×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • বলিউডে কিন্তু শুধু মেয়েরাই ড্রাগ নেয়!

    অয়ন্তিকা দত্ত মজুমদার | 24-09-2020

    মাদক-বাণে বিদ্ধ বলিউডের মেয়েরা।

    চলতি মাসের গোড়ার দিকেই ড্রাগচক্রে যোগ থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন সদ্য প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের বান্ধবী এবং বলিউড অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী।

     

    সুশান্তের মৃত্যুর পিছনে সন্দেহের তালিকায় এক নম্বরে ছিলেন রিয়া। সেই সংক্রান্ত তদন্তে আরও বহু তথ্যের সঙ্গে উঠে আসে তাঁর ড্রাগ-যোগের কথা। অবশেষে এই মাসের শুরুতে NCB (Narcotics Control Bureau) তাঁকে গ্রেফতার করে। উল্লাসে ফেটে পড়ে সোশাল মিডিয়া। ধীরে ধীরে সকলের লক্ষ্য সুশান্তের মৃত্যুর কারণ থেকে সরে বলিউডে ড্রাগচক্রে চলে আসে। এরপর তাঁর মৃত্যু তদন্তের কী অগ্রগতি হল তা অবশ্য চর্চায় নেই এখন।

     

    রিয়া চক্রবর্তীকে দিয়ে শুরু। এরপর শোনা যায় অভিনেত্রী জেরায় নাকি ড্রাগযোগের ব্যাপারে বলিউডের আরও বেশ কিছু প্রথম সারির আর্টিস্টদের নাম নিয়েছেন, এবং এই সূত্রেই তদন্ত চলবে বলেও জানায় NCBকানাঘুষোয় বেশ কিছু নাম শোনা যাচ্ছিলও বটে। তবে গত বুধবার, 23 সেপ্টেম্বর, NCB সমন পাঠায় একাধারে দীপিকা পাড়ুকোন, সারা আলি খান, শ্রদ্ধা কাপুর, রাকুলপ্রীত সিং ও সিমোন খামবাট্টার কাছে। নামের লিস্ট দেখে একটু অদ্ভুত লাগছে তো? স্বাভাবিক। আমার আপনার মতো অনেকেরই নজরে পড়েছে একটা বিষয়যাঁদের সমন পাঠানো হয়েছে তাঁরা প্রত্যেকেই অভিনেত্রী, অর্থাৎ মহিলা।

     

    সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু তদন্ত থেকে ফোকাস ঘুরে চলে আসে বলিউডের মাদক-চক্রে এবং অদ্ভুতভাবে সেই তালিকায় পাওয়া যাচ্ছে কেবল বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের নাম। প্রথম পাঁচ-ছয়জনের তালিকায় কোনও অভিনেতা নেই? বলিউডের সমস্ত অভিনেতারা এতটাই স্বচ্ছ? তাঁরা এখন কোথায়? গোটা ঘটনাপ্রবাহে প্রশ্ন তুলছেন নেটিজেনরাই। এই গোটা ঘটনায় কোথায় পুরুষ অভিনেতারা? এমনকী তাঁরা এখন চুপই বা কেন?

     

    অন্যদিকে NCB এঁদের সমন পাঠানোর আগেই একটি ন্যাশনাল চ্যানেল দীপিকা পাড়ুকোনের নাম উল্লেখ করে তাঁকে এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রমাণ করার চেষ্টা করে। সূত্র, ভাইরাল হওয়া একটি হোয়াটস্যাপ চ্যাট। ফলে প্রশ্ন উঠছে মিডিয়ার একপেশে কাজ নিয়েও? বলিউডে কেবলমাত্র মহিলারাই ড্রাগ ব্যবহার করেন এমনটাই কি? না হলে বাকিদের কথা কেন বলা হচ্ছে না? এক্ষেত্রে পরিচালক করণ জোহরের পোস্ট করা হাউস পার্টির ভিডিওর কথাই ধরা যেতে পারে! সেখানে বলিউডের প্রথম সারির বেশ কিছু অভিনেতা যেমন, রণবীর কাপুর, বরুণ ধাওয়ান, ভিকি কৌশল, শাহিদ কাপুর, অর্জুন কাপুর প্রমুখদের দেখা গেছেভিডিওতে তাঁদের অবস্থা দেখে আঁচ করা যায় তাঁরা কেউই হয়তো সে সময়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না।

     

    সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর প্রচণ্ডভাবে সরব হয়েছেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। গোটা বলিউডকেই মোটামুটি নিজের শত্রু প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন তিনি কিন্তু আইন তো সকলের জন্য এক, তদন্তও একইভাবে হওয়া উচিত। তাহলে এই ড্রাগ-যোগে তাঁকে সমন পাঠানো হল না কেন? তিনি তো নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন যে তিনি ড্রাগ-অ্যাডিক্ট ছিলেন। নিজেরই পোস্ট করা একটি ভিডিওয় তাঁকে এমনটা বলতে শোনা গেছে। ভিডিওটি এখন ভাইরালও বটে। তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক অধ্যয়ন সুমনকে এক সাক্ষাৎকারে বলতে শোনা গেছিল যে কঙ্গনা তাঁকেও ড্রাগ নিতে বলেছিলেন। এছাড়া সোশাল মিডিয়া ঘাঁটলেই বোঝা যায় কঙ্গনা এবং দীপিকার মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়। তাহলে এই সবকিছুই কি প্ল্যানড?

     

    নেটিজেনদের দাবি কিছু কিছু চ্যানেলে নাকি সমন-প্রাপ্ত অভিনেত্রীদের ছোট জামাকাপড় অর্থাৎ বিকিনি বা সুইমস্যুট পরা ছবি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখানো হচ্ছে। প্রশ্ন, তাহলে কি এটাই প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে যে ছোট জামাকাপড় পরা মানে সেইসব মহিলারা খারাপ এবং তাঁদের সঙ্গেই ড্রাগ যোগ থাকতে পারে? এক নেটিজেনের কথায় ...this country hates women SO much”

     

    এই সবকিছু ছাড়া আরও একটা ব্যাপার আছে। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ড্রাগ লক্ষ লক্ষ মানুষ সেবন করে। কিন্তু আসল অপরাধ তো ড্রাগের ব্যবসা করা। অপরাধী তো তারা, যারা এই ড্রাগ মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছে। এই ব্যবসাগুলোর যারা মাথা তাদের কি আদৌ ধরা হচ্ছে? বা অন্তত চেষ্টাও কি করা হচ্ছে? যে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নিজের কাছে 150 গ্রাম নেশার দ্রব্য রাখছে সে বড় অপরাধী নাকি যার কাছে কয়েক টন নেশার দ্রব্য আছে সে? এই মাথাদের ধরতে পারলে তো তাদের খদ্দেরদের অস্তিত্বই থাকবে না।

     

    তাছাড়া কিছু কিছু বিশেষ ধরনের ড্রাগে তো আবার সরকারি ছাড়পত্রও আছে। সেগুলো কি দেশে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া খুন-ধর্ষণের থেকে বড় অপরাধ? দেশে কি এর থেকে বড় বা সিরিয়াস কোনও ঘটনা নেই? এসব কি বেকারত্ব, অনাহার, মূল্যবৃদ্ধি, জিডিপি হ্রাস, করোনা এই সবকিছুর থেকে বড় যে দেশের সমস্ত শক্তি তার জন্য লাগিয়ে দিতে হবে?

     

    অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে নেটিজেনরা। এই ঘটনার শেষ কোথায় ভবিষ্যতই বলবে।


    অয়ন্তিকা দত্ত মজুমদার - এর অন্যান্য লেখা


    তাস নিয়েই জব্বর কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন আলিপুরদুয়ার জংশনের শুভ্রনীল মিত্র।

    এই বিশ্ব মহামারীর সুযোগ নিয়ে অনেক হ্যাকার ডানা মেলেছে

    সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, তবে দূর থেকে।

    নিজেদের দোষ ঢাকতে বারংবার সমীক্ষার ফলাফল চেপে দিতে চাইছে সরকার

    অনেকের কাছেই সোশাল মিডিয়া বেদ বাইবেল কোরানের তুল্য

    Isaac Asimov-এর লেখা একটা গল্প পড়েছিলাম, ‘The Fun They Had’

    বলিউডে কিন্তু শুধু মেয়েরাই ড্রাগ নেয়!-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested