×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • পর্যটন নির্ভর হয়েও করোনামুক্ত সিকদামাখাই

    শুভস্মিতা কাঞ্জী | 02-06-2021

    সিকদামাখাই গ্রামের একটি চিত্র।

    অসমের প্রত্যন্ত গ্রাম সিকদামাখাই, ছোট ছোট পাহাড় দিয়ে ঘেরা। করোনা পর্বের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত একজন মানুষও এই গ্রামে রোগের কবলে পড়েননি। পর্যটকদের কাছে প্রিয় এই গ্রামে স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী নাকি অপদেবতার বাস। তবে করোনাকে রুখে দেওয়া তো কোনও কল্পিত অপদেবতার কাজ নয়, আবার রকেট সায়েন্সও নয়! এই গ্রামের অধিবাসীদের সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা বোধ এবং কঠোর অনুশাসনের মাধ্যমে প্রতিটি বাসিন্দার তা মেনে চলাই করোনাকে আটকে দিয়েছেন গ্রামের গণ্ডির বাইরেই। রাজধানী দিল্লি সহ গোটা দেশ যখন গত এক মাস ধরে অনবরত জ্বলন্ত চিতা আর মৃত্যুমিছিল দেখেছে তখন সিকদামাখাইয়ের জীবন কেটেছে স্বাভাবিক ছন্দে।

     

     

    এই গ্রামে টিওয়া উপজাতির প্রায় 600 মানুষের বাস।  1953 সালে তৈরি হয়। এখানকার প্রত্যেক মানুষ বরাবরই অত্যন্ত স্বাস্থ্য সচেতন। তাঁরা তাঁদের গ্রামকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে জানপ্রাণ লড়িয়ে দেন। এই গ্রামে প্লাস্টিক প্রবেশ নিষেধ। নিষেধ যেখানে সেখানে ময়লা ফেলাও। ফলে খুব অল্প সময়েই ট্যুরিজমের জন্য বিখ্যাত মেঘালয়ের মৌলিংলঙয়ের থেকে ভারতের সব থেকে পরিষ্কার গ্রামের মুকুট এই সিকদামাখাই ছিনিয়ে নিয়েছে শুধুমাত্র নিজেদের চেষ্টায়। গতবছর যখন করোনা থাবা বসায় দেশে তখন এই গ্রামে সব রকমের অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশেষত ট্যুরিস্টদের আনাগোনা কঠোরভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রায় প্রথম থেকেই। চাষের কাজ ছাড়া বাইরে বেরোনো বন্ধ করে দেন স্থানীয়রা। এমনকি ফাঁকা রাস্তাতেও কাউকে মাস্ক ছাড়া কখনও দেখা যায়নি। প্রতি বাড়ির দরজায় আজও বসানো আছে স্যানিটাইজার। ভাবতে পারছেন যেখানে শহরের শিক্ষিত মানুষেরা করোনার প্রথম ঢেউয়ের প্রভাব একটু কমতেই ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছিল, পার্টি, শপিংয়ে ব্যস্ত হয়েছিল, নেতা নেত্রীদের গমগমে বক্তৃতা ব্রিগেডের মাঠ কাঁপিয়েছিল, তখন এই গ্রাম কঠোর ভাবে সব বিধিনিষেধের পালন করে গিয়েছে। আর তাই তো দুটো ঢেউ পেরিয়েও এই গ্রাম আজও করোনা মুক্ত। একটিও করোনা কেস নেই এখানে। সরকারকেও বেশি বেগ পেতে হয়নি নিয়ম কানুন সাধারণ মানুষকে দিয়ে মানানোর জন্য। 

     

    আরও পড়ুন: ত্রাসের দেশ উত্তরপ্রদেশ

     

    কিন্তু তাঁরা যেটা দাবি করছেন শুধুমাত্র সচেতনতা এবং পরিচ্ছন্নতা তাই দিয়ে করোনাকে রোখা সম্ভব? পরিবেশবিদ অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, করোনা যখন ভারতে প্রথম থাবা বসায় তখনই বাসিন্দারা ওখানে ট্যুরিজম বন্ধ করে দেয়। এমনকি যে দুতিনজন গ্রামের বাইরে কাজ করার দরুন থাকেন তাঁদেরকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হয় না। ফলে বাইরে থেকে সংক্রমণ সেখানে ঢোকার কোনও অবকাশই ছিল না। তবে স্বাস্থ্য সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা বিধি কঠোরভাবে মেনে চলা ছাড়াও এখানো করোনা সংক্রমণ না হওযার সম্ভবত আরও একটি কারণ আছে। অরিজিৎবাবুর কথায়, যদিও এই বিষয়ে কোনও স্টাডি করা হয়নি তবুও লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, যাঁরা প্রচণ্ড পরিশ্রম করেন বা প্রকৃতির মধ্যেই থাকেন, বিশেষত আদিবাসীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বাকিদের তুলনায় খানিক কম। এর একটি কারণ হতে পারে রোগ প্রতিরোধ এবং প্রতিহত করার ক্ষমতা।'' ফলে সব কারণ মিলিয়েই হয়তো করোনাকে তাঁরা রুখতে পেরেছেন, যে কারণই হোক সেটা শিক্ষণীয়, নইলে যে গ্রাম অনেকাংশেই ট্যুরিজমের উপর নির্ভর করে তাঁরা এভাবে প্রথম লকডাউনের সময়ই সেটা কঠোর ভাবে বন্ধ করে দিতে পারতেন না


    শুভস্মিতা কাঞ্জী - এর অন্যান্য লেখা


    মৃত্যুর পর কি সব আত্মাই মুক্তি পেয়ে যায় জাগতিক সমস্ত বন্ধন থেকে? 

    64 বছর বয়সে মেডিক্যাল পড়তে ভর্তি হলেন জয় কিশোর।

    ‘বিজেপিকে তাড়াব এই ভোটে’ গানের কথায় বিজেপিকে তুলোধোনা করেছেন এই প্যারোডির স্রষ্টারা।

    এ দেওয়ালে বুদ্ধ, ও দেওয়ালে মমতা, ব্যঙ্গচিত্র থেকে ছড়া, হারিয়ে যাচ্ছে ভোটের আগের দেওয়াল লিখন।

    সোমবার বেহালার ঐতিহ্যবাহী চণ্ডীপুজোর শেষ দিন।

    ভোট মিটতেই ভোল বদল! রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে মিলছে না পরিষেবা।

    পর্যটন নির্ভর হয়েও করোনামুক্ত সিকদামাখাই-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested