×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • পরব আমি, ঠিক করবে শাসক! 

    রিম্পা বিশ্বাস | 03-03-2022

    প্রতীকী ছবি।

    উপমহাদেশের দিকে দিকে ধর্মীয় গোঁড়ামি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এ আজকের কথা নয়, বিগত কুড়ি বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এটাই দেখা যায়। দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ধর্মনিরপেক্ষ মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র বাংলাদেশ (Bangladesh) হোক কিংবা হিন্দুকুশের ওপারে আফগানিস্তান (Afghanistan) - সব ক্ষেত্রে একই চিত্র দেখা যায়। ইদানীং পিছন দিকে এগিয়ে চলার প্রতিযোগিতায় ভারতও জোর কদমে নেমে পড়েছে! তালিবানরা দেশ, কাল, স্থানের ভিত্তিতে শুধুমাত্র নাম বদলায়, শাসনের ধরন বদলায় না এবং এই শাসনে সবচেয়ে বেশি পীড়িত হন দেশের মহিলারা। 

     

     

    তালিবান শাসিত বর্তমান আফগানিস্তানে দীর্ঘ ছয় মাস পর আবার বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়েছে। বলা হয়েছে মেয়েরা হিজাব ছাড়া কলেজে আসতে পারবে না। আমরা এর আগেও আফগানিস্তানে তালিবান শাসন অতীতেও দেখেছে মানুষ, তাই এ সম্পর্কে কিছু ধারণা সকলেরই আছে।

     

    বরং আমাদের দেশে দিকে দিকে যে নব্য তালিবানরা গড়ে উঠছে তাদের ক্রিয়াকলাপের মধ্যে নতুন নতুন চমকদার উপকরণ আছে! কর্ণাটকের হিজাব বিতর্ক এখন স্কুল থেকে কলেজে পৌঁছে গিয়েছে। কলেজের পরীক্ষা পিছিয়েছে, আটকে আছে শিক্ষা ব্যবস্থা। কলেজে মহিলা পড়ুয়াদের বলে দেওয়া হচ্ছে তারা কী পোশাক পরবে অথবা পরবে না। আফগানিস্তান হোক অথবা ভারত, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে আসা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তাদের মৌলিক অধিকারকেই কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। কলেজ, ইউনিভার্সিটি যেখানে মুক্ত চিন্তার জন্ম দেয় বা দেওয়ার কথা, সেখানে মেয়েদের প্রশ্নহীন আনুগত্যের পাঠ পড়ানো হচ্ছে

     

     

    প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট কোনও পোশাক ঠিক করা না থাকলে একজন কলেজ পড়ুয়া কী পরে কলেজে আসবে অথবা কী পরে আসবে না, এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়। প্রতিষ্ঠান, সরকার, রাষ্ট্রের এ নিয়ে মাথাব্যথা কীসের? নাকি কর্ণাটকের বিজেপি শাসকরা দেখিয়ে দিতে চান যে তালিবান পারলে তারা কেন পারবেন না? এদেশের অনেক মানুষ যদিও কর্ণাটকের পড়ুয়াদের মৌলিক অধিকারের দাবিতে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তবে আফগানিস্তান প্রসঙ্গে বিশ্ব একেবারে চুপ! 9/11 এর পরে আমেরিকাতেও মুসলিম মহিলাদের পোশাকের স্বাধীনতায় আঘাত এসেছিল তাই বিশ্বের অনান্য বিষয়ে আমেরিকা নাক গলানোয় অভ্যস্ত থাকলেও এ বিষয়ে তার কোনও মতামত নেই। 

     

     

    মৌলবাদী শাসক মৌলিক অধিকার স্বীকার করে না বিশেষত মহিলাদের মৌলিক অধিকার। শিক্ষা, সংস্কৃতিতে ধর্মীয় রঙের ছাপ ফেলে এই মৌলবাদী শাসক নারীকে অন্তঃপুরের বাসিন্দা করে রাখতে চায়। এই উদ্দেশ্যে আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন এবং কর্ণাটকের ধর্মনিরপেক্ষতার মোড়কে উগ্ৰ হিন্দুত্ববাদ দুটোই এক কাজ করছে। রাষ্ট্রের প্রধানরা যখন ভোট বাজারে বিভিন্ন ধর্মগুরুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কখনও কখনও ধর্মীয় পোশাকও পরিধান করেন তখন রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না! কিন্তু মহিলারা নিজেদের ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী পোশাক পরিধান করলে রাষ্ট্রের বিধিতে বাধে! রাষ্ট্রের বৌদ্ধিক কাঠামো কি এতই ঠুনকো যে স্কুল কলেজের মেয়েরা কী পোশাক পরল, তার উপর তা নির্ভর করে!


    রিম্পা বিশ্বাস - এর অন্যান্য লেখা


    সাত বছর পরেও সুপ্রিম কোর্টের রায় মানা হয়নি, এবার তৃতীয় লিঙ্গের জন্য কারাগারে আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস

    চাকচিক্যের মোড়কে ধর্মকে জড়িয়ে গোটা বিশ্ব থেকে মুনাফা আদায়।

    দেশের মহানগরগুলিতে নারী সুরক্ষার জন্য গঠিত নির্ভয়া তহবিলের টাকায় শহরে শুধুমাত্র আলো দেখা যায়।

    একুশ যেভাবে ভাবতে শেখায়...

    ধর্মীয় বিশ্বাস কখনওই জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হতে পারে না

    স্বতন্ত্র ভাবনাই জন্ম দেয় নতুন সম্ভাবনার, ভারতে সমষ্টিবাদের রাজত্ব উদ্ভাবন ও নতুন পথের স্বীকৃতি দেয়

    পরব আমি, ঠিক করবে শাসক! -4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested