×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • ভুল বানানে ভরপুর উত্তর এল বিজেপি শিবির থেকে

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 12-04-2021

    সেই মিউজিক ভিডিওর একটা অংশ।

    কিছুদিন আগে নাগরিক মঞ্চ ‘সিটিজেনস ইউনাইটেড’ থেকে একটি গান প্রকাশ করা হয়, ‘নিজেদের মতে নিজেদের গান’, যেখানে বর্তমান কেন্দ্রীয় শাসকের দুর্নীতি, অত্যাচার তুলে ধরা হয়েছে। গানটি লিখেছেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, এবং সেখানে দেখা গিয়েছে থিয়েটার এবং টলিউড ইন্ডাস্ট্রির একাধিক পরিচিত মুখকে। সেই গানের উত্তর হিসেবে বাবুল সুপ্রিয়র নেতৃত্বে বিজেপি একটি গান তৈরি করেছে। নাম? ‘দিদি তুমি আমাদের ভালবাস না।'

     

     

    এই গানে তুলে ধরা হয়েছে আমাদের প্রতিবেশী দেশ, বাংলাদেশে 2001সালে ঘটে যাওয়া পূর্ণিমা শীল ধর্ষণ-কাণ্ডের কথা। গানে বারংবার ঘুরে ফিরে উল্লিখিত হয়েছে এই ঘটনা। কিন্তু বিজেপি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের একটি মর্মান্তিক ঘটনাকে এভাবে গানে তুলে ধরে যখন প্রশ্ন করে, ‘দলিত মেয়ের’ অত্যাচার কি বাঙালি ভুলে গেছে, তখন তাদের কি উন্নাও ধর্ষণ-কাণ্ডের কথা মনে পড়ে না? মনে পড়ে না বিগত কিছু বছরে কীভাবে বারংবার তারা দলিতদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে? 536টিরও বেশি দলিত নিধনের ঘটনা ঘটেছে। 

     

     

    গানটির প্রতি ছত্রে নিজেদের মতে নিজেদের গানের লিরিক্সকে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আগের গানটিতে শাসককে উদ্দেশ্য করা বলা হয়েছিল, ‘তোমার কাজ শিক্ষাকে লাঠিপেটা করে মূর্খের জ্বালা জুড়ানো’, এই গানে তারা বলেছে, ‘তোমার কাজ সত্যিকে লাঠিপেটা করে মিথ্যের ছলনা।' যদিও জানা নেই তারা এখানে কোন মিথ্যের কথা বলতে চেয়েছে! 

     

     

    অনির্বাণরা বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেছিল, তারা দেশপ্রেমের কিছুই জানে না, ইতিহাস বিকৃত করে। তার উত্তরে এল, এই বুদ্ধিজীবীরা নাকি ভারতের মাটির কথা কিছুই জানে না। তারা নাকি শুধুই শাহিনবাগ নিয়ে ব্যস্ত, ভারতের ম্যাপটাই নাকি চেনে না! তাই ‘দিদি তুমি আমাদের ভালবাসো না’ গানে বুদ্ধিজীবীদের শকুনের থেকে নীচ, ‘আরব গেরিলা' বলে সম্বোধন করা হয়েছে। উল্লিখিত হয়েছে মরিচঝাঁপি থেকে বিজন সেতুর সন্ন্যাসী হত্যাকাণ্ড, সাঁইবাড়ি থেকে নন্দীগ্রাম, ধূলাগড় থেকে কালিয়াচক।  এবং সব শেষে গানটিতে এও জানান হয়েছে, "তুমি অন্য কোথাও যেও না, তুমি এই দেশেতেই থাকো, কিন্তু CAA হবেই, সেটা আমাদের অধিকার।'

     

     

    গানে গানে আক্রমণ এবং প্রতি আক্রমণ দেখল বঙ্গবাসী। যেটা একদিকে অনেকের কাছেই ভাল মনে হয়েছে, অকারণ হিংসা মারামারির থেকে গানের উত্তর এভাবে গানে দেওয়ায় অনেকেই খুশি। অন্তত সংস্কৃতি বজায় থাকল। কিন্তু প্রথম গানটা যতটা মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরেছিল এটা কি পারল? নাকি শুধুই উত্তর হয়ে থেকে গেল? বোধহয় দ্বিতীয়টাই। কারণ গানের অনেক জায়গাতেই অভিনেতাদের অভিনয়ের সঙ্গে গানের কথা মেলেনি। সঙ্গে রয়েছে ভুরি ভুরি ভুল বানান, যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় মিম শুরু হয়ে গিয়েছে। কোথাও সংগ্রামকে সংগ্যাম লেখা হয়েছে, তো কোথাও ছোট্টকে ছোট্য, ছোট্র লেখা হয়েছে। এমনকি অতি পরিচিত মিথ্যাবাদী বানানটা অবধি ভুল। শুধু তাই নয়, যে পূর্ণিমার কথা তাঁরা গানে এতবার উল্লেখ করলেন তার নামও এক এক জায়গায় এক এক রকম লেখা হয়েছে। তবে যাই হোক ভোটের বাজারে গানে গানে খেলা জমে উঠেছে।


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    ভূত চতুর্দশী নিয়ে উন্মাদনা আজ আর নেই, রমরমিয়ে বাড়ছে সাহেবেদের আদলে হ্যালোউইনের পার্টি।

    চন্দননগরের শ্রীশচন্দ্র এবং কানাইলাল চারুচন্দ্র রায়ের থেকে স্বদেশমন্ত্রের দীক্ষা পেয়েছিলেন।

    রাজ্যটা এখন চিড়িয়াখানা নাকি সার্কাসে পরিণত হয়েছে তা নিয়ে অনেকের মনেই ধন্দ।

    সচেতনতা এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনা দিয়ে সিকদামাখাই গ্রামের মানুষ রুখে দিল করোনাকে।

    পারলে কংক্রিটের ছাদের তলায় আশ্রয় নিন, খোলা মাঠে থাকলে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন।

    বিজেপির এই গানে বোধহয় শুধুই অনির্বাণদের উত্তরই দেওয়া হল, কিন্তু মানুষের মন ছুঁতে পারল কই?

    ভুল বানানে ভরপুর উত্তর এল বিজেপি শিবির থেকে-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested