ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন বোধহয় ছোটবেলায় অনেকেই দেখে। যত পড়ুয়া দেখে সম্ভবত তার চেয়ে অনেক বেশি অভিভাবকও দেখেন! কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ‘অঙ্ক কী কঠিন’ হয় যখন, আর সঙ্গে ফিজিক্সও চোখ রাঙায়, তখন স্বপ্নের সঙ্গে আপস করে নিতে হয় অনেককেই। তাই সকলের স্বপ্নপূরণের কথা ভেবেই সম্ভবত অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (AICTE) ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার মাপকাঠিতে বৈপ্লবিক বদল আনতে চেয়েছিল। যদিও দেশ জুড়ে শিক্ষা মহলের প্রবল আপত্তিতে রাতারাতি সেই বদলের প্রস্তাব ফিরিয়েও নিল কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা।
সম্প্রতি AICTE তাদের স্নাতক স্তরের যে ভর্তির অ্যাপ্রুভাল প্রসেস আছে, সেটার হ্যান্ডবুক প্রকাশ করে এই পরিবর্তনের কথা জানিয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, 2021-22 শিক্ষাবর্ষে স্নাতক স্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ (বিই বা বি-টেক) ভর্তি হতে গেলে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের অঙ্ক বা ফিজিক্স থাকা আর বাধ্যতামূলক নয়। সবটাই ‘ঐচ্ছিক’ হয়ে গেল। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ফিজিক্স, অঙ্ক, কেমিস্ট্রি, কম্পিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রিকাল, ইনফরমেশন টেকনোলজি, ইনফরমেটিক্স প্র্যাক্টিসেস, বায়োলজি, বায়ো টেকনোলজি, টেকনিক্যাল ভোকেশনাল সাবজেক্ট, কৃষিবিদ্যা, ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রাফিক্স, বিজনেস স্টাডিজ অ্যান্ড এন্টারপ্রেনরশিপ- এর মধ্যে যে কোনও তিনটে বিষয় নিয়ে পড়লেই বিই বা বি-টেকে অ্যাপ্লাই করার ছাড়পত্র মিলবে। শুধু তাই নয়, এই তিনটি বিষয়ে গড়ে 45 শতাংশ নম্বর থাকলেই চলবে। এরপরই সমালোচনার ঝড় ওঠে শিক্ষা জগতে। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি বাছাই স্তরের যে সমস্ত পরীক্ষা রয়েছে– যেমন জয়েন্ট এন্ট্রান্স ইত্যাদি – তার প্রশ্নপত্রেও অঙ্ক আর ফিজিক্সের সেই আগেকার গুরুত্ব আর থাকবে না? শনিবার 13 মার্চ রাতে সংস্থার ওয়েবসাইটে অবশ্য দেখা যায় বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের মতে AICTE-র এই সিদ্ধান্ত ছিল অত্যন্ত হঠকারী। তিনি বলেন, ‘ভারতে এমনই পাশ করা গ্র্যাজুয়েট ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে মাত্র 20 শতাংশ কাজের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে অঙ্ক আর ফিজিক্স তো বেসিক সাবজেক্ট, তাদের কোনও বিকল্প নেই। প্রয়োজনে আরও অন্যান্য বিষয় যোগ করা যেতে পারত, কিন্তু এই দু’টো বিষয়কে ঐচ্ছিক করে দেওয়া ঠিক হল না বলেই মনে করি। হ্যাঁ, এখন যদি কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে মার্কেটিং-এর চাকরি করতে চায়, তাহলে ঠিক আছে।কিন্তু ম্যানুফ্যাকচারিং-এর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেবে আগামী দিনে।' একই কথা বললেন যাদবপুরের আর এক অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। তিনি জানান, ‘বিজ্ঞানের প্রয়োগই তো হচ্ছে প্রযুক্তি আর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কারিগরি। বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং, আর টেকনোলজি এদের মধ্যে একটা আন্তঃসম্পর্ক আছে, এবং এদের সকলের দর্শন হচ্ছে ফিজিক্স আর ভাষা হচ্ছে অঙ্ক। অতএব এই দু’টো ছাড়া উপরোক্ত তিনটি বিষয় পড়ার কোনও জায়গা নেই বলে মনে করি। এতে পড়ুয়াদের ভিত নড়বড়ে হয়ে যাবে। যাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিলেন কী উদ্দেশ্যে নিলেন জানি না।'
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভিত্তিই হচ্ছে অঙ্ক, আর তাকে এভাবে ঐচ্ছিক বিষয় করে দেওয়াটা কেউই মেনে নিতে পারেননি। প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সারা দেশেই। শিক্ষাবিদদের মতে এর ফলে আগামীদিনে দেশে যাঁরা ইঞ্জিনিয়ার হবেন, তাঁদের নিম্নমানের হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। গত বছর লকডাউনের মধ্যেই প্রণীত হয়েছে নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি। সেই নীতিতে শিক্ষার ক্ষেত্রে পড়ুয়ার পছন্দের সুযোগ বাড়ানোর উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। AICTE-র এই সিদ্ধান্ত সেই নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই করা হয়েছিল বলে দাবি সরকারের। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বায়োলজি এবং বিজনেস স্টাডিজ অ্যান্ড এন্টারপ্রেনরশিপ পড়ে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের বেড়া টপকে উড়ালপুল নির্মাণের বিদ্যা কীভাবে আয়ত্ত করা সম্ভব, বুঝে উঠতে পারেননি ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা! তড়িঘড়ি বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারেই প্রমাণ যে AICTE-ও ভুল বুঝতে পেরেছে।
ভোট পুজোর আগে এই ছড়া, কার্টুন, ইত্যাদির মধ্যে দিয়েই বাংলার সুস্থ সংস্কৃতির পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে।
বিজেপি সরকার চাইছে আগামী লোকসভার বছরেই আদমশুমারি প্রকাশ করতে। কিন্তু কেন?
ভূত চতুর্দশী নিয়ে উন্মাদনা আজ আর নেই, রমরমিয়ে বাড়ছে সাহেবেদের আদলে হ্যালোউইনের পার্টি।
ভোট মিটতেই ভোল বদল! রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে মিলছে না পরিষেবা।
সংসার, ভালবাসা, সঙ্গে থাকা বা থাকার ইচ্ছে, সবটা নিয়ে একটা অত্যন্ত বাস্তববাদী সিনেমা।
যৌনকর্মীরা সামাজিক স্বীকৃতি আর আইনগত অধিকারের মধ্যে কোনটা কতটা পেলেন সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে