নরেন গোঁসাইকে হত্যা করতে হবে, চাই ছোট সাইজের বন্দুক। জোগাড় করে তা পৌঁছে দিয়ে আসা গেল আলিপুর জেলে থাকা কানাইলাল দত্তকে। মঁসিয়ে তার্দিভেলের অত্যাচারে চন্দননগর অতিষ্ঠ, মুক্তি চাই তার থেকে? ছকে ফেলতে হবে হত্যার প্ল্যান। কোনও বিপ্লবীর আশ্রয় চাই? তারও ব্যবস্থা করতে হয়ে যেত রাতারাতি। আমরা বলছি চন্দননগরের শ্রীশচন্দ্র ঘোষের কথা, স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র লড়াইয়ে দুঃসাহসিক কাজে যাঁর জুড়ি মেলা ভার ছিল।
চন্দননগরের ডুপ্লে কলেজে (বর্তমানে চন্দননগর কলেজ) পড়াকালীন চারুচন্দ্র রায়ের সঙ্গে পরিচয় ঘটে শ্রীশচন্দ্রের। তিনিই শ্রীশচন্দ্রের মধ্যে স্বদেশমন্ত্রের বীজ বপন করে দেন। 1905 সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে হিতবাদী পত্রিকায় যুক্ত হন। বিভিন্ন সময়ে অরবিন্দ ঘোষ, বারীন ঘোষ সহ অন্য বিপ্লবীদের তিনি তিলাল রায়ের সাহায্যে চন্দননগরে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। রডা কোম্পানির লুণ্ঠিত পিস্তল, কার্তুজ প্রভৃতি বিপ্লবীদের কাছে পৌঁছে দিতেন শ্রীশচন্দ্র ঘোষ। শুধু তাই নয়, চন্দননগরের মেয়র মঁসিয়ে তার্দিভেলের অত্যাচারে সবাই যখন অতিষ্ঠ তখন তিনি তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেন, যদিও সেই চেষ্টা সফল হয়নি। বিশ্বাসঘাতক নরেন গোঁসাইকে হত্যার জন্য একটি ছোট সাইজের পিস্তলের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল, তখনই তিনি অত্যন্ত সুকৌশলে তা জোগাড় করে আলিপুরে কানাইলাল দত্তের কাছে পৌঁছে দিয়ে আসেন। আজীবন বিভিন্ন দুঃসাহসিক কাজ করে গেছেন এই বিপ্লবী, ব্রিটিশ পুলিশ কোনওদিন তাঁকে ছুঁতে অবধি পারেনি। কিন্তু যখন বসন্ত বিশ্বাস সহ আরও অনেক বিপ্লবী ব্রিটিশ পুলিশের কাছে ধরা পড়ে যান, তখন তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। 1915 সালে অবশেষে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এই বিপ্লবী মুক্তি পান কারাগার থেকে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতার সৈনিক অসমের কনকলতা এবং ভোগেশ্বরী
শুধু শ্রীশচন্দ্র নন, চারুচন্দ্র রায়ের থেকে স্বদেশমন্ত্রে কানাইলাল দত্তও দীক্ষিত হয়েছিলেন। প্রথমে গন্ডলপাড়া বিপ্লবী দলে যোগ দেন, তারপর যুগান্তরে। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন কানাইলাল। কলকাতা এসে কানাইলাল দত্ত বারীন ঘোষের দলে বোমা বানানোর কাজে যোগ দেন। কিংসফোর্ড হত্যার চেষ্টার দু’দিন পরে 2 মে 1908 পুলিশ কলকাতার 32 মুরারীপুকুর রোডের বাড়ি ছাড়াও আরও অনেক জায়গায় অভিযান চালায়। সেদিন এই বাড়ি থেকে 33 জনকে অস্ত্র আইন লঙ্ঘনের কারণে গ্রেপ্তার করা হয়। এই 33 জনের মধ্যে কানাইলাল দত্ত ছিলেন। ছিলেন বিশ্বাসঘাতক নরেন গোঁসাইও। তিনি ধরা পড়ার পর রাজসাক্ষী হয়ে যান এবং একে একে তাঁর সতীর্থদের নাম, ডেরা বলে দিতে থাকেন। শুধু তাই নয়, নরেন গোঁসাই বিপ্লবীদের অনেক পরিকল্পনা সম্পর্কেই অবগত ছিলেন, সেগুলো সরকারের কাছে বলে দেন। তখন তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। অবশেষে শ্রীশচন্দ্রের এনে দেওয়া পিস্তল দিয়ে সত্যেন বোসের সাহায্যে কানাইলাল দত্ত 31 অগস্ট 1908 সালে বিশ্বাসঘাতক নরেন গোঁসাইকে গুলি করে হত্যা করেন। কপালে মৃত্যুদণ্ড জুটবে জেনেও ভারতমাতার এক কুসন্তানকে শেষ করে দিতে পিছপা হননি কানাইলাল। নরেন গোঁসাইকে হত্যা করার জন্য তাঁর ফাঁসির সাজা হয়। ক্ষুদিরামের পর তিনিই ছিলেন দ্বিতীয় বিপ্লবী, যিনি ফাঁসিকাঠে শহীদ হন।
দেশকে স্বাধীন করার জন্য অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা যেমন ব্রিটিশদের সঙ্গে লড়াই করেছিল, অন্যান্য বিপ্লবীদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সাহায্য করত তেমনই বিশ্বাসঘাতক দেখলে তাকেও ছেড়ে দিত না, কারণ তাঁরা ব্রিটিশদের থেকে বেশি ঘৃণ্য ছিল বিপ্লবীদের কাছে। দেশের সঙ্গে বেইমানি করার ফল হাতে নাতে বুঝিয়ে দেওয়া হতো সেই বিশ্বাসঘাতকদের।
মহারাষ্ট্রের ন্যানেঘাট ঝর্নার জল নিচে পড়ার বদলে আপাতদৃষ্টিতে রহস্যময়ভাবে উপরের দিকে উঠে যায়।
অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরীর উদ্যোগে এই অস্থির সময়ে নিরন্ন মানুষের পেটে ভাত মিলছে।
কোভিড হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, নরক যন্ত্রণা ভোগ ও কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু।
মায়ের বিকল্প কেউ হতে পারে কখনও? কী বলছে দীপ কুণ্ডুর গিবো?
পারলে কংক্রিটের ছাদের তলায় আশ্রয় নিন, খোলা মাঠে থাকলে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন।
সমকামিতার ইঙ্গিতপূর্ণ বিজ্ঞাপন তুলে নেবে না জানিয়ে সদর্থক বার্তা ক্যাডবেরির।