মার্কিন সেনা প্রত্যাহার হতে না হতেই অবিশ্বাস্য দ্রুততায় আফগানিস্তান দখল করে নিল তালিবান। ভারতের ঘরের পাশেই চূড়ান্ত মৌলবাদী শাসন। কী প্রভাব পড়বে আমাদের দেশে ও দেশের বাইরে? এই বিষয়ে গত 17 অগস্ট (মঙ্গলবার) 4thpillarwethepeople.com একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল। সুদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে আলোচনায় সাংবাদিক প্রণয় শর্মা, গৌতম লাহিড়ী, লেখিকা রোশেনারা খান এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শুভজিৎ নস্কর উপস্থিত ছিলেন।
1) অতীতে বিভিন্ন লেখা থেকে আমরা জানতে পারি আফগানিস্তানে মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও তারা যেত না, স্কুল থাকলেও তাতে সরঞ্জাম থাকত না। কারণ 10-12 বছর হলেই তো মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত।
2) আমেরিকা তো দীর্ঘ কুড়ি বছর সুরক্ষা দিয়েছে ওদের, আর কতদিন? এটা তো বছরের পর বছর চলতে পারে না। এতদিন সুযোগ পেয়েও কেন আফগান সরকার তালিবানদের বিরুদ্ধে সেভাবে কোনও ব্যবস্থা নিল না।
3) আমেরিকা কী চায় তা এতদিনেও স্পষ্ট নয়। স্থানীয়দের সঙ্গে তালিবানদের যে আদর্শগত ভাবে মিল ছিল সেটা আমেরিকা গত কুড়ি বছরেও ধরতে পারেনি। শুধু আমেরিকা নয়, তাদের সেখানে বসানো আফগান সরকারও বুঝতে পারেনি। তাই শেষ পর্যন্ত তাদের পালিয়ে যেতে হল কারন তাদের আফগান সোসাইটির সঙ্গে সেই মিলমিশ তৈরি হয়নি।
4) আমেরিকা কোনও মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আফগানিস্তানে যায়নি। 9/11-র পর ওয়ার অ্যান্ড টেরোর-এর নামে সেখানে প্রবেশ করেছিল। এখন তাদের কাজ ফুরিয়েছে, তাই সৈন্য প্রত্যাহার করে নিল।
5) আফগান সরকারের ব্যর্থতায় তালিবান প্রায় রক্তপাতহীন একটা লড়াই জিতে নিল। সদ্য প্রাক্তন গনি সরকার আফগান জনতার থেকে এতটাই দূরে সরে গিয়েছিলেন যে, টেরই পেলেন না তালিবানরা শক্তি বাড়িয়ে কাবুল ঘিরতে চলেছে।
6) তালিবান শব্দের অর্থ ছাত্র। কিন্তু এটি একটি আপাদমস্তক নারীবিদ্বেষী, ব্যক্তি স্বাধীনতা বিরোধী ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন। এদের শাসনে যে নারী ও শিশুদের অবস্থা আবার শোচনীয় হতে চলেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
7) আমেরিকা আফগানিস্তানে পশ্চিমি গণতন্ত্রের মডেল প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমেরিকার তরফে আফগানিস্তানকে স্থানীয়দের চোখ দিয়ে দেখার চেষ্টা হয়নি। তাই দু'দশক পর আফগান নাগরিকদের হাতে সেই আগের আফগানিস্তানকেই ফিরিয়ে দিয়ে দেশে ফিরে যাচ্ছে মার্কিন সেনা।
8) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতের সমস্যা বাড়ল। পাকিস্তান যেমন এই পরিস্থিতিতে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে। বাংলাদেশের অনেক নাগরিকও তালিবানদের পুনরুত্থানে খুশি। চিনের সঙ্গের ভারতের সম্পর্ক খুব বেশি হৃদ্যতাপূর্ণ নয়। দেখা যাক ভারত এই সমস্যাকে কীভাবে মোকাবিলা করে।
9) ভূতপূর্ব মার্কিন সচিব কন্ডোলিজা রাইস তাঁর মেয়াদকালে একটা বিকল্প পথের সন্ধান দিয়েছিলেন। তাঁর মতে অন্য দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার প্রাক শর্ত হল সেই দেশটাকে আগে ভালভাবে চেনা। আজকের আফগানিস্তান বোঝাচ্ছে কন্ডোলিজার এই পরিকল্পনা পেন্টাগন গ্রহণ করেনি। তালিবানকে এক শ্রেণীর আফগানরা আহ্বান জানাচ্ছে। 20 বছর সেনা সমাবেশ করিয়েও আফগানদের একাংশের এই তালিবান-প্রীতি ঘোচাতে পারেনি আমেরিকা।
10) আমেরিকা এবং আফগান প্রশাসন মনে করেছে কাবুলটাই বুঝি আফগানিস্তান। বৃহত্তর আফগানিস্তানে এখনও স্থানীয় গোষ্ঠীপতিরাই সবকিছু নির্ধারণ করে। তাদের ঐক্যবদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে দু'টি আফগান সরকার।
11) তালিবানদের আগে মুজাহিদ্দিনদের মধ্যেও অনেক গোষ্ঠী ও পারস্পরিক সংঘাত ছিল। অতীতেও দেখা গেছে যে দেশে এত নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বাস, সেই দেশই দীর্ঘদিন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ হয়েছে। হাতের কাছে এরকম আরও একটা উদাহরণ হল মায়নমার।
12) বাইডেন জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে চারজন মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে আফগানিস্তান নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়েছে। তবে তিনি চান না এই সমস্যার উত্তরাধিকার রেখে যেতে। তাঁর এই বক্তব্য মার্কিন বিদেশনীতিতে বড়সড় বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আগেকার অন্য পরীক্ষার নম্বর দিয়ে মূল্যায়নের ভিত্তিতে কীভাবে উচ্চতর শিক্ষায় ভর্তি হবে?
বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সত্যাগ্রহ করে কারাবরণ করেছিলেন বলে মোদীর দাবি।কী অভিযোগে জেলে ছিলেন তিনি?
ন্যায়বিচারের স্বাভাবিক নীতি মর্যাদা পেল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে।
প্রায় দু'বছর ধরে শিক্ষা বঞ্চিত রয়ে যাচ্ছে শিশুরা। আগামী দিনে স্কুল খুললে কেমন হবে লেখাপড়া?
টিকাকরণের উপর মানুষের আস্থার প্রশ্ন জড়িত দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের ওপর।
বাংলার যুদ্ধ শেষ, খেলা এবার দিল্লিতে। বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার কাজে সপ্তাহভর রাজধানীতে মমতা।