় বেশি সফল। সিরিমাভো বন্দরনায়েকে থেকে জেসিন্ডা অর্ডেন শাসকের আসনে নারীর সাফল্যের গাথা এখনও রচনা হয়ে চলেছে। জেসিন্ডার নাচ সেই সাফল্যের কাহিনিতে কিঞ্চিৎ রঙ যুক্ত করে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। 


    বিতান ঘোষ - এর অন্যান্য লেখা


    বাঙালির ঘরের উমা যে আটপৌরে শাড়ি পরে, জীবনযুদ্ধে লড়ে যেতে পারে, সমাজের শত শত দুর্গা যে এভাবেই বাঁচে।

    লোকাল ট্রেনের অপেক্ষায় হয়রান মানুষের প্রশ্ন, করোনা কি ট্রেনে চড়তে ভাসবাসে আর বাসে ওঠে না?

    স্বাধীনতা সংগ্রামের লজ্জাকর অতীত থেকে নজর ঘুরিয়ে অলীক অমৃতের সন্ধান করছে বিজেপি।

    সরকার বিরোধী মত উঠে আসাতেই কি মন্ত্রীর কাছে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ ইন্টারনেট?

    নিছক খাওয়া-পরা নয়, দুর্গতদের পড়াশোনা আর স্বাস্থ্যেও সমান নজর দিতে চাইছে ‘জোনাকি’।

    ফলাফল যার পক্ষেই যাক, বাংলার সামনে ইতিহাসের হাতছানি স্পষ্ট।

    আগে ঘণ্টা বাজাননি, করোনা তাড়িয়ে নাচলেন জেসিন্ডা-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested