আজ সকালে পোস্ট অফিস গেছি কিছু কাজে। বাইরে আকাশ কালো করে তুমুল বৃষ্টি হয়ে চলেছে। হঠাৎ ভীষণ আলো ঝলসিয়ে প্রচণ্ড শব্দে ধারে কাছে কোথাও বাজ পড়ল। কানে যেন তালা লেগে গিয়েছিল। একটু ধাতস্থ হতেই মনে পড়ল সেই কথাটি। কলকাতা, আমাদের প্রাণের শহর, উৎসবের শহর এখন ক্রমশ মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হচ্ছে। না, কথাটা আমি বলছি না, বলছে পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেরোলোজির (IITM) গবেষণা। দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তর উড়িষ্যা বাজ পড়ার হটস্পট হয়ে উঠছে দিন দিন। এবং কলকাতা রয়েছে তার কেন্দ্রবিন্দুতে।
প্রজেক্ট ডিরেক্টর পার্থসারথি মুখার্জির নেতৃত্বে করা আইআইটিএমের গবেষণায় ধরা পড়েছে, দিন দিন কলকাতা এবং তার আশপাশের অঞ্চলে বাজ পড়ার ঘটনা বেড়েই চলেছে। যত দিন যাবে এই অবস্থার আরও অবনতি ঘটবে, বাড়বে বাজ পড়া এবং বিদ্যুতের কারণে মৃত্যুর ঘটনা। বাড়বে ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ।
2019-20 তে পশ্চিমবঙ্গে প্রাকৃতিক কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল 529, যার মধ্যে 52.6 শতাংশ, অর্থাৎ 278জনের মৃত্যু ঘটেছিল বাজ পড়ার কারণে। 2020-21 সালে সংখ্যাটা বৃদ্ধি পেলেও কমে শতাংশের হার। প্রাকৃতিক কারণে 763 মৃতের মধ্যে 299 জনের মৃত্যুর কারণ বাজ ছিল। কিন্তু এই বছরের সংখ্যাটা শুনলে চমকে উঠতে হবে। এপ্রিলের 1তারিখ থেকে অগস্টের 17 তারিখের মধ্যে 226 জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। তাও এখন বছরের অর্ধেক সময়ও কাটেনি। কিন্তু কেন ঘটছে এমনটা?
গবেষণা বলছে বাজ পড়া বৃদ্ধি পাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে সেই বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং দূষণ। যেভাবে ক্রমে গরম বাড়ছে, তাতে বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি হতে সাহায্য করছে।
আইআইটিএমের প্রজেক্ট ডিরেক্টর পার্থসারথি মুখার্জি জানান, ‘কেন বজ্রপাতের ঘটনা বাড়ছে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না, তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন এর জন্য অনেকটাই দায়ী। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ছে, যা বায়ুমণ্ডলের নিচু স্তরে আদ্রতা বাড়িয়ে ঘনঘন বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করতে সাহায্য করছে। এর পাশাপাশি বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বাড়ছে। এটিও বজ্রপাতের ঘটনা বাড়াচ্ছে।' তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় কলকাতাই কেন হটস্পট হয়ে উঠছে অন্যান্য শহরের বদলে, তিনি জানান, ‘উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য ভারতের তুলনায় উত্তর-পূর্ব এবং পূর্ব ভারতে অনেক বেশি পরিমাণ বাজ পড়ে এবং বৃষ্টি হয়। প্রাক্ বর্ষায় এই অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড় হয়। কিন্তু বর্তমানে সেটা আরও বাড়ছে, মূলত কলকাতায়। তার প্রধান কারণ হচ্ছে দ্রুত নগরায়ন এবং দূষণ। দূষণের কারণে অনেক বেশি পরিমাণে ধূলিকণা বাতাসে মিশছে, নগরায়নের ফলে হিট আইল্যান্ড তৈরি হচ্ছে। সবটা মিলিয়ে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হওয়ার আদর্শ পরিবেশ তৈরি হচ্ছে বারবার। এবং তাই বাজ পড়ার ঘটনা বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যু। এর থেকে বাঁচার জন্য সচেতন হতে হবে। সচেতনতাও বাড়াতে হবে। খোলা জায়গা, পূর্বাভাস থাকলে গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া উচিত না। ঘরে থাকলেও দরজা জানালা বন্ধ করে রাখা উচিত। সচেতনতাই বিপদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে।'
নিজের গায়ে আঁচ না লাগা অবধি সবাই গা বাঁচিয়ে চলতে চায়।
সোশাল মিডিয়াকেই অস্ত্র বানিয়ে নেমে পড়েছেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে
জীবনের প্রতিপদে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েও সব বাধা জয় করে এগিয়ে চলেছেন অমৃতা ‘ন হন্যতে’ মুখার্জি।
এক গ্রাম্য মধ্যবিত্ত ছেলের অধরা স্বপ্ন, বন্ধুত্ব এবং জীবনের গল্প বলল বাদল দাস।
ওষুধ, খাবার, মাদক, মারণ বোমা সবই ডেলিভারি দিচ্ছে ড্রোন– এবার তাকে সামলাতে হবে!
বিশ্ব জুড়ে হুহু করে ছড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স। কিন্তু কী এই রোগ, কী ভাবে হয়?